Legendary Singer wife: কিশোর কুমার ভারতীয় সঙ্গীত জগতের এমন একজন মানুষ যাকে নিয়ে নানান ধরনের গল্প আছে। বিশেষ করে তাকে নিয়ে কথা বারবার শোনা যায় চারটি বিয়ে কেন করেছিলেন? রুমা গুহা ঠাকুরতা থেকে লীনা গঙ্গোপাধ্যায়, অভিনেতা - গায়কের জীবনে নারী সঙ্গ এসেছে বহুবার, কিন্তু তিনি কোনটাই টিকিয়ে রাখতে পারেননি। কেবলমাত্র তার শেষ দিন অব্দি সঙ্গে ছিলেন লীনা নিজেই। মধুবালা চলে যাওয়ার পর একেবারেই একা হয়ে গিয়েছিলেন কিশোর। লীনা তাকে আনন্দের আকাশ এনে দিয়েছিলেন।
কিশোরকে বিয়ে করার আগেই তার একবার বিয়ে হয়। সিদ্ধার্থ বন্দদকারের সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধেছিলেন তিনি। কিন্তু সেই বিয়ে মুহূর্তের মধ্যে শেষ হয়ে। বিয়ের দশ দিনের মাথায় এক দুর্ঘটনায় সিদ্ধার্থ মারা যান। তখন সদ্য বিবাহিতা তরুণী হঠাৎ করেই বিধবা হয়ে গেলেন। আর মানসিক অবস্থা তখন ভঙ্গুর। স্বামীর মৃত্যুর পর তার জীবনে কেটে গেছিল অনেকগুলি বসন্ত। তাহলে কিশোরের সঙ্গে বিয়ে হয় কী করে? গায়কের সঙ্গে 'মান কা মিত' ছবির শুটিংয়ে কালিম্পং দেখা হয়েছিল তার। সেখানে, অভিভাবকশুলভ ছন্দে তাকে পরামর্শ দিয়েছিলেন ভালো করে কাজ করার। এবং তার পরবর্তীতে ১০ বছর দেখা হয়নি এই দুজনের। কিন্তু হঠাৎ একদিন কিশোর কুমারের চিঠি নিয়ে এসেছিলেন এক ভদ্রলোক। বলেছিলেন ফোন করতে।
Bollywood Actress: ক্যানসারে প্রয়াত বাবা, এবার বাঙালি অভিনেত্রীর শরীর…
তার হাতে ছিল কমেডি ছবির একটা স্ক্রিপ্ট। বিগত এতগুলো বছরে যাকে কেউ হাসাতে পারেনি, সেই স্ক্রীপ্ট দেখে হাসতে বাধ্য হয়েছিলেন লীনা। এবং রাজি হয়েছিলেন 'প্যায়ার অজনাবি হ্যায়' ছবিতে অভিনয় করার জন্য। এই ছবিতে তাদের সম্পর্কে মোড় নিল ভালবাসায়। ২১ বছরের বড় কিশোরকে মন দিয়ে বসলেন অভিনেত্রী। দুই বাড়ির মত ছিল না এই বিয়েতে। কিন্তু লিনা যখন জানতে পারলেন যে কিশোর তাকেই বিয়ে করার কথা ভাবছেন, তখন আর ভালবাসার হাতছানিতে না সারা দিয়ে পারেননি। সমস্ত বাধা-বিপত্তি অতিক্রম করে, ১৯৮০ সালে দুজনে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। কিশোরের সন্তান অমিত এবং লীনার সঙ্গে তাঁর সন্তান সুমিত, দুজনেই একে অপরের জন্য পরিপূরক ছিলেন। অনুষ্ঠান করতে যখন কিশোর বাইরে কিংবা বিদেশে যেতেন, তখন দুই ছেলেকে এবং লীনাদেবীকে নিয়ে যেতেন। কিন্তু সেই সম্পর্ক বেশিদিন স্থায়ী হয়নি।
১৯৮৭ সালে ভারতের অন্যতম নক্ষত্র আকাশে পাড়ি দিলেন। সেদিন কেউ মেনে নিতে পারেননি কিশোরের অকাল প্রয়াণ। এখানেই শেষ না। বহুবার এমন প্রশ্ন করা হয়েছে যে সবই যদি ভদ্রলোকের ভালো হয়ে থাকবে, তবে চার খানা বিয়ে কেন করেছিলেন? উত্তরে তাঁর শেষ স্ত্রী বলেছিলেন, "অন্যদের সাথে কেন ঘর করতে পারলেন না উনি? তাহলে কি কারওর সঙ্গেই সুখ পাননি? মানুষটা এরকমই ছিল। তবে মধুবালা যদি মৃত্যু না হতো তাহলে হয়তো কিশোরের জীবনটা অন্যরকম হতো।" কিন্তু লিনাকে যথেষ্ট ভালোবাসার সঙ্গে সঙ্গে স্নেহ করতেন কিশোর। কলকাতা এলে শাঁখা কিনে দিতেন। এ কারণেই স্বামী চলে যাওয়ার পর, কোনওদিন শাখা ভাঙেননি লীনা। তাঁর সাজানো সংসারের আকাশটা তখন শূন্য, কিন্তু কিশোরের স্মৃতি নিয়েই বেঁচে ছিলেন।