সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের (Srijit Mukherji) বহু প্রতীক্ষিত বলিউড প্রজেক্ট 'শেরদিল'। কাস্টিংও বাঘা! মুখ্য ভূমিকায় পঙ্কজ ত্রিপাঠী (Pankaj Thripathi)। আর সেই ছবির জন্যই কিনা কলম ধরছেন খোদ গুলজার সাহেব (Gulzar)। মুখুজ্জ্যেমশাইয়ের মন্তব্য, "এবার অন্তত আমি শান্তিতে মরতে পারব।"
বুধবার সন্ধেবেলাই অনুরাগীদের সারপ্রাইজ দিলেন সৃজিত। গুলজার তাঁর ছবির জন্য গান লিখবেন, এও কী কম বড় কথা! অতঃপর উচ্ছ্বাস যেন আর বাঁধ মানছে না পরিচালকের। কীভাবে এই প্রাপ্তিযোগ ঘটল? সৃজিত জানালেন, "প্রথমটায় খানিক ভয় পেয়েই ছবিটা পাঠিয়েছিলাম গুলজার সা'বকে। দেখে উনি যখন জানালেন যে, ছবিটা ওনার খুব পছন্দ হয়েছে। এবং তিনি এই সিনেমার জন্য গান লিখতে চান, তখন এল আমার 'বাকেট লিস্ট' মুহূর্ত। ওদিকে আশা ভোঁসলের সঙ্গেও কাজ করার ইচ্ছেপূরণ হয়ে গিয়েছে। এবার গুলজার সা'বের সঙ্গে কাজের ইচ্ছেওপূরণ হয়ে গেল। শেরদিল-এর টাইটেল সং লিখছেন উনি। এবার আমি শান্তিতে মরতে পারব।"
বিশিষ্ট গীতিকারের সঙ্গে ছবিও পোস্ট করেছেন পরিচালক। প্রসঙ্গত, টলিউডের গণ্ডী পেরিয়ে সৃজিত মুখোপাধ্যায় এখন বেজায় ব্যস্ত বলিউডে। তাপসী পান্নুকে‘সাবাশ মিঠু’তে পরিচালনা করেছেন। পরবর্তী হিন্দি ছবি ‘শেরদিল’(Sherdil) -এর পোস্ট প্রোডাকশনের কাজ চলছে। উপরন্তু ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলার এক সাক্ষাৎকারে সৃজিত নিজেই জানিয়েছিলেন যে, বলিউডের আরও চার-চারটি প্রজেক্ট রয়েছে এই মুহূর্তে তাঁর হাতে। বাংলার গণ্ডী পেরিয়ে হিন্দি ইন্ডাস্ট্রিতেও যে বলে বলে ছক্কা হাঁকাচ্ছেন এখন ‘মুখুজ্জ্যেমশাই’, তা বলাই বাহুল্য।
<আরও পড়ুন: পুরভোটে বাংলায় সবুজ ঝড়, ‘পুষ্পা’ স্টাইলে সায়নী বললেন ‘মমতা ঝুকেগা নেহি…’, দেখুন>
প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালেই ‘শেরদিল’-এর ঘোষণা করে ফেলেছিলেন সৃজিত। ‘সাবাশ মিঠু’ তখনও তাঁর ঝুলিতে আসেনি। মাঝে অতিমারী ভোগান্তি। তবে পর্দায় মিথিলা রাজের জীবনকাহিনি তুলে ধরার কাজ আগেভাগে শেষ করে, এবার নিজের স্বপ্নের প্রজেক্টে হাত দিয়েছেন তিনি। ওদিকে ‘রাজকাহিনি’ দেখে দর্শকরা পরিচালকের মার্কশিটে ভাল নম্বর বসালেও ‘বেগমজান’-এর ক্ষেত্রে খানিক আশাহত হয়েছিলেন। তবে ‘শেরদিল’ নিয়ে উন্মাদনা তুঙ্গে। কারণ প্রথমত, এই ছবির গল্প সত্য ঘটনা অবলম্বনে। দ্বিতীয়ত, মুখ্য ভূমিকায় পঙ্কজ ত্রিপাঠীর মতো দক্ষ অভিনেতা।
‘শেরদিল’ নিয়ে ভাবনার সূত্রপাত কোথায়? ২০১৬ সালে আসলে খবরের কাগজে নেপালের একটি ঘটনার কথা জানতে পারেন সৃজিত মুখোপাধ্যায়। নেপাল সীমান্তে ৬০২ কিমি অঞ্চলজুড়ে একটি ব্র্যঘ্র প্রকল্প রয়েছে। যেখানে বাঘের সংখ্যা পঞ্চাশের বেশি। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, জঙ্গলের বাইরে বাঘের আক্রমণে কোনও এলাকাবাসীর মৃত্যু ঘটলে মৃতের পরিবারকে ১০ লক্ষ টাকা দেওয়া হবে। আর সেই টাকা পাওয়ার আশাতেই নাকি বহু দুঃস্থ পরিবার তাঁদের বৃদ্ধ কিংবা অসহায় কোনও পরিবারের সদস্যকে জঙ্গলে ছেড়ে দিয়ে আসত। পেটের দায় বড় দায়! খিদের জ্বালা মানবিকতার থেকেও বড় হয়ে ওঠে। সেইরকমই ঘটনা নিয়ে ‘শেরদিল’-এর গল্প সাজিয়েছেন সৃজিত। আর সেই ছবির জন্যই এবার কলম ধরলেন বিশিষ্ট গীতিকার-লেখক গুলজার।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন