Bokul Katha heroine Ushasi Ray exclusive interview: ১ বছর ৯ মাস পরেও টিআরপি তালিকার সেরা দশে দাপটের সঙ্গে রয়েছে 'বকুলকথা'। কিছুদিন আগে পেরিয়ে এসেছে পাঁচশোতম পর্ব। যাঁকে ঘিরে গল্পের ঘনঘটা, বাংলা টেলিভিশনের সেই অত্যন্ত জনপ্রিয় নায়িকা ঊষসী রায়ের একান্ত সাক্ষাৎকারে কাজ থেকে প্রেম, উঠে এল অনেক কথাই।
প্রথম যখন 'বকুলকথা' শুরু হয়, তখন কি ভেবেছিলে যে এই ধারাবাহিক এতটা জনপ্রিয় হবে?
সত্যি বলতে কী, এতটাও ভাবিনি। যখন প্রথম এটার কাজ শুরু হয়, সেই সময় বেশ কয়েকটা সিরিয়াল এক বছরের আগেই বন্ধ হয়েছিল। তার উপর সবাই বলছিল চারপাশে যে এখন ওয়েব সিরিজের ট্রেন্ড, টেলিভিশনে সিরিয়ালে তেমন কিছু হওয়ার নেই। কিন্তু বকুলকথা গল্পটা এত ভাল ছিল যে আমি ভীষণভাবে চেয়েছিলাম এই চরিত্রটা করতে। আবার মনে একটা ভয় ছিল, ভাল গল্প হলেও তো অনেক সময় দর্শক নেয় না। আমার ধারণা ছিল অনন্ত একবছর চলবে। তারপরে যখন দেখলাম দর্শক এত পছন্দ করছেন, দর্শকের আগ্রহ রয়েছে, তখন আর কোনও সংশয় ছিল না।
আরও পড়ুন: আক্রান্ত টিম ‘কে আপন কে পর’, সাইবার সেলের দ্বারস্থ তারকারা
পাঁচশো পর্ব উদযাপনের সময় ঠিক কেমন অনুভূতি হল?
ওইটা একটা অদ্ভুত মুহূর্ত। ওই একই ফ্লোরে, প্রায় একই জায়গায় দাঁড়িয়ে পর পর দুবার আমি পাঁচশো পর্বের কেক কাটলাম। আমার আগের ধারাবাহিকও পাঁচশো পেরিয়েছিল। ওই ফ্লোরেই শুটিং হতো। আর এখন প্রায় সেম ইউনিটের সঙ্গে কাজ করি। ওদের সঙ্গে আবারও পাঁচশো পেরোলাম, আমার কাছে এটা ভগবানের আশীর্বাদ।
এই যে ১ বছর ৯ মাস তুমি বকুলের সঙ্গে কাটালে, বকুলের কোন কোন বিষয়টা তোমার মধ্যে এল?
আমি বলব উল্টোটা হয়েছে। উষসীর অনেক কিছু তুমি বকুলের মধ্যে দেখতে পাবে। আমি নিজে যেমন তেমনই বকুল। এই যে সবার সঙ্গে মজা করা, কখনও প্র্যাঙ্ক করা, বকুল যেগুলো করে আর কী, রিয়েল লাইফে আমি ঠিক ওরকমটাই করে থাকি। আর বকুল আর আমার মধ্যে সবচেয়ে বড় মিল হল আমরা দুজনেই আমাদের পরিবারকে নিয়ে খুব ইমোশনাল।
ইউনিটে সবচেয়ে ভাল সম্পর্ক কার কার সঙ্গে?
সবার সঙ্গেই খুব ভাল সম্পর্ক। আমাকে অর্পিতাদি, শাশ্বতী আন্টি, মল্লিকাদি সবাই খুবই ভালবাসে, খুবই স্নেহ করে। সারাদিন শুটিং করি, সবাই মায়ের মতো করেই আগলে রাখে আমাকে। তবে আমার মায়ের চরিত্র যিনি করেন, সোহিনীদির সঙ্গে আমার সম্পর্কটা সত্যি অন্য লেভেলের। আমরা একেবারেই মা-মেয়ের মতোই হয়ে গেছি। একজন আর একজনকে চোখে হারাই বলতে পারো। আর একজনের কথা বলব। তিনি আমাদের ডিরেক্টর সৌমেন হালদার। তিনি আমাকে ভীষণ সাহায্য করেন।
আরও পড়ুন: একলাফে ৯০ পয়েন্ট বাড়ল চ্যানেল রেটিং! সেরা তিনে ‘কৃষ্ণকলি’, ‘ত্রিনয়নী’, ‘নকশিকাঁথা’
আর নায়কের সঙ্গে?
সংলাপ বলা ছাড়া নায়কের সঙ্গে আমার কোনও কথা হয় না।
সেকী! অথচ তোমাদের অন-স্ক্রিন কেমিস্ট্রি তো দারুণ!
