ছবি: বরুণবাবুর বন্ধু
পরিচালক: অনীক দত্ত
অভিনয়: সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, পরাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, অর্পিতা চট্টোপাধ্যায়, কৌশিক সেন, ঋত্বিক চক্রবর্তী, শ্রীলেখা মিত্র, বিদীপ্তা চক্রবর্তী
রেটিং: ৩/৫
পরিবর্তনই স্থায়ী, আর এ শহর সেই নিয়ম মেনেই বদলে যাচ্ছে। সময়ের সঙ্গে তার মেরুদণ্ড, বক্তব্য, আস্থা সবটা পাল্টে যাচ্ছে। যে কোনও শহরের প্রাণ তার মানুষগুলো, তিলোত্তমাতেও তাই! সুতরাং, পরিস্থিতি ও সময়ের অগোচরে কখন পাশের মানুষগুলো বদলে যায় তা ঠাওর করে ওঠা মাঝে মধ্যে মুশকিল। কেউ বুঝতে পারেন, কারও জীবনে কোনও প্রত্যাশাই থাকে না, কিছু মানুষের আপোষ করে নেওয়াটাই জীবন। কেউ আবার তীব্র আত্মসম্মানের বশবর্তী। কোনটা ভাল কোনটা খারাপ, এ আলোচনা কিন্তু সে সবের ঊর্দ্ধে। 'বরুণবাবুর বন্ধু' ভীষণ এ সময়ের ছবি।
রমাপদ চৌধুরীর ‘ছাদ’ গল্প অবলম্বনে তৈরি অনীক দত্তর এই ছবি। আদ্যোপান্ত পারিবারিক ছবি। আজকাল বাংলাতে নির্ভেজাল পারিবারিক দ্বন্দ্বের ছবি খুব একটা দেখা যায় না। সেই দিক থেকে বলতে গেলে বরুণবাবুর বন্ধু স্বস্তি দেবে। বরুণবাবু- ভীষণই খিটখিটে একজন মানুষ। নিজেকে সমাজ ও আত্মীয়দের কাছ থেকে সরিয়ে রাখতেই ভালবাসেন। কারও কাছ থেকে কোনও রকম সুবিধে নেওয়ার পাত্র তিনি নন। এহেন মানুষের এক প্রভাবশালী বন্ধু আসছেন। এই খবরেই বদলে যায় পারিপার্শ্বিক পরিবেশ। বাড়ির আবহাওয়া ধীরে ধীরে অস্বস্তির কারণ হয়ে ওঠে বরুণ বাবুর।
আরও পড়ুন, মিস্টার ইন্ডিয়া বিতর্ক! শেখর কাপুরের বিরুদ্ধে ভয়ঙ্কর অভিযোগ জাভেদ আখতারের
অনীক দত্তের পরিচালনায় পুরোপুরি চকচকে ছবি দেখতে পাওয়া যাবে ভেবে যাওয়াটা খুব অনুচিত হল না। সবথেকে বড় পাওনা মুখ্য চরিত্রে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। বরুণবাবু চরিত্রটার মধ্যে যে চিন্তাশীল, রাজনৈতিকভাবে সচেতন এক সত্ত্বা রয়েছে, সেটা ব্যক্তিগতভাবে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের মধ্যেও পরিলক্ষিত। সুতরাং, চরিত্রটা দর্শকের কাছাকাছি চলে আসবে খুব সহজেই। কিন্তু চিত্রনাট্যের এত চরিত্রদের ভিড় তাল রাখতে মুশকিল হয়ে যাচ্ছিল। এটা বোধহয় পরিচালকের স্টাইল। সৌমিত্র-পরাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের জুটি ছবির মেজাজ বদলে দিয়েছে।
তবে চিত্রনাট্য ব্যতীত বর্তমান ছবির আতিশায্যের দিক থেকে ছবি ম্লানই বটে। খুব একটা চকচকে দৃশ্য আশা করলে হতাশ হবেন। সঙ্গীতের ব্যবহার ও আবহ মানানসই। পরিচালকের প্রতিটা ছবির মতোই কিছু রাজনৈতিক আঁচ পাওয়া যায়, কিছু জায়গায় ভাল লাগলেও কিছু দৃশ্যে কতকটা জোর করেই করেছেন মনে হয়েছে। তবে সম্পর্কের বুনোট অত্যন্ত দৃঢ়ভাবেই বুনেছেন অনীক।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন