দর্শনা বণিক
আমি সবসময়ই বিয়েতে বিশ্বাসী ছিলাম। বিয়ে আমি করব সেটা জানতাম। বিয়ে মানে আমার মনে একটা সুন্দর ইমেজ ছিল। বাড়িতে বা আশেপাশে আমি দেখেছি বিয়ে মানে একটা পার্টনার (জীবনসঙ্গী) পাওয়া। যার সঙ্গে সবটুকু শেয়ার করা যায়। মনে হবে আমার জীবনে একজন আছে যার সঙ্গে সব কিছু আলোচনা করতে পারব। যাকে সব সিক্রেট বলতে পারব। বন্ধুত্ব থাকবে। বিয়ের এই সুন্দর ধারণাগুলো আমার মনে ছিল। সেটা নিয়েই বিয়ে করা। ভগবানকে ধন্যবাদ যে আমি এখনও পর্যন্ত ঠিক প্রমানিত।
সত্যিই মনে হয় আমার জীবনে একজন আছে যার সঙ্গে আনন্দটা শেয়ার করি। মন খারাপ হলে বলি। কাজের কোনও কথা হচ্ছে সেটা শেয়ার করি। বিষয়টা নিয়ে আলোচনা করতে পারি। কখনও হয়তো হঠাৎ মনে হল একটু কফি খেয়ে আসি। ওকে বলি, চল না একটু কফি খেতে যাই। গরমের সময় রবিবার দুপুরে হয়তো দুজনেই বাড়ি আছি। হুট করে ওকে বলতে পারি চল না একটু সুইমিং করে আসি। আগে হলে একা যেতে হত। হয়ত জিম করতে চলে গেলাম। এখন একসঙ্গে দুজনে যেতে পারি।
সবকিছুর পরও বলব নিজেকে ভাল রাখার জন্য নিজেকে ভালবাসা দরকার। তবে একটা জিনিস আমি মনে করি সবকিছুতে পার্টনারকে পার্ট বানাতেই হবে এই চাহিদাটাও ঠিক নয়। সৌরভেরও তো একটা নিজের সার্কেল আছে। খেলতে যেতে ভালবাসে। সিসিএলের জন্য প্র্যাকটিস করতে যাচ্ছে। আমি হয়ত নাচ প্র্যাকটিস করছি। এটা আশা করা উচিত নয় যে ম্যাচের প্র্যাকটিস ছেড়ে আমার সঙ্গে সিনেমা দেখতে যাবে। আজকের জন্য আমি একটা হেলদি কেক বানিয়েছিলাম। অল্প চিনি, অল্প তেল, দুধ, খেজুর দিয়ে বানিয়েছিলাম। ওটা খেয়ে সৌরভের খুব ভাল লেগেছে। কাল ও আমার জন্য দারুণ সারপ্রাইজের ব্যবস্থা করেছিল। বাড়িটাকে সুন্দর করে সাজিয়েছিল।
আমি ছিলাম না কয়েকটা দিন। সল্টলেকে ছিলাম। গতকাল সন্ধ্যায় ফিরেছি। এসে দেখি বাড়িটা পুরো সাজানো। ও আবার হাতে করে কাস্টোমাইজড কেক, ফুল, গিফট নিয়ে এসেছিল। ওঁর এতটা এফোর্ট...খুব সুইট। আমাদের খুব অল্প দিনের পরিচয়। তারপরই বিয়ে। একসঙ্গে থেকেই আমরা একে অপরকে ডিসকভার করব, আরও ভাল করে চিনব-জানব এটাই চেয়েছিলাম দুজনে। আমরা কখনই চাইনি সাত-আট বছর প্রেম করব, লিভ-ইন করব তারপর বিয়ে। যদি কারও একসঙ্গে না থাকার হয় তাহলে অত কিছুর পরও থাকে না।
তাই আমরা বিয়ের পরই দুজন-দুজনকে চিনব-জানব-বুঝব এটাই ঠিক করেছিলাম। আমরা কিন্তু, বিয়ের আগে একসঙ্গে থাকিনি, অষ্টমীর অঞ্জলি দিই নি। বিয়ের পরই দিয়েছি। এই ইচ্ছেগুলো বিয়ের পরই পূরণ করেছি। বিয়ের পর বুঝেছি সকালে উঠে আমার বা ওঁর কী চাই। আমি বুঝেছি সকালে সৌরভের কফি চাই। অনেকটা টাইম বাথরুমে কাটায়(হাসি)। আমার সকালে চাই ব্ল্যাক কফি সঙ্গে ঘি, খেজুর। ও খায় দুধ কফি। একসঙ্গে থাকতে থাকতেই দুজন দুজনকে এভাবে ডিসকভার করেছি।
/indian-express-bangla/media/post_attachments/4eb9070d-a5d.jpg)
বিয়ের পর যখনই ঝগড়া হয়েছে তখন আমি একটু রুড হয়ে যাই। কিন্তু, আবার খুব তাড়াতাড়ি শান্তও হয়ে যাই। সৌরভ একটু চাপা স্বভাবের। ও রেগে গেলেও চটজলদি মাথা ঠান্ডা করে ফেলে। কেউই ঝগড়াটাকে বেশি দূর এগিয়ে নিয়ে যাই না। ও সরি বলে দিয়েছে কখনও আবার আমি বলে দিই। পরে কখনও ঝগড়ার টপিক নিয়ে আর আলোচনা করি না। যা হয়েছে মিটে গিয়েছে। ওটা তো হওয়ারই ছিল। আমাদের কাছে ব্যাপারটা এইরকমই।
আরও পড়ুন: বিবাহ অভিযানের বর্ষপূর্তি, বিয়ের প্রথম জন্মদিনে দর্শনাকে আদুরে শুভেচ্ছা সৌরভের