সেই জন্যেই তো সেরা নায়িকার পুরস্কারটা পেয়েছি (হাসিতে ফেটে পড়লেন প্রায়)
ব্যাক টু ব্যাক দুটো সিরিয়ালই সুপারহিট, তার উপর পুরস্কার। বাবা-মা কী বলছে?
বাবা-মা বলছে পা-টা যেন মাটিতে থাকে। আমি বাবা-মাকে খুব ভয় পাই এখনও। আর বাইরে যত রোয়াব নিয়ে চলি, বাড়িতে ভিজে বেড়াল। আমার মনে হয় বাবা-মা ওরকমটা বলেন বলেই, ভগবানের আশীর্বাদে পর পর দুটো প্রজেক্ট এতটা সফল।
তুমি নিশ্চয়ই অনেক বার মবড হয়েছো এর মধ্যে। কেমন ছিল সেই অভিজ্ঞতাগুলো?
হ্যাঁ তা হয়েছি আর সেগুলো খুব মজার। 'বকুলকথা'-তে যেহেতু মূলত নো মেকআপ লুক ছিল প্রথমদিকে, বেশি লোকে চিনতে পারত। রেস্তোরাঁ বা শপিং মলে হয়তো গেছি, হঠাৎ করে তিন-চার জন এসে ছবি তুলতে লাগল। তাদের দেখে হয়তো আরও দশজন চলে এল। এটা একটা দারুণ ফিলিং এবং এই ফিলিংটাই পেতে চাই বার বার। রিসেন্টলি বাংলাদেশে গিয়েছিলাম ওদেশে জিফাইভ অ্যাপের লঞ্চে, ওখানেও খুব ভাল অভিজ্ঞতা।
ওখানকার দর্শকও আমাকে খুব ভালবাসেন। আর ওদের কথা বলার ধরনটা খুব মিষ্টি। প্রথমে এসে বলত, আপনি ভাল আছেন? কবে এলেন? আপনার অভিনয় খুব ভাল লাগে। আপনার সঙ্গে একটা ছবি নিই? ওখানে যে হোটেলে ছিলাম, সেখানকার ম্যানেজার একথালা মিষ্টি নিয়ে এসে বললেন, আপনি প্লিজ একটা হলেও খান। আমার বাড়িতে আমরা সবাই রোজ আপনার সিরিয়াল দেখি, আমাদের খুব ভাল লাগে।
আরও পড়ুন: আগামী বছর বিয়ে! সুদীপ্তা জানালেন কে হবেন তাঁর জীবনসঙ্গী
তোমার তো খুব বই পড়া, ভাল সিরিজ দেখা, সিনেমা দেখার অভ্যাস। সে সবের সময় পাও এখনও?
নিশ্চয়ই। আমি তো পাগলের মতো নেটফ্লিক্স দেখি। পরের দিন সকালে কলটাইম, তাও রাত জেগে জেগে সিরিজ দেখি, কিছুতেই ছাড়তে পারি না। আবার সিনের ফাঁকে ফাঁকেও দেখি। এমনও হয়েছে সিনে ডাক পড়েছে, তখনও ফোন দেখতে দেখতে যাচ্ছি বা যা দেখলাম এতক্ষণ সেটা ভাবতে ভাবতে যাচ্ছি। আমার ওয়েব সিরিজ ব্যাপারটা খুবই ভাল লাগে। এর মধ্যে অনেক অফার এসেছিল কিন্তু সেগুলো সব লিড রোলে আর অনেক ডেট লাগত। 'বকুলকথা' শেষ হলে তখন করব, ইচ্ছে আছে।
এমন কোনও ধরনের চরিত্র আছে যেটা তুমি করতে চাও?
আমার একটু অ্যাকশন-বেসড ডিটেকটিভের চরিত্র করার খুব ইচ্ছে। কিন্তু পুলিশ নয়। বেশ একটা ভাল থ্রিলারের চরিত্র। অনেকটা ওই 'নাউ ইউ সি মি' ছবির ইনভেস্টিগেটরের মতো। দেখা যাক ভবিষ্যতে সুযোগ আসে কি না।
আর প্রেমজীবন কেমন?
ভগবানের আশীর্বাদে প্রেম জীবন ভালই!
আচ্ছা তার মানে ইউ আর ইন আ রিলেশনশিপ!
এই তো, এটাই মুশকিল। ইন আ রিলেশনশিপ নয়। আসলে প্রেমটা আমার জীবনে সব সময়ে থাকে। আমি প্রেমিক মানুষ। আমি সবাইকে ভালবাসতে ও ভাল রাখতে ভালবাসি। কিন্তু ইন সেটাকে ঠিক ইন আ রিলেশনশিপ বলা যায় না।