সমাজ যতই আধুনিক হোক, সেক্যুলারিজমের উর্দি চাপিয়ে ছাইচাপা আগুনের মতো আজও এক গোষ্ঠীর মনে জ্বলছে ধর্ম। সময়-সুযোগ পেলেই ধর্মের ধ্বজা উড়িয়ে তারা মেতে ওঠে রক্তের খেলায়। ধর্মকে অস্ত্র করে রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থের উদাহরণ ও তার পরিণাম সাম্প্রতিক অতীতেও কিছু কম নয়! এবার সেই প্রেক্ষিতেই মুখ খুললেন ঋত্বিক চক্রবর্তী।
রাজ চক্রবর্তী পরিচালিত 'ধর্মযুদ্ধ'তে ঋত্বিককে দেখা যাবে হিন্দু যুবক রাঘবের ভূমিকায়। মুক্তির প্রাক্কালেই ধর্মের নামে হানাহানি, রক্তপাতের বিরুদ্ধে অভিনেতা সরব হলেন। একজন সভ্যনাগরিক কিংবা শিল্পী হিসেবে ঋতিকের মন্তব্য, "ধর্মকে অস্ত্র বানিয়ে যে বা যারা স্বার্থচরিতার্থ করার চেষ্টা করে, তাদের বিরুদ্ধে সমাজের শিক্ষিত, জাগ্রত মানুষদের প্রতিবাদ করা উচিত।"
শিক্ষিতদের অনেকেই সমাজ-বিরোধী কর্মকাণ্ডে সরব হওয়ার মতো 'জাগ্রত' নন বলেই মনে করেন অভিনেতা। তাঁর মন্তব্য, অনেক শিক্ষিত মানুষদেরও এটা গুলিয়ে যেতে পারে। সাম্প্রদায়িক হানাহানির বিরুদ্ধে সবসময়েই আওয়াজ তোলা উচিত। কারণ প্রতিবাদের মাধ্যমে যে বা যারা দাঙ্গার সৃষ্টি করেন, তারা হয়তো বদলাবেন না। কিন্তু যে মানুষগুলো এই হানাহানি রক্তপাতের শিকার হন, তাদের হয়তো কোথাও গিয়ে চিন্তাধারণা বদলাবে।
'ধর্মযুদ্ধ' যে পরবর্তী প্রজন্মকেও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির পাঠ দেবে, সেকথা ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলার আড্ডায় বললেন ঋত্বিক চক্রবর্তী। অভিনেতা এও যোগ করেন যে, "সমাজের সিংহভাগ মানুষই সাম্প্রদায়িক দ্বন্দ্ব চান না। আর যাঁরা হিন্দু-মুসলিম ভেদাভেদের সৃষ্টি করে অশান্তি বাঁধান, তাঁদের সংখ্যাও খুব কম। ভেদাভেদকারী শ্রেণীর মানুষের মজ্জায় এটা ঢুকিয়ে দিতে হবে যে, মানুষের বেঁচে থাকার আরও অনেক রসদ রয়েছে। জাত-পাত-ধর্মকে হাতিয়ার করে দাঙ্গা না বাঁধালেও চলে। দাঙ্গায় আসলে মরে মনুষ্যত্ব।"
<আরও পড়ুন: মহানায়ক সম্মান নিয়ে বিতর্ক তুঙ্গে! নিন্দুকদের ‘কীট-ভাইরাস’ বলে তোপ সোহমের>
ঋত্বিকের কথায় সায় দিয়ে ধর্মযুদ্ধ'র আরেক অভিনেতা সোহম চক্রবর্তীও বলেন, "আমরা যেমন চালের পায়েস খাই, তেমনই সিমুইয়ের পায়েস খেতে ভালবাসি। নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য ধর্মকে হাতিয়ার করে দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে চিড় ধরানোর চেষ্টা করে বারবার, 'ধর্মযুদ্ধ'তে তাদেরকে উদ্দেশ করেই কড়া বার্তা দেওয়া হয়েছে।"
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন