Chandan Sen-Chiranjeet Chakraborty On Student death: বিধানসভার উপনির্বাচনের ভোটগণনার দিনই কালীগঞ্জের মেলেন্দি এলাকায় মর্মান্তিক মৃত্য়ু। বোমা বিস্ফোরণে মৃত্যু হল ১৩ বছরের এক নাবালিকার। স্থানীয়দের একাংশের অভিযোগ, সিপিএমের বাড়ি লক্ষ্য করে তৃণমূলের বিজয়মিছিল থেকে বোমা ছোড়া হয়। ঘটনাস্থলেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছে চতুর্থ শ্রেনির এক ছাত্রী। বাড়ি ফেরার পথেই নাকি ওই বোমার আঘাতে আহত হয় ওই নাবালিকা। রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে শেষ রক্ষা হল না। এই ঘটনায় চরম উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একই সঙ্গে দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ করার নির্দেশও দিয়েছেন তিনি। তৃণমূলের বিজয় মিছিলে নাবালিকার মৃত্যুর খবরে কী প্রতিক্রিয়া বিধায়ক চিরঞ্জিত চক্রবর্তীর?
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলার তরফে অভিনেতা-বিধায়ক চিরঞ্জিত চক্রবর্তীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তাঁর বক্তব্য, 'এটি নিছকই একটি দুর্ঘটনা। জয়ের আনন্দ-উল্লাস অবশ্যই যুক্তিসঙ্গত, তবে আনন্দের উপর নিয়ন্ত্রন রাখাটাও জরুরি। লাগামছাড়া কোনও কিছুই ঠিক নয়।' যাঁরা এই ধরনের মন্তব্য করছেন তাঁদেরকে মোটেই সমর্থন করছেন না বাংলার প্রবীণ অভিনেতা চন্দন সেন। তাঁর মতে, 'ইজরায়েলিরা উল্লাস করার পর বলে এটা দুর্ঘটনা। বিজয়-উল্লাস করতে গিয়ে বোমা মারছে, নিষ্পাপ শিশুর মৃত্যু হল! ১৭-১৮ সালে সুব্রত মুখোপাধ্যায় যখন বলেছিলেন বিজেপি যতদিন থাকবে তৃণমূলের ততই লাভ। কারণ ভোটটা ভাগ হয়ে যায়, বিরোধী বলে কিছু থাকে না। তারই ফল এটা। বাংলার মানুষ যত তাড়াতাড়ি বুঝবেন তত তাড়াতাড়ি মুক্তি পাবেন। না হলে এইরকম মৃত্যু বারবার ঘটবে, হেলায়-তাচ্ছিল্যে দুর্ঘটনা বলে দাগিয়ে দেবে। যাঁরা বলছেন তাঁদের পরিবারে যদি এমন ঘটনা ঘটত তাহলে কেমন লাগত? আজ ইজরায়েলিরা সেই উপলব্ধিটা করতে পারছে। এটা বর্বরতা ছাড়া আর কিছু নয়।'
তৃণমূলের বিজয় মিছিলে নাবালিকার মৃত্যুর খবরে অত্যন্ত মর্মাহত, একইসঙ্গে রেগে কাঁই টলি অভিনেত্রী শ্রীলেখা মিত্রও। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলায় এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করে বলেন, 'এটা সরকারকে জিজ্ঞাসা করা উচিত যে আপনারা এটা কী করছেন? আপনারা তো আরজি কর-কে ধামা চাপা দিয়ে দিলেন, এই বাচ্চার মৃত্যুর দায়টা কে নেবে? তৃণমূলের বিজয় মিছিলে সিপিএম-এর বাড়ি লক্ষ্য করে বোমা ছোঁড়া হল, চতুর্থ শ্রেনির একটা নিষ্পাপ শিশুর প্রাণ চলে গেল! এর যথার্থ বিচার হওয়া দরকার। সর্বত্র এই খবরটা যেন পৌঁছে যায়। দু'দিন পর তো সবাই সবটা ভুলে যাবে! কয়েকদিন সোশ্যাল মিডিয়ায় লেখালেখি হবে, প্রতিবাদ হবে তারপর আবার আগের মতোই সব স্বাভাবিক হয়ে যাবে। কিন্তু, এই ধরনের মর্মান্তিক ঘটনার দায় তো সরকারকে নিতে হবে। যে এই কাজটা করেছে তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হোক।'
আরও পড়ুন 'আরজি কর-কে ধামা চাপা দিলেন, বাচ্চার মৃত্যুর দায় কে নেবে'? কালীগঞ্জে ছাত্রী মৃত্যুতে মমতাকে একহাত শ্রীলেখার
ভোট রাজনীতির নামে মায়ের কোল খালি হয়ে যাচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা হিসেবে লজ্জা হয় শ্রীলেখার। ক্ষোভ উগরে দিয়ে বলেছেন, 'নিজেকে পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা ভাবতে সত্যিই কুণ্ঠাবোধ হয়। যে রাজ্যে বোমা নিয়ে আনন্দ উদযাপন হয়...! একটা বিজয় মিছিলে বোমা রাখার অনুমতি পেল কী করে? সিসিটিভি ফুটেজ দেখে ওই ব্যক্তিকে সনাক্ত করা হোক। ঘটনার সঠিক তদন্ত হোক। এই ঘটনাগুলো শুনলে শুধুই হতাশ হই!!'