বছরশেষে বড় খবর! সেরা চমক দিলেন সৃজিত মুখোপাধ্যায়। মৃণাল সেনের বায়োপিক করতে চলেছেন পরিচালক। আর সেই ভূমিকায় অভিনয় করছেন চঞ্চল চৌধুরি। যাঁর অভিনয়গুনে সিনেপ্রেমীরা পাগল বললেও অত্যুক্তি হয় না।
২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর প্রয়াত হন মৃণাল সেন। আজ তাঁর চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকীতে সৃজিত মুখোপাধ্যায় শ্রদ্ধার্ঘ্য হিসেবে তাঁর বায়োপিকের ঘোষণা করলেন। নতুন বছর জানুয়ারি মাসের মাঝামাঝি থেকেই শুরু হবে শুটিং। প্রযোজনা করছেন ফিরদৌসুল হাসান।
লকডাউনের সময়ই মৃণাল সেনের বায়োপিকের চিত্রনাট্য লিখে ফেলেছিলেন সৃজিত। প্রথমটায় ভেবেছিলেন ওয়েব সিরিজ করবেন। তবে পরে কিংবদন্তী পরিচালকের জীবনকাহিনীকে সিনেম্য়াটিকভাবে পরিবেশন করার সিদ্ধান্ত নেন সৃজিত। স্বাভাবিকভাবেই পরিসর কমাতে হয়েছে। আর পরিচালকের এই কাজে সাহায্য় করেছেন মৃণাল সেনের ছেলে কুণাল সেন।
উল্লেখ্য, সৃজিতের সঙ্গে মৃণাল-পুত্র কুণালের বেজায় ভাল সম্পর্ক। তিনিই পরিচালককে বাবার জীবনকাহিনী তৈরির জন্য সবুজ সংকেত দেন। কীভাবে সাজানো হয়েছে চিত্রনাট্য? ষাটের দশকের শেষদিক থেকে ১৯৭৩ সাল অবধি মৃণাল সেনের কলকাতা ট্রিলজি তৈরির নেপথ্যকাহিনি থেকে তাঁর ব্যক্তিগত জীবনের অজানা কাহিনীও দেখা যাবে সিনেমায়। তবে চঞ্চল চৌধুরিকে মৃণাল সেনের ভূমিকায় কাস্ট করা যে বিশাল চ্যালেঞ্জিং পরিচালকের কাছে তা বলাই বাহুল্য।
শুধুমাত্র দক্ষ অভিনেতা বলেই যে পদ্মাপারের শিল্পী চঞ্চল চৌধুরিকে মৃণাল সেনের ভূমিকায় কাস্ট করা হয়েছে তা নয়, রয়েছে আরেকটি কারণও। "মৃণালের চেহারার সঙ্গে অদ্ভূত সাদৃশ্য রয়েছে চঞ্চলের। এমনকী কিংবদন্তী পরিচালকের মতোই তাঁর দৃষ্টি এবং অভিব্যক্তি অত্যন্ত তুখড় এবং সজাগ। আর মৃণাল সেনের মতোই চঞ্চলের রাজনৈতিক দর্শন ও সামাজিক-রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি", বলছেন সৃজিত।
<আরও পড়ুন: মাত্র ১০ মাসেই শেষ ‘লক্ষ্মী কাকিমা’, রেগে আগুন অপরাজিতা! তুললেন অভিযোগও>
মৃণাল সেনের বায়োপিকে অভিনয় করার সুযোগ পেয়ে কী বলছেন চঞ্চল চৌধুরি। তাঁর কথায়, "মাস ছয়েক আগেই মৃণাল সেনের ভূমিকায় অভিনয় করার প্রস্তাব দেন সৃজিত। আমি প্রথমটায় খুব ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। ধরি মাছ, না ছুঁই পানি করে এড়িয়ে যাচ্ছিলাম। কিন্তু উনি তো নাছোড়বান্দা। আমাকে একাধিকবার অভয় দিয়েছেন, সাহস জুগিয়েছেন। অনেকবার বুঝিয়েছেন যে আমিই এই চরিত্রের জন্য যথোপযুক্ত। এরপর আমিও ভাবলাম, কাজটা যখন করতেই হবে, তখন শুরু করে দেওয়াই ভাল। যা হয় পরে দেখা যাবে।"
চঞ্চল চৌধুরি এও জানান যে, "এটাকে বায়োপিক না বলে মৃণাল সেনের জীবনের থেকে অনুপ্রাণিত ছবি বলাই ভাল। আমাদের পোস্টারেও সেটার উল্লেখ রয়েছে। আর তাই মনে হয়, আমার ওপর চাপটা একটু কম। কারণ বায়োপিক বললেই, দর্শকরা দেখতে বসে তুলনা টানবেন।"
মৃণাল সেনের জুতোতে পা গলানোর জন্য কীভাবে নিজেকে তৈরি করছেন? চঞ্চলের কথায়, "মৃণাল সেনের প্রচুর ছবি-ফুটেজ পাঠিয়েছেন সৃজিত। সেগুলোই দেখছি রোজ। আর এরকম একটা চরিত্র করার জন্য অন্তত মাস খানেকের অনুশীলন দরকার। আমার হাতে এখন অতটা সময় না থাকলেও চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।"