জগদ্ধাত্রী পুজোর এখনও ঢের দেরি। তার আগেই দু’দিনের উৎসবে মেতে উঠতে চলেছে চন্দননগর। উৎসবই বটে, এই প্রথমবার হুগলি জেলার এই শহরে হতে চলেছে আন্তর্জাতিক শর্ট ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল। চন্দননগরে তো বটেই, রাজ্যের কোনও মফস্বল শহরে আন্তর্জাতিক শর্ট ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল আগে হয়েছে কিনা সন্দেহ। অগাস্ট মাসের ২৩ ও ২৪ তারিখ চন্দননগরের রবীন্দ্র ভবনে বসতে চলেছে এই সিনে উৎসবের আসর।
চন্দননগরে প্রথম বার আন্তর্জাতিক ফিল্ম উৎসব কম বাজেটের শর্ট ফিল্ম নির্মাতাদের কাছে সুবর্ণ সুযোগ বলেই মনে করছেন মূল উদ্যোক্তা সৈকত দাস। তাঁর মতে, ‘’আজকাল অনেকেই শর্ট ফিল্ম বানান। কিন্তু তাঁদের সামর্থ্য থাকে না ছবিটা কোনো ফেস্টিভ্যালে দেখানোর। তাই আমরা বিনামূল্যে এই উৎসবের আয়োজন করেছি, যাতে কম বাজেটের পরিচালকরা একটা প্ল্যাটফর্ম পান।" অতএব এই ফেস্টিভ্যালে নিখরচায় নিজেদের হাতে গড়া স্বল্প দৈর্ঘ্যের ছবি দেখাতে পারবেন পরিচালকরা। শুধু তাই নয়, বিনামূল্যে, যাকে বলে পুরো ফ্রি-তে, দেশ-বিদেশের নানা স্বাদের শর্ট ফিল্ম দেখার সুযোগ পাবেন দর্শকরা।
দেশে তো আজকাল অনেক নামীদামী শর্ট ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল হয়, যেখানে রীতিমত টাকা দিয়ে নিজেদের ছবি দেখান নির্মাতারা, যাতে তাঁদের ছবি বিক্রি হয়। এখানে ছবি দেখালে কী লাভ হবে? প্রশ্ন শোনার সঙ্গে সঙ্গে সৈকত বলে উঠলেন, "যাঁরা বলেন, ফেস্টিভ্যালে ছবি দেখিয়ে তা বিক্রি করা যায়, তাঁরা মিথ্যে কথা বলেন। এসব বুজরুকি। আমি নিজেও একজন শর্ট ফিল্ম মেকার। আমি জানি এসব ছবি বিক্রির কথা বলে আয়োজকরা মানুষকে ঠকান।"
চন্দননগরে আন্তর্জাতিক শর্ট ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে যেসব ছবি দেখানো হবে, সেসব ছবির নির্মাতারা আগামী দিনে আদৌ কি কোনও প্ল্যাটফর্ম পাবেন? সৈকত জানালেন, "আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে ভুটানে ওপেন এয়ার থিয়েটার করার কথা ভাবছি, সেখানে এই ফেস্টিভ্যালে প্রদর্শিত ছবিগুলো দেখানো হবে। তাছাড়া, এ বছর দেশের বিভিন্ন শহরেও ওপেন এয়ার থিয়েটার করার পরিকল্পনা রয়েছে, সেখানেও এ ছবিগুলো দেখানো হবে।"
আরও পড়ুন, ধর্ষণ নিয়ে আওয়াজ এবার কানে, মনোনীত বাঙালি পরিচালকের ছবি
৩৫টি দেশ মিলিয়ে মোট ৭৮৯টি ছবি দেখানো হবে বলে জানিয়েছেন সৈকত দাস। কোন ছবিগুলো রবীন্দ্র ভবনে দেখানো হবে, তা বাছাই করার জন্য থাকছেন জুরি মেম্বাররা। ইতিমধ্যে উৎসবের জন্য স্পনশরশিপ নিয়ে বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে কথা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন সৈকত।
আরও পড়ুন, টলিউডে কি এখন বাংলা ছবির প্রতিদ্বন্দ্বী কলকাতার সিনেমা হল?
চন্দননগরে বাড়ি, তাই সেখানেই শর্ট ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের আযোজন করেছেন সৈকত। কিন্তু প্রশ্ন থাকছেই, চন্দননগরের মানুষ কি স্বল্প দৈর্ঘ্যের ছবি দেখতে রবীন্দ্র ভবনে ভিড় করবেন? "ইতিমধ্যেই বহু ফোন পাচ্ছি, সবাই জানতে চাইছে এই ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল নিয়ে। চন্দননগরের মানুষ ছবি ভালবাসেন। আমার বিশ্বাস তাঁরা সফল করবেন এই উৎসবকে।"
বিশেষ পুরস্কারেরও ব্যবস্থা থাকছে। সেরা কম বাজেট শর্ট ফিল্মের জন্যও থাকছে বিশেষ পুরস্কার। এছাড়া যেসব ছবি প্রদর্শনের জন্য নির্বাচিত হবে, সেসব নির্মাতাদের জন্য থাকছে সার্টিফিকেট।
২৩ অগাস্ট বিকেল সাড়ে ৪টে নাগাদ চন্দননগর আন্তর্জাতিক শর্ট ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের ঢাকে কাঠি পড়বে। উদ্বোধনী মঞ্চে কারা থাকছেন? "ক্রমশ প্রকাশ্য", বলে চমক জিইয়ে রাখলেন ফেস্টিভ্যালের উদ্যোক্তা।