Dibyojyoti Dutta: বসন্তোৎসবের সকালে ঘিয়ে রঙের সিল্কের পঞ্জাবি, কপালে বৈষ্ণবদের মতো তিলক, গলায় উত্তরীয় আর ঠোঁটের কোণে মৃদু হাসি। দোলের দিন 'শ্রীচৈতন্যদেব'-এর আদলে অনুরাগের ছোঁয়া-র দিব্যজ্যোতি দত্তর সেই লুক ভক্তদের মধ্যে রীতিমতো আলোড়ন ফেলেছিল। সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের পরিচালনায় ও রানা সরকারের প্রযোজনায় বড় পর্দায় ঐতিহাসিক চরিত্রে বিগ ব্রেক। যিশু সেনগুপ্ত, পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়কে পেরিয়ে ইন্ডাস্ট্রির 'ফার্স্ট বয়' সৃজিতের 'লহ গৌরাঙ্গের নাম রে'-তে চৈতন্যদেবের ভূমিকায় অভিনয় করবেন ছোট পর্দার জনপ্রিয় অভিনেতা দিব্যজ্যোতি। একদিকে অনুরাগের ছোঁয়া ১০০০ পর্ব ছুঁই ছুঁই, অন্যদিকে সৃজিতের ছবির হাত ধরে রূপোলি পর্দায় অভিষেক। দু'মাস পরই শুরু হবে সিনেমার শুটিং। দিব্যজ্যোতি থেকে চৈতন্য হয়ে উঠার প্রস্তুতি কেমন চলছে?
প্রমিস ডে-তে বলেছিলেন ২৫ কেজি ওজন ঝড়ানোই মূল লক্ষ্য। 'লহ গৌরাঙ্গের নাম রে'-এর জন্যই প্রস্তুতি চলছিল?
দিব্যজ্যোতি: হ্যাঁ, একদমই তাই। পর্দায় চৈতন্যদেবের চরিত্রকে ফুটিয়ে তুলতে যা যা প্রয়োজন সেটাই করছি। নিজের সাধ্যমতো চেষ্টা করে যাচ্ছি। খাওয়াদাওয়ায় অনেক নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। ওজন ঝড়ে গেলেও মাসলটা কমানো একটু সময়সাপেক্ষ। আমার তো মাসকুলার বডি তাই একটু কষ্টসাধ্য। খুব হার্ড ওয়ার্কআউট করছি। একদম পরিমিত খাওয়ার খাচ্ছি। মানসিকভাবেও নিজেকে বুস্টআপ করতে হচ্ছে। আমি তো সবসময় চেষ্টা করছি একটা ডিসিপ্লিনের মধ্যে থাকতে। এখন তো সিরিয়ালের শুটিং-ও রয়েছে। তাই এখানে আবার আমার 'সূর্য' চরিত্রের লুকটা ঠিক রাখাও প্রয়োজন।
সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের ছবিতে কাজের প্রস্তাব পাওয়ার পর আনন্দ হয়েছিল নাকি চ্যালেঞ্জিং চরিত্র বলে ভয় লেগেছিল?
দিব্যজ্যোতি: আমি ব্যক্তিগতজীবনে আধ্যাত্মিক। ভগবানে আমি বিশ্বাসী। মাঝেমধ্যেই মায়াপুরে যাই। তাই এই চরিত্রের প্রস্তাব আমার কাছে আসার পর খুব ভাল লেগেছিল। কারণ আমি এই ধরনের চরিত্রে কাজ করতে চেয়েছিলাম। চৈতন্যদেবকে নিয়ে হয়ত আমার জ্ঞান খুবই নগন্য, তবে চরিত্রকে সঠিকভাবে ফুটিয়ে তুলতে সেরার সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করব। আর এই চরিত্রটা নিঃসন্দেহে আমার কাছে চ্যালেঞ্জিং। আমার তো মনে হয় প্রতিটি অভিনেতাই যে কোনও চরিত্রকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে গ্রহণ করেন।
চ্যালেঞ্জে বিজয়ী হতে চরিত্র নিয়ে কী কী রিসার্চ করছেন?
দিব্যজ্যোতি: অনেক পড়াশোনা করছি। অনেক কিছু জানতে হবে। এই বিষয়ে যাঁদের জ্ঞান রয়েছে তাঁদের সঙ্গে আলোচনা করছি। তাঁদের থেকে সবটুকু বুঝে নেওয়ার চেষ্টা করছি।
সৃজিত-শুভশ্রী সহ ইন্ডাস্ট্রির হেভিওয়েট তারকাদের সঙ্গে কাজের সুযোগ পেয়ে কতটা আপ্লুত?
দিব্যজ্যোতি: এটা আমার কাছে বিরাট প্রাপ্তি। সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের মতো পরিচালক, এসভিএফের মতো প্রযোজনা সংস্থার সঙ্গে কাজের সুযোগ পাওয়া যেন মেঘ না চাইতেই বৃষ্টির মতো। এখনও অনেক পথ চলা বাকি আছে। শুভশ্রী গঙ্গোপাধ্যায়ের মতো কো-স্টার পেয়ে আমি 'ব্লেসড'।
বড় পর্দায় বিরাট সুযোগ পাওয়ার পর ছোট পর্দা নিয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু?
দিব্যজ্যোতি: না, আমি এখনও এ বিষয়ে কিছু ভাবিনি। ছোট বা বড় পর্দা নিয়ে কোনও বিভেদ আমার মনে তৈরি হয়নি। আমি সবসময় মন দিয়ে আমার কাজটা করব।
একদিকে সিরিয়াল-অন্যদিকে সিনেমা, দুই দিক কী ভাবে সামলাবেন?
দিব্যজ্যোতি: সিনেমার শুটিংয়ের জন্য এখনও দু'মাস বাকি আছে। তাই প্ল্যানিং এখনও হয়নি।
চৈতন্যদেবের চরিত্রে আজও দর্শকের চোখের সামনে যিশু সেনগুপ্তের মুখই ভেসে ওঠে। তাঁকে ছাপিয়ে দিব্যজ্যোতি দত্ত নতুন নজির গড়বে?
দিব্যজ্যোতি: আমি শুধু আমার সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করব। যিশুদা আমার প্রতিযোগী নয়। উনি ইন্ডাস্ট্রির অনেক সিনিয়ার। যখনই দেখা হয়েছে আমাকে পজেটিভ কথাই বলেছেন। তবে সম্প্রতি সেভাবে কথা হয়নি। হয়ত উনি ব্যস্ত আছেন।
চৈতন্যদেবের চরিত্রের জন্য নেড়া হবেন নাকি প্রস্থেটিক মেক-আপের সাহায্য নেবেন?
দিব্যজ্যোতি: প্রস্থেটিক মেক-আপ নয়, আমি চুল কেটেই নেড়া হব। আমার কোনও সমস্যা নেই।
দিব্যজ্যোতি দত্ত তো মেয়েদের ক্রাশ, নেড়া হলে ভক্তদের মন ভাঙবে না?
দিব্যজ্যোতি: এমন বহু সুপারস্টার আছেন যাঁরা নেড়া। তাঁদের তো ভক্তসংখ্যা কমেনি। বরং ওই লুকের জন্য তাঁরা জনপ্রিয়। আমার নেড়া মাথা লুকও নিশ্চই অনুরাগীদের ভাল লাগবে।