এই মুহূর্তে সবচেয়ে কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে চলেছেন চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা। তাঁদের সমস্ত ধরনের ছুটি বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। অনেক মহিলা নার্সকে সন্তানসম্ভবা অবস্থাতেও পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। প্রাক্তন টেলি-অভিনেত্রী সুকন্যা গোস্বামীকে হয়তো অনেক দর্শকই মনে রেখেছেন শুভদৃষ্টি ধারাবাহিকের খল-চরিত্রে অভিনয়ের জন্য। বর্তমানে সরকারি নার্স সুকন্যা। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা-কে জানালেন কতটা কঠিন সময় এখন চিকিৎসা পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত থাকা মানুষদের।
''আমার এখন যেখানে পোস্টিং, সেখানে আমরা ৩ জন প্রেগনেন্সি নিয়েই কাজ করছি। এমন একটা এমার্জেন্সি পরিস্থিতিতে আমাদের পেশাগত সব দায়িত্ব পালন করতে তো হবেই। এখন আগামী প্রায় দুমাস আমাদের সমস্ত ছুটি বাতিল করে দেওয়া হয়েছে'', বলেন সুকন্যা।
আরও পড়ুন: লন্ডন থেকে ফিরে স্বেচ্ছা আইসোলেশনে ইরফান পুত্র
সুকন্যা জানালেন, করোনা সংক্রমণ আটকাতে প্রয়োজন এন৯৯ মাস্ক যা প্রচুর পরিমাণে সরবরাহ নেই, না এরাজ্যে, না সারা দেশে। যদি সাধারণ মানুষ বারণ সত্ত্বেও বেশি ঘোরাঘুরি করেন বা হাত ধোয়ার অভ্যাস এখনও না তৈরি করেন, তবে সংক্রমণ ছড়াবে। সেক্ষেত্রে চিকিৎসা পরিষেবার উপর প্রবল চাপ তৈরি হবে।
২০১৮ সালের অগস্ট মাসে সরকারি নার্স হিসেবে কাজ শুরু করেন সুকন্যা। প্রথমে টালিগঞ্জে এমআর বাঙ্গুরে কর্মরত ছিলেন। মাস দেড়েক হল, হাওড়া জেলার একটি হাসপাতালে ট্রান্সফার নিয়ে কাজ শুরু করেছেন। গত বছরই বিয়ে করেছেন, শ্বশুরবাড়ি চন্দননগরে। সেই কারণেই ট্রান্সফারের আবেদন করেছিলেন। প্রায় ৪ মাসের গর্ভবতী সুকন্যা কিন্তু পেশাগত দায়িত্ব থেকে সরে যাননি। তাঁর পরিবারও তাঁর এই সিদ্ধান্তকে সমর্থন জানিয়েছেন।
কলকাতার একটি বেসরকারি ইন্সটিটিউটে নার্সিং পড়ার সময় থেকেই মডেলিং করতেন, অভিনেত্রী হওয়ার স্বপ্নও ছিল। অডিশন দিয়ে সুযোগ পান 'শুভদৃষ্টি' ধারাবাহিকের একটি মুখ্য চরিত্রে। নার্সিং পাশ করে কলকাতারই একটি বেসরকারি হাসপাতালে কিছুদিন কর্মরত ছিলেন ট্রেনি হিসেবে। তার পর সরকারি চাকরি এবং অভিনয় ছেড়ে পুরোপুরি নার্সিংয়েই মনোনিবেশ করেন।
আরও পড়ুন: ছেলের জন্মদিনের পার্টি বাতিল করলেন পায়েল-দ্বৈপায়ন
''মানুষের কাছে আমাদের আবেদন, আমরা অনেকেই প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে, গর্ভস্থ সন্তানের প্রাণের ঝুঁকি নিয়েও কাজে আসছি। মানুষ যদি একটু সতর্কতা অবলম্বন করেন-- হাত স্যানিটাইজ করা, দূরত্ব বজায় রাখা, বাইরের খাবার বেশি না খাওয়া এবং যেহেতু প্রয়োজনীয় মাস্ক অপ্রতুল, তাই যথাসম্ভব বাড়িতে থাকা-- সবাই যদি একটু মেনে চলেন এগুলো, তাহলে আমাদের উপর কিছুটা হলেও চাপ কমবে'', বলেন সুকন্যা।