তারকাদের পুজো:
পুজো মানেই বাঙালির কাছে কবজি ডুবিয়ে খাওয়া-দাওয়া, দেদার গান-গল্প, আড্ডা আর অবশ্যই সিনেমা দেখা। সারাবছর শুটিং, সিরিজ, সিনেমার প্রচার কাজের ব্যস্ততা দূরে সরিয়ে পুজোর আমেজে মেতে ওঠেন তারকারা। আর পুজো রিলিজ হলে আনন্দ-উচ্ছ্বাসের সঙ্গে টেনশন উপরি পাওনা তারকাদের। সেই তালিকা থেকে অবশ্য ব্যতিক্রম শ্রীলেখা মিত্র। কেন? ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলার তরফে খোঁজ নিলেন সন্দীপ্তা ভঞ্জ।
পুজোটা কীভাবে কাটানোর পরিকল্পনা করছেন? প্রশ্ন যেতেই শ্রীলেখার উত্তর, "এখন আর আগের মতো পুজো নিয়ে উত্তেজনা অনুভব করি না। আসলে আগেকার পুজোর আমেজটাই ছিল অন্যরকম। তাই পুজোর দিনগুলোতে ভিড় এড়িয়ে চলাই ভালবাসি।"
এরপরই নস্ট্যালজিয়ায় ভর করে শ্রীলেখা বললেন, "শৈশবে ওই পাড়ার পুজোটাই ভাল লাগত। ছিমছাম, সাদামাটা একেবারে। মা দুর্গার মুখটা তখন ভরা থাকত। সেই সাবেকি প্রতিমা এখন মিস করি। পাড়ার মেয়েরা সকলে ফোল্ডিং চেয়ারগুলোতে বসে আড্ডা দিতাম। সকালে, বিকেলে একেকবেলায় একেকটা নতুন জামা। পুজোর আমেজটাই একেবারে অন্যরকম ছিল। আজকের এই ঝাঁ চকচকে, থিমের লড়াইয়ে কোথায় যেন সেসব অতীত। তাছাড়া মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়ের করা ওই টাক ডুমাডুম গান বাজছে.. এসব পুজো?"
"ছোটবেলার পুজো শুধু নয়, খিচুড়ি ভোগ খাওয়া, নির্ভেজাল আড্ডা দেওয়া.. গোটা বিষয়টাকেই মিস করি। তখন বাবা-মা ছিলেন। এখন কেউ নেই। ছোটবেলার সব বন্ধুরা হয় ভিনরাজ্যে কিংবা বিদেশে থাকে, নয়তো অনেকেই উত্তর কলকাতায়। আর আমি থাকি দক্ষিণ কলকাতায়। তবে হ্যাঁ, পুজোর সময়ে পথ-সারমেয়রা একটু খাবার পায়। এটাই যা একটা ভাল বিষয়। পুজোর ভীড়ও একদম পছন্দ নয়", মত অভিনেত্রীর।
<আরও পড়ুন: পুজো মানেই আমার পাড়া, জমিয়ে ভোগ খাওয়া আর আড্ডা: দিতিপ্রিয়া>
তাহলে এবারের কী প্ল্যান? শ্রীলেখা মিত্র জানালেন, "সপ্তমীর দিন সুজয় প্রসাদ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে একটা অনুষ্ঠানে যোগ দেব। আবৃত্তি পাঠ করব সেখানে। বাকি দিনগুলো বাড়িতেই কাটাব। খুব বড় গ্রুপে আমি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি না। আমার বাড়িতে যদি কোনও বন্ধু প্ল্যান করে, তাহলে আসবে। আর বাবা-মা চলে যাওয়ার পর থেকে একা থাকার ইচ্ছেটাও বেড়ে গেছে। আর মেয়ের খুব একটা ঠাকুর দেখার বায়নাক্কা নেই। সেদিক থেকেও চিন্তামুক্ত অভিনেত্রী-পরিচালক।"
পুজো ফ্যাশন নিয়ে যেখানে আমজনতা থেকে তারকাদের মাথাব্যথার অন্ত নেই। সেখানে শ্রীলেখা একেবারে উল্টো পথে। তাঁর কথায়, "কাজের প্রয়োজনে সারাবছর কেনাকাটা চলে। তাই আলাদা করে পুজো শপিং নিয়ে কোনও উত্তেজনা নেই। ছোটবেলায় মা-বাবার দেওয়া পোশাক নিয়ে ঘুমোতে যেতাম। সেই উপহারের মজাই ছিল আলাদা।"