Football, Krishanu Dey, Web Series: এবছর ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের শতবর্ষ। ময়দান নিয়ে এখনও যে বাঙালি আবেগপ্রবণ, সেই বাঙালি দর্শকের কথা ভেবেই ইস্টবেঙ্গলের শতবর্ষকে মাথায় রেখে একটি ওয়েবসিরিজের প্রস্তাব আসে জিফাইভ অ্যাপের পক্ষ থেকে। সেই প্রস্তাবে সাড়া দিয়েই শুরু হয় ভারতের মারাদোনা, কৃশানু দে-র বায়োপিকের কাজ। আগামী সোমবার ১৭ জুন থেকে শুরু হতে চলেছে এই ওয়েব সিরিজের শুটিং। ভাবনা ও রূপায়ণ টিভিওয়ালা মিডিয়ার ও প্রযোজনা জ্যোতি প্রোডাকশন্সের। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় প্রযোজক অমিত গঙ্গোপাধ্যায় জানালেন দর্শক এই সিরিজে ঠিক কী কী পেতে চলেছেন।
প্রথমত, এই সিরিজটিকে শুধুমাত্র কৃশানু দে-র বায়োপিক বলতে রাজি নন প্রযোজক। সত্তরের দশকের শুরু থেকে আশির দশকের শেষে বাংলার ময়দানের খেলা, প্রতিদ্বন্দ্বিতা, দলবদল, রাজনীতি-- সবটাই ধরা পড়বে এই সিরিজে। শুধু কৃশানু দে নন, ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগান-মহামেডানের উজ্জ্বলতম তারকাদের পর্দার অবতারে দেখতে পাবেন দর্শক। ভাস্কর গাঙ্গুলি, সুব্রত ভট্টাচার্য, সুরজিৎ সেনগুপ্ত, মনোরঞ্জন ভট্টাচার্য, অমিত ভদ্র, চিমা ওকেরি, পি কে ব্য়ানার্জি, মজিদ বাস্কার-- কৃশানু দে-র সমসাময়িক, বাংলার ফুটবলের সব বাঘা খেলোয়াড়দের চরিত্রগুলি প্রাধান্য পেয়েছে চিত্রনাট্য়ে। পল্টু দাশ, নীতু সরকার, সুপ্রকাশ গড়গড়ি, অঞ্জন মিত্র, টুটু বসু-- ক্লাবকর্তাদের চরিত্রও থাকবে এই পর্দার গল্পে।
আরও পড়ুন: শিশু-খুনীর হাড় হিম করা গল্প বলবে ‘ওয়াটার বটল’
''আমরা খেলার প্রচুর ফুটেজ কিনছি প্রসার ভারতী-র থেকে। প্রায় ৮ মাস আগে এই সিরিজের কাজ শুরু হয়েছিল'', বলেন প্রযোজক অমিত গঙ্গোপাধ্য়ায়, ''মতি নন্দীর পুরনো লেখা থেকে আমরা রেফারেন্স পেয়েছি। আমাদের গবেষণার কাজে প্রভূত সাহায্য করেছেন রূপক সাহা, মানস চক্রবর্তী। ইস্টবেঙ্গলের শতবর্ষ নিয়ে গবেষণা করতে গিয়ে দেখলাম যে কৃশানু দে-কে নিয়ে কিছু করা উচিত কারণ কৃশানু দে-র পরে আর কোনও বাঙালি ফুটবলার কিংবদন্তি হতে পারেননি। তাই কৃশানু দে-কে কেন্দ্র করে আমরা ময়দানের গল্পটাই বলার চেষ্টা করলাম।''
এই সিরিজে গল্পের শুরুটা হবে আধুনিক সময় দিয়ে। এক জার্মান মহিলা তথ্যচিত্র নির্মাণের জন্য় আসছেন কলকাতায় এবং তাঁর চোখ দিয়েই আবারও ফিরে দেখা সত্তর, আশির ময়দানকে। কৃশানু দে-র চরিত্রে অভিনয় করছেন অনুরাগ উরহাম। পুনের ফিল্ম ইনস্টটিউটের ছাত্র অনুরাগ ভোপালের বাসিন্দা। বেশ কিছু শর্ট ফিল্মে অভিনয় করেছেন এর আগে। একটি জাতীয় স্তরের কাস্টিং এজেন্সির মাধ্যমেই অনুরাগের সন্ধান পায় টিভিওয়ালা মিডিয়া। ''অনুরাগ জীবনে কোনওদিন ফুটবল খেলেনি। বেশ অনেকদিন ধরেই ওর ট্রেনিং চলেছে, এখনও রেগুলার কোচিং করছে। কৃশানু দে-কে বলা হতো বাঁ পায়ের জাদুকর। অনুরাগ এমনই ট্রেনিং করেছে যে এখন ডান পায়ে ঠিকঠাক শট মারতেই পারছে না। কোচকে বলেছে, দাদা আপনে মুঝে লেফটি বনা দিয়া'', জানালেন প্রযোজক অমিত গঙ্গোপাধ্য়ায়।
আরও পড়ুন: ভারতের গুপ্তচরই হবে বাংলাদেশের বউ! আগামী সপ্তাহে আসছে চমক
টিভিওয়ালা মিডিয়া-কে বলা যায় বাংলার ওয়েব মাধ্য়মের অন্য়তম প্রধান প্রযোজনা সংস্থা। 'হোলি ফাক', 'দুপুর ঠাকুরপো', 'হেলো', 'একেনবাবু'-র পরে সম্প্রতি জি ফাইভ-এ মুক্তি পেয়েছে ওই সংস্থা প্রযোজিত হাড়-হিম করা সিরিজ, 'ওয়াটার বটল'। শিশু সিরিয়াল কিলারকে নিয়ে তৈরি এই সিরিজটি ইতিমধ্য়েই ঝড় তুলেছে সোশাল মিডিয়ায়।
কৃশানু দে-কে নিয়ে এই সিরিজে তাঁর স্ত্রী, বাবা, ভাই, ছেলে সব চরিত্রই রয়েছে। বহু অরিজিনাল ডকুমেন্টস ব্য়বহার করা হবে এই সিরিজে এবং তার মধ্যে রয়েছে বিয়ের আগে স্ত্রীকে লেখা কৃশানু দে-র চিঠিও। অমিত জানালেন, ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের মিডিয়া ম্য়ানেজার গৌতম রায়ও অনেকটা সাহায্য করেছেন এই ব্য়াপারে। কৃশানু দে-কে নিয়ে বেশ কিছু স্ক্র্যাপবুক ছিল তাঁর, যা তিনি প্রযোজক সংস্থাকে দিয়েছেন সিরিজের গবেষণার কাজে।
ব্য়ক্তিগত জীবন, ময়দানের ওঠাপড়ার পাশাপাশি দলবদলে সংবাদমাধ্য়মের ভূমিকার প্রসঙ্গটিও আসবে এই সিরিজে। সব মিলিয়ে 'কৃশানু কৃশানু' ওয়েব সিরিজটি হবে সত্তর-আশির ময়দানের একটি ঐতিহাসিক দলিল। কল্লোল লাহিড়ির গল্পের উপর ভিত্তি করে এই সিরিজের চিত্রনাট্য় লিখেছেন শৌভিক দাসগুপ্ত, অভ্র চক্রবর্তী ও চন্দ্রোদয়। আর সিরিজটি পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছেন কোরক মুর্মু। এই বছরের শেষের দিকেই সম্ভবত স্ট্রিমিং হবে এই সিরিজের।