Devi Choudhurani, Bengali Television Payment Issue: টেলিজগতে শিল্পী ও টেকনিসিয়ানদের পারিশ্রমিকে বকেয়া থাকার সমস্যা যে ক্রমশই বৃহৎ আকার নিচ্ছে, তার ইঙ্গিত পাওয়া গেল শনিবার ১ জুন। টেলিপাড়ার একাধিক বিশ্বস্ত সূত্রের খবর অনুযায়ী, আজ এই ইস্যুতেই ব্যাহত হল তিনটি ধারাবাহিকের শুটিং - স্টার জলসা-র 'দেবী চৌধুরাণী', জি বাংলা-র 'করুণাময়ী রাণী রাসমণি' ও কালারস বাংলা-র 'মা মনসা'। ওই তিন ধারাবাহিকের প্রযোজনা সংস্থা সুব্রত রায় প্রোডাকশন্স।
বিশ্বস্ত সূত্রের খবর, টেকনিসিয়ানদের বকেয়া পেমেন্ট মিটিয়ে দেওয়ার কথা ছিল শনিবার দুপুরের মধ্যে। নির্দিষ্ট সময়ে পেমেন্ট না পাওয়ায় তাঁরা বিষয়টি নিয়ে অত্যন্ত অসন্তোষ প্রকাশ করেন এবং অসহযোগিতা-র পথ বেছে নেন। 'দেবী চৌধুরাণী' ধারাবাহিকের শুটিংয়ে সকাল থেকে শিল্পীরা মেকআপ নিয়ে অপেক্ষা করেন কিন্তু বিকেল পর্যন্ত শুটিং শুরু হয় নি বলেই জানা গিয়েছে।
আরও পড়ুন: টেকনিসিয়ানদের পাশে দাঁড়াল ফোরাম, বকেয়া টাকার ইস্যুতে কড়া সিদ্ধান্ত
'দেবী চৌধুরাণী' ধারাবাহিকের প্রধান চরিত্রের অভিনেতা সুজন (নীল) মুখোপাধ্যায় ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা-কে জানালেন, ''আমরা মোটামুটি সকাল সাড়ে নটা থেকে মেকআপ নিয়ে রেডি হই। খুব গুরুত্বপূর্ণ দু'টি সিনের শুটিং হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ফ্লোরে যাওয়ার পরে আমরা জানতে পারি যে টেকনিসিয়ানরা শুটিং করবেন না তাঁদের পেমেন্ট এখনও করা হয় নি বলে। আমাদের মেকআপ রুমে অপেক্ষা করতে বলা হয়। যেহেতু সন্ধ্যাবেলা আমার নাটকের রিহার্সাল রয়েছে, তাই আমি আগে থেকেই জানিয়ে দিয়েছিলাম যে সাড়ে চারটে নাগাদ বেরিয়ে যেতে হবে। আমি যখন বেরিয়ে আসি, তখনও পর্যন্ত শুটিং শুরু হয় নি।''
টেলিপাড়ার বিশ্বস্ত সূত্রের খবর অনুযায়ী, 'করুণাময়ী রাণী রাসমণি' ও 'মা মনসা'র ইউনিটেও টেকনিসিয়ানরা শুটিং বন্ধ রেখেছিলেন। তবে সুব্রত রায় প্রোডাকশন্সের ইউনিটে এই ধরনের ঘটনা আগেও ঘটেছে বলে জানিয়েছে টেলিপাড়ার একাধিক বিশ্বস্ত সূত্র। নির্দিষ্ট সময় পার হয়ে গেলেও যখন পেমেন্ট বকেয়া থাকে, তখন অনেক সময়েই এই পদ্ধতি অবলম্বন করতে হয় টেকনিসিয়ানদের, এমনই অভিযোগ উঠেছে।
আরও পড়ুন: মাত্র একটি নথির জন্য আটকে শিল্পীদের কোটি টাকারও বেশি
যদি সত্যিই এমনটা বারংবার ঘটে থাকে, তবে টেলিজগতের পেশাগত পরিবেশের পক্ষে তা অত্যন্ত অস্বাস্থ্যকর। পাশাপাশি আর একটি প্রশ্নও উঠছে। ২৫ মে আর্টিস্টস ফোরামের সাংবাদিক বৈঠকে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা-র পক্ষ থেকে ফোরামের সভাপতি প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়কে প্রশ্ন করা হয় যে প্রযোজকরা যদি অনির্দিষ্টকাল পারিশ্রমিকের টাকা বাকি রাখেন, তবে কি শুটিং বন্ধ করে সেই টাকা উদ্ধার করতে সচেষ্ট হতে হবে শিল্পীদের? এই প্রশ্নের উত্তরে প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন যে আর্টিস্টস ফোরাম চায় না এমন কোনও পদ্ধতি অবলম্বন করতে।
শনিবার 'দেবী চৌধুরাণী' ইউনিটের ঘটনার পরে বেশ কয়েকটি প্রশ্ন উঠছে। তবে কি টাকা উদ্ধারের জন্য অসহযোগিতা বা ধর্মঘটের পথই বেছে নিতে হবে শিল্পী ও টেকনিসিয়ানদের? টেকনিসিয়ানদের সব গিল্ড ও আর্টিস্টস ফোরাম, ফেডারেশন অফ সিনে টেকনিসিয়ান্স অ্যান্ড ওয়ার্কার্স অফ ইস্টার্ন ইন্ডিয়া-র অন্তর্গত। 'দেবী চৌধুরাণী' ইউনিটের এই ঘটনা প্রসঙ্গে ফোরামের সভাপতি স্বরূপ বিশ্বাসের সঙ্গে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা-র পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ''পেমেন্ট এখনও ক্লিয়ার হয় নি। যতক্ষণ না পেমেন্ট হচ্ছে, ততক্ষণ এই পদ্ধতিই অবলম্বন করা ছাড়া আর কোনও উপায় নেই।''
এই বিষয়ে প্রযোজক সুব্রত রায়ের সঙ্গে অনেকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হয়। প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার সময় পর্যন্ত তাঁর থেকে এই বিষয়ে কোনও বিবৃতি পাওয়া যায়নি।