Chhapaak movie review: বলিষ্ঠ দীপিকা প্রাণপ্রতিষ্ঠা করেছেন চরিত্রে
Chhapaak review: এতদিন দীপিকাকে অনেক সুসজ্জিত চরিত্রে দর্শক দেখেছেন। সেই সেফ জোন থেকে বেরিয় একটি ঝলসে যাওয়া ত্বকে ধরা দিয়েছেন অভিনেত্রী। একটি দেখার মতো ছবি।
'ছপাক' শব্দটার মধ্যে একটা মজা আছে, খুশির আমেজ আছে। ছপাক বলতেই জমা জল আর ঝমঝম বৃষ্টির গান মনে পড়ে। আর এই শব্দটা খুব গুলজারীয়। একজন অ্যাসিড আক্রমণ পেরিয়ে আসা মেয়ের কাহিনি বলতে গিয়ে মেঘনা যখন এই শব্দটিই ছবির নাম হিসেবে নির্বাচিত করেন, তার পিছনে একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্য কাজ করে-- আগে যেভাবে শুনতাম এই শব্দটা, এই ছবি দেখার পরে আর সেটা পারব না।
প্রত্যাখ্যাত প্রেমিকের ছুড়ে দেওয়া অ্যাসিডে কিশোরী লক্ষ্মী আগরওয়ালের মুখ ঝলসে যাওয়ার খবরটি শিরোনামে এসেছিল। এমন অনেক ঘটনা ঘটেছে এর আগে। কিন্তু লক্ষ্মী সবার থেকে আলাদা হয়ে উঠেছিলেন কারণ তিনি এই ঘটনার পরে জীবনকে থেমে যেতে দেননি, দুর্বিষহ হতেও দেননি। লজ্জা ও ভয়কে বিলকুল পাত্তা না দিয়ে, লক্ষ্মী পাল্টা লড়াই শুরু করেন। হসপিটাল থেকে আদালত পর্যন্ত-- সেই লড়াইটা অনেক দীর্ঘ, কঠিন। তার সঙ্গে মাঝেমধ্যেই ছিল অত্যন্ত যন্ত্রণাদায়ক ফেস-রিকনস্ট্রাকশন সার্জারি।
দীপিকা অভিনীত মালতী চরিত্রের মধ্য দিয়ে, অনুপ্রেরণার সেই গল্পটাই বলেছেন মেঘনা, কিছু আতিশয্য যোগে অবশ্যই। যদি দীপিকা তাঁর তারকাসুলভ ইমেজটি খুলে না রাখতেন এই ছবির জন্য, তাহলে ছবিটা অন্য রকম হতো। কিন্তু 'ছপাক' প্রশংসনীয় কারণ দীপিকা বলিষ্ঠ ভঙ্গিমায় চরিত্রে প্রাণপ্রতিষ্ঠা করতে পেরেছেন। শুধু ঝলসে যাওয়া নাক-কানহীন একটা চেহারাকে বয়ে নিয়ে যাননি দীপিকা, যন্ত্রণা, রাগ, বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া ও শেষমেশ একটি সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া।
কিন্তু তার মানেই এই ছবি করুণা ভিক্ষা করে না। অ্যাসিডে পুড়ে যাওয়া মুখ তো আর সুন্দর নয়। যখন মালতী হসপিটাল থেকে ফিরে প্রথম নিজের প্রতিবিম্ব দেখে আয়নায়, সে চিৎকার করে। আমি বা আপনি থাকলেও তাই করতাম। তার পরেই কোনও ভণিতা না করে সেই ঝলসানো মুখ দর্শককে দেখানো হয়। এক জন্য অভিনেত্রীকেও সাহসী হতে হয়। দীপিকা সেই সাহসটা দেখিয়েছেন অথচ মনে হয়নি যে সেটা আরোপিত।
তবে দীপিকা তাঁর সঙ্গে ভাল মানের কয়েকজন সহ-অভিনেতা-অভিনেত্রীকে পেয়েছেন। বিক্রান্ত মাসে-কে দেখে দর্শকের মন ভরবে। একটু অধৈর্য্য, এনজিও-টাইপ মানুষজন যেমন হয় আর কী, দেখেই বোঝা যায় যে মালতীর প্রতি তার দুর্বলতা তৈরি হবেই। এছাড়া দীপিকার আইনজীবী বা মালতীর পাশে থাকা সিরাজ আন্টি-- এই চরিত্রগুলিতে যাঁরা অভিনয় করেছেন, সবাই ভাল। মালতী-র আক্রমণকারীর অংশটি ন্যূনতম রাখা হয়েছে। ওসব কথা জানার প্রয়োজনও নেই, আক্রান্ত মেয়েটি ও তার ঘুরে দাঁড়ানোর গল্পটাই আসল।