Debasish Roy Interview: রূপোলি দুনিয়ার তারকাদের জীবনে প্রতিনিয়ত কিছু না ঘটেই থাকে। প্রথম ছবিতে দুর্দান্ত সাফল্য পাওয়ার পর অনেকে হারিয়ে যায়। অনেকে আবার সাফল্যের সিঁড়ি বেয়ে জনপ্রিয়তার শীর্ষে পৌঁছে যায়। ফিল্মি দুনিয়ার এমন অনেক অভিনেতা-অভিনেত্রী আছেন যাঁরা লম্বা বিরতি, বেশ খানিকটা অবসাদ কাটিয়ে লাইট-ক্যামেরা-অ্যাকশনের দুনিয়ায় কামব্যাকের সুবর্ণ সুযোগ পান। তরপর আর পিছন ঘুরে তাকানোর প্রয়োজন হয় না। পরিচালক-প্রযোজকদের পছন্দের তালিকায় চলে আসে তাঁর নাম। আসলে জীবনের কঠিন সময়টা পার করলেই যে মুশকিল আসান। অভিনয় জগতের এই ঘটনা হুবহু মিলে যায় বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির অভিনেতা দেবাশিষ রায়। এই মুহূর্তে তাঁর ঝুলিতেও রয়েছে বেশ কয়েকটি ছবি। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা শুনল তাঁর জার্নির গল্প।
দেবাশিষ বলেন, 'অপরাজিত-র পর আমি একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। 'বাচ্চা শ্বশুর', 'ব্রহ্মা জানে গোপন কথা', 'দ্বিতীয় পুরুষ'-এ যে ধরনের ছোট চরিত্রে অভিনয় করেছিলাম সেগুলো আর করব না। অপরাজিতর পর আমি দর্শকের অনেক ভালবাসা পেয়েছি। এরপর আমার কাছে চরিত্রের বিশ্লেষণটা বদলেছে। সিনেমায় যেন আমার চরিত্রের একটা বিশেষ গুরুত্ব থাকে। অপরাজিতর পর ভেবেছিলাম এবার হয়ত আমি ভিন্নস্বদের চরিত্রের জন্য ডাক পাব। কিন্তু, আমার সেই আশা পূরণ হয়নি। হয়ত আমার চেহারা হিরো হওয়ার যোগ্য নয়। সেই একটা বছর আমি কাজ ছাড়াই ছিলাম। ওই সময়টা আমি নিজেকে আরও পরিণত করার চেষ্টা করেছি। অভিনয় নিয়ে চর্চা করেছি। আর আমার উন্নতির জন্য তথাগত মুখোপাধ্যায়ের কাছে আমি চির কৃতজ্ঞ। হাতে ধরে সবটা শিখিয়েছে।'
২০২২-এর ১৩ মে মুক্তি পেয়েছিল অপরাজিত। আর ২০২৩-র মার্চে শুটিং ফ্লোরে পা রেখেছিলেন দেবাশিষ। সেই সময়ের কথা বলতে গিয়ে বলেন, 'তথাদা-র পারিয়াতে আমাকে সুযোগ দেয়। তার আগে সপ্তশ্ব বসু একটি সিরিজের গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে আমাকে কাস্ট করে। সেটা ম্যাজিকের মতো কাজ করেছিল। তখন পারিয়া নিয়ে তথাদার সঙ্গে কথাবার্তা চলছে। কিন্তু, সপ্তশ্ব বসু ও তথাগত মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে কাজের আগে একজন অভিনেতা হিসেবে হীনমন্যতায় ভুগেছি। যদিও আমি জেনে বুঝেই আমি অনিশ্চিত জীবনের পথে পা বাড়িয়েছিলাম। অভিনয় জগতে উত্থান-পতন আছে সেটা কমবেশি সকলেরই জানা। অনেক সুপারস্টার আছেন যাঁদের কাছে ৩০ দিন-ই কাজ থাকে না। জাতীয় পুরস্কার পাওয়ার পরও কাজ নেই এমন উদাহরণও আছে। তবে যে সময়টা বারবার ভেঙে পড়েছি পরিবার ও কাছের মানুষের সাপোর্ট পেয়েছি। একটা সময় এমনও মনে হয়েছে অভিনয় থেকে আমাকে সরে আসতে হবে।
কঠিন সময়ের অভিজ্ঞতা ভাগ করতে গিয়ে দেবাশিষের সংযোজন, 'এইরকম পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাঁরা যাবেন তাঁদের কাছে দুটো উপায়। অবসাদে নেশাগ্রস্থ হয়ে জীবনটা শেষ করে ফেলা আর দ্বিতীয়টা হল কেন কাজ পাচ্ছি না সেটা বুঝতে হবে। কিছুটা তো ভাগ্যের হাতেও ছাড়তে হয়। আত্মবিশ্বাস একটা সময় নড়ে গেলেও পরবর্তীতে মনকে শক্ত করেছিলাম। আজ হয়ত সেই কারনেই 'রাপ্পা রায় ডট কম', 'খাকি', 'পারিয়া ২'-এর মতো ছবিগুলোর সঙ্গে যুক্তি হওয়ার সুযোগ পেয়েছি। রাপ্পা রায়ের দ্বিতীয় ভাগও তৈরি হবে।'
ইন্ডাস্ট্রিতে গডফাদার থাকাটা খুব প্রয়োজন? তাহলে অভিনেতা-অভিনেত্রীদের কঠিন সময় পার হতে হবে না? দেবাশিষের সপাট জবাব, 'না। এমন অনেক তারকা আছেন যাদের বাবা সুপারস্টার, কিন্তু ছেলে কোনও সুযোগ পায় না। আমার কাছে গডফাদার দুপ্রকার। কেউ আমার ট্যালেন্ট দেখে আমাকে একটা চরিত্রে কাজ দেবে। আর দ্বিতীয় প্রকারটা হল কোনও এক সুপারস্টারের আমাকে দেখে পছন্দ হল। তারপর আমাকে লঞ্চ করল।'