/indian-express-bangla/media/media_files/2025/06/10/hgmtz4fYudZsIVeOCOGc.jpg)
চলে গেলেন কিংবদন্তি...
কিংবদন্তি সুরকার ও পরামর্শদাতা চরণজিৎ আহুজা রবিবার মোহালিতে নিজের বাড়িতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭২ বছর। দীর্ঘদিন ক্যান্সারের সঙ্গে লড়াই করে তিনি পিজিআইতে চিকিৎসাধীন ছিলেন। তাঁর মৃত্যুতে পাঞ্জাবি সঙ্গীত জগতে এক অপূরণীয় শূন্যতা তৈরি হয়েছে।
আহুজার মৃত্যুর সময় পাশে ছিলেন, তাঁর স্ত্রী সঙ্গীতা আহুজা এবং চার পুত্রসন্তান। তাঁর সন্তানদের মধ্যে একজন হলেন খ্যাতনামা সঙ্গীত পরিচালক ও সুরকার শচীন আহুজা। শুধু সুরকার নন, আহুজা ছিলেন একজন দূরদর্শী গাইড-ও, যিনি পাঞ্জাবি সঙ্গীত জগতের বহু তারকার ক্যারিয়ার গড়ে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। স্থানীয় মঞ্চশিল্পী অমর সিং-এর প্রতিভাকে তিনি চিহ্নিত করেছিলেন এবং তাঁকেই পরবর্তীতে'চামকিলা' হিসেবে গোটা পাঞ্জাবের ঘরে ঘরে পৌঁছে দেন।
তিনি সার্দুল সিকান্দার, গুরুদাস মান, সুরিন্দর সিন্দা সহ অসংখ্য শিল্পীর গান পরিচালনা ও সুর দিয়েছেন। একজন শিল্প বিশেষজ্ঞের ভাষায়, "চামকিলাকে ঘরে ঘরে জনপ্রিয় করে তোলার কৃতিত্ব আহুজার। শিল্পীদের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক এবং পথনির্দেশনা পুরো সঙ্গীত জগতের জন্য আজও প্রেরণা।" এলপি রেকর্ড আর ক্যাসেটের যুগে যখন পাঞ্জাবি সঙ্গীত সারা ভারতে ছড়িয়ে পড়ছিল, সেই সময়েই আহুজার যাত্রা শুরু। এইচএমভির সঙ্গে কাজ করার সময়, তিনি নতুন শিল্পীদের স্টুডিও রেকর্ডিংয়ের সুযোগ করে দিয়েছিলেন। এরপর থেকেই তাঁদের বৈধ স্বীকৃতি এনে দেয়।
Zubeen Garg Demise: শারীরিক অবস্থা ভাল ছিল না জুবিনের? প্রয়াত গায়ককে নিয়ে বড় রহস্য ফাঁস করলেন সুরকার
“কৌন তেরা পরদেশী”, “ইয়ারা ওহ দিলদারা” এবং “মিল গয়া মিল গয়া”-র মতো চিরসবুজ গান তাঁর সৃষ্টি। তিনি প্রায় ১৭টি চলচ্চিত্র এবং অসংখ্য অ্যালবামের জন্য সুর দিয়েছেন। “কি বানু দুনিয়া দা” (১৯৮৬), “গভরু পাঞ্জাব দা” (১৯৮৬), এবং “দুশমনি জাত্তান দি” (১৯৯৩)-এর মতো চলচ্চিত্রে তাঁর কাজ পাঞ্জাবি সঙ্গীতের সোনালি যুগকে সংজ্ঞায়িত করেছে।
তাঁকে স্মরণ করে গায়ক সুরজিৎ খান বলেন, “চরণজিৎ আহুজা ছিলেন সঙ্গীত জগতের স্তম্ভ। তাঁর পরিচালনায় যে কেউ কাজ করলে কিংবদন্তি হয়ে উঠতেন। আমার একটি গান রেকর্ডের পর তিনি ব্যক্তিগতভাবে ফোন করে প্রশংসা করেছিলেন।” গায়ক বাই হরদীপের ভাষায়, “আহুজার প্রয়াণে পাঞ্জাবি সঙ্গীত এক বিশাল ক্ষতি স্বীকার করল। একটি সোনালি অধ্যায়ের সমাপ্তি হলো।”
সতবিন্দর বুঘা, গুরকিরপাল সুরাপুরি, সুফি বলবীর, জেলি, দীপ রমন, ভূপিন্দর বাবল এবং বিল সিংসহ বহু শিল্পী গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। সতবিন্দর বুঘা বলেছেন, “যদিও আহুজা সাহেব আমাদের মধ্যে নেই, তাঁর সঙ্গীত ও স্মৃতি প্রজন্মের পর প্রজন্ম অনুরণিত হবে।” তাঁর শেষকৃত্য সোমবার দুপুর ১টায় মোহালির শ্মশানে সম্পন্ন হয়।