Hollywood: মডেল ও ব্যবসায়ী হেইলি বিবার সম্প্রতি একটি খোলামেলা সাক্ষাৎকারে তার মাতৃত্বযাত্রা, প্রসবকালীন অভিজ্ঞতা এবং সন্তান জন্মের পরের মানসিক টানাপোড়েন নিয়ে মুখ খুলেছেন। RHODE-এর প্রতিষ্ঠাতা বলেন, তার গর্ভাবস্থার শেষ ধাপে একটি বিপজ্জনক মোড় আসে, মরতে মরতে বাঁচলেন তিনি।
২৮ বছর বয়সী হেইলি জানান, গর্ভাবস্থার ৩৯তম সপ্তাহে অ্যামনিওটিক ফ্লুইড (গর্ভস্থ তরল) লিক শুরু হয়। ডাক্তাররা তখন অক্সিটোসিন দিয়ে প্রসব প্ররোচিত করেন এবং ফোলি বেলুন নামে পরিচিত একটি যন্ত্র ব্যবহার করে জরায়ুমুখ প্রসারিত করার চেষ্টা করেন। হেইলির ভাষায়, “ওটা ছিল আমার জীবনের সবচেয়ে যন্ত্রণাদায়ক অভিজ্ঞতা।”
যদিও ছেলে জ্যাক ব্লুজ বিবারের জন্মের পর সবকিছুই কিছুটা স্বস্তিদায়ক ছিল, তবে প্রকৃত বিপদ তখনও কাটেনি। হেইলি জানিয়েছেন, জন্মের পরপরই তাঁর প্রচণ্ড রক্তক্ষরণ শুরু হয়। এমন ভয়ঙ্কর ঘটনার শিকার হন, প্রতি পাঁচজনের মধ্যে একজন প্রসূতি। এই রক্তক্ষরণ এতটাই মারাত্মক যে, শক, অঙ্গ বিকলতা, এমনকি মৃত্যুর ঝুঁকি পর্যন্ত নিয়ে যেতে পারে। হেইলি বলেন, “আমি জানতাম আমার ডাক্তার আমার জন্য সেরা কিছুই করবেন, কিন্তু ভয়টা তখনো কাটেনি। মানুষ তো মারা যায়, আর সেই চিন্তাটা বারবার মনে ঘুরছিল।”
যদিও হেইলি সবসময় মা হতে চেয়েছিলেন, কিন্তু যখন সেই সময় এলো, তখন তাঁর একটাই বিষয় মাথায় এসেছিল যে, এখন তিনি প্রস্তুত না। “আমি খুশি ছিলাম। কিন্তু জন্মদানের অভিজ্ঞতা সবকিছু পালটে দিল। এটা এমন কিছু যা আর কখনও আগের মতো হবে না।” তিনি জানান, প্রসব-পরবর্তী সময়ে তিনি বডি ডিসমরফিয়া-তে ভুগছিলেন। এই অবস্থায় একজন ব্যক্তির, নিজের শরীরকে বিকৃতভাবে দেখতেও চোখে লাগে। এবং সে নিজেকে ঘৃণা করতে শুরু করে। সেই সঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়া ও ট্যাবলয়েডে ছড়িয়ে পড়া নেতিবাচক মন্তব্য, বিবাহবিচ্ছেদের গুজব এবং তার শরীর নিয়ে কটাক্ষ পরিস্থিতিকে আরও কঠিন করে তোলে।
মানুষ যখন ইন্টারনেটে ‘তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ’, ‘তারা সুখী নয়’ বলে, তখন আরও সমস্যায় পড়েন সকলে। তখন আপনি সদ্য মা হয়ে উঠেছেন, নিজের শরীরের সঙ্গে যুদ্ধ করছেন। সব মিলিয়ে মানসিকভাবে বিধ্বস্ত হয়ে পড়েন হেইলি। তবে তিনি এই বিষয়গুলোকে বাস্তবতা হিসেবে মেনে নেওয়ার চেষ্টা করেছেন তখন এবং বলেন, “আমার একটি বাস্তব জীবন আছে, যেটা আমি আমার পরিবার ও কাছের মানুষদের সঙ্গে ভাগ করে নিই।” হেইলি বলেন, সন্তান জন্মের পর জাস্টিন তার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসা প্রকাশ করেন। “তিনি আমাকে এখন একজন দেবী, একজন সুপারহিরো হিসেবে দেখেন।” তিনি হেসে বলেন। “এটা তার জন্যও এক নতুন জীