Advertisment

''রাজনীতিতে যোগদান বোধ হয় তাঁর জীবনের সবথেকে বড় ভুল সিদ্ধান্ত''

Tapas Paul: সব কিছু সবার জন্য নয়। তাই শেষ কয়েকটা বছর চূড়ান্ত অসম্মান আর অগৌরব নিয়ে তাঁকে বেঁচে থাকতে হয়েছে। মাত্র ৬১ তেই চলে গেলেন...

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Director Producer Prabir Roy remembering late actor Tapas Paul

ছবি: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস আর্কাইভ থেকে

২২ বছর বয়সে তরুণ মজুমদারের ছবি 'দাদার কীর্তি'-তে তাঁর আত্মপ্রকাশ বাঙালি দর্শক সমাজকে ভাসিয়ে নিয়ে গিয়েছিল। বাংলা ছবিতে তিনি ছিলেন যেন সেই পরিচিত পাশের বাড়ির ছেলে। 'দাদার কীর্তি’-র মতো ‘সাহেব’ ছবিতেও তিনি উজ্জ্বল। বার বার এমন চরিত্র নির্বাচন করেছেন, যা বাংলার তথাকথিত ‘হিরোইজম’কে ভেঙে দিয়েছে। এই স্বাভাবিক, সারল্যই ছিল তাপস পালের ইউএসপি। যে কারণে তাঁর একের পর এক পারিবারিক ছবি হয়ে উঠেছিল তৎকালীন বাংলার ‘কমার্শিয়াল ছবি’। 'সাহেব', 'গুরুদক্ষিণা', 'পথভোলা', 'অনুরাগের ছোঁয়া', 'পারাবত প্রিয়া', 'ভালোবাসা ভালোবাসা', 'মঙ্গলদীপ', 'বৈদুর্য রহস্য', 'উত্তরা', 'মন্দ মেয়ের উপাখ্যান' ---- এরকম বেশ কিছু কালজয়ী ছবিতে তাঁর স্বতঃস্ফুর্ত অভিনয় আমাদের মনে থেকে যাবে। 'সাহেব' ছবির জন্য ফিল্মফেয়ার পুরষ্কার পেয়েছিলেন।

Advertisment

মোট ৭৩ টা ছবিতে অভিনয় করেছিলেন তাপস পাল। তরুণবাবু ছাড়া অরবিন্দ মুখোপাধ্যায়, তপন সিংহ, সলিল দত্ত, ইন্দর সেন, বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত, পিনাকী মুখোপাধ্যায়, দীনেন গুপ্ত, হীরেন নাগ প্রমুখ খ্যাতনামা পরিচালকের সঙ্গে কাজ করেছেন। মহুয়া রায় চৌধুরী, মুনমুন সেন, দেবশ্রী রায়, শতাব্দী রায় - এঁরাই ছিলেন তাঁর প্রধান নায়িকা। সবচেয়ে বেশি ছবিতে এঁদের বিপরীতেই তাঁকে দেখা গিয়েছে। প্রসেনজিতের থেকে অনেক বেশি হিট ছবি দিয়েছেন তাপস পাল।

আরও পড়ুন: ওর তুল্য অভিনেতা টালিগঞ্জে কেউ ছিল না: বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত

আমরা কি মনে রেখেছি যে ১৯৮৪ সালে মাধুরী দীক্ষিতের প্রথম ছবি, হীরেন নাগ পরিচালিত 'অবোধ'-এ নায়কের ভূমিকায় কিন্তু ছিলেন তাপস পাল?

Director Producer Prabir Roy remembering late actor Tapas Paul ‘দাদার কীর্তি’-র ‘কেদার’ আবার পথে নামবে রং মাখতে। কিন্তু বাস্তব ‘কেদার’-এর জীবনে ইতি টেনে দিল এই বসন্ত।

২০০৯ সালে মোড় ঘুরে যায় তাপস পালের জীবনে। ওই বছর রাজ্যের শাসক দলের টিকিটে কৃষ্ণনগর থেকে জিতে সাংসদ হন তাপস পাল। রাজনীতিতে যোগদান বোধ হয় তাঁর জীবনের সবথেকে বড় ভুল সিদ্ধান্ত। সব কিছু সবার জন্য নয়। তাই শেষ কয়েকটা বছর চূড়ান্ত অসম্মান আর অগৌরব নিয়ে তাঁকে বেঁচে থাকতে হয়েছে। মাত্র ৬১ তেই চলে গেলেন এই অসামান্য অভিনেতা। শেষ পর্যন্ত আবারও অভিনয়ের চেনা জগতে ফিরতেও চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু অসুস্থতা তাঁকে সরিয়ে নিয়ে গেল সবার অলক্ষ্যে।

সামনেই দোল। বসন্তের মন কেমন করা হাওয়ায় ভরে গিয়েছে শহর। ‘দাদার কীর্তি’-র ‘কেদার’ আবার পথে নামবে রং মাখতে। কিন্তু বাস্তব ‘কেদার’-এর জীবনে ইতি টেনে দিল এই বসন্ত। আমরা, আপামর দর্শকেরা শুধু একজন প্রতিভাবান শিল্পী হিসেবেই তাঁকে মনে রাখব।

লেখক পরিচিতি: দূরদর্শন-এর প্রাক্তন প্রযোজক, অভিনেতা ও ভারতে প্রথম রঙিন সম্প্রচারের রূপকার প্রবীর রায় বর্তমানে স্বাধীন পরিচালক-প্রযোজক হিসেবে কর্মরত।

Bengali Film
Advertisment