সন্তানের মৃত্যু চোখের সামনে দেখলে কোনও মা কি নিজেকে সামলাতে পারে? এমন এক দৃশ্য দেখে বাংলাদেশীদের মনে এক বেজায় দুঃখ। ঠিক যেন ২৬ বছরের আগের স্মৃতি আবারও তাঁর জীবনে ফিরে এল। এবং, হাসপাতালেই কেঁদে ভাসালেন একসময়ের অভিনেত্রী। হঠাৎ করেই জোয়ান সন্তানের মৃত্যু! বলা উচিত অকাল মৃত্যু। সব মিলিয়ে এক ভয়ঙ্কর অবস্থা। গতকাল খবর এসেছিলেন চিত্রনায়ক জসীমের ছেলে এ কে রাতুল তিনি না ফেরার দেশে। বাবার মতই তিনিও প্রয়াত অল্প বয়সেই।
তাঁর মৃত্যুর খবর প্রকাশ্যে আসতেই, দেখা গিয়েছিল বাংলাদেশ জুড়ে শোকের ছায়া। এমনকি, তাঁর ব্যান্ড মেম্বাররা পর্যন্ত এমনটাই বলেন, হঠাৎ করেই যেন সব শেষ। জসিমের স্ত্রী নাসরিন, তিনিও একসময় নায়িকা ছিলেন। এবং খেয়াল করলে দেখা যাবে, ইতিহাস যেন তাঁর জীবনে একেবারেই ছাপ রেখে চলে গেল। এবং, তাঁর থেকেও বড় কথা, ঠিক যেমন জসীমের মৃত্যুতে সাথিহারা হওয়ার যন্ত্রণায় বুক ফেটেছিল তাঁর, এবারও এক সন্তানের মৃত্যুতে মূর্ছা গেলেন মা। প্রসঙ্গে, রাতুলের মৃত্যুতে ব্যান্ড মেম্বার ওন্ডরা যথেষ্ট শোকাহত। সেই ভিডিও ভাইরাল সমাজ মাধ্যমে। মা হিসেবে এই কষ্ট এবং শোক মেনে নেওয়া যায় না। তাঁর তিন ছেলে। এবং তাঁর তিন সন্তানের মধ্যে একজন আর নেই। হাসপাতালেই উথাল পাথাল করতে দেখা গেল তাঁকে।
রাতুল জিম করতে গিয়েই, তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে খবর। তবে কি তাঁর শরীর অতিরিক্ত খারাপ হয়েছিল? নাকি এর আড়ালে বিরাট বড় রহস্য আছে। উত্তরার একটি জিমে তিনি হঠাৎ হৃদরোগে আক্রান্ত হন। এবং তারপর সেখান থেকে তাঁকে পরপর দুটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে, তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। লুবনা হাসপাতালের কার্ডিয়াক সেন্টারের সুপারভাইজার মাসুদ রানা প্রথম আলোকে জানিয়েছেন, তাকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে রাখা হয়েছিল, অর্থাৎ যাকে আইসিইউ বলে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাকে আর ফেরানো যায়নি বরং গতকাল বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে তাঁর মৃতদেহ বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হয়।
এই ঘটনায় তোলপাড় সর্বত্র। গতকাল সন্ধ্যায় ৭ নম্বর সেক্টর পার্কের মসজিদে রাতুলের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। তবে, জানানো হয় আজ সকালের বনানীতে, তাঁর বাবার কবরেই তাঁকে দাফন করা হয়েছে। যে কবরে, ২৬ বছর আগে তাঁর বাবা জসীমকে কবর দেওয়া হয়, সেখানেই তাঁকে আজকে শেষবারের মত মাটি দেওয়া হল। শ্রোতারা রাতুলের ব্যান্ডকে বেশ পছন্দ করেছেন। ২০১৪ থেকে ২০১৭ সালের অ্যালবাম ওয়ান এবং অ্যালবাম টু প্রকাশিত হয়েছে। ২০২১ সালেও প্রকাশিত হয়েছে ইপি এইটিন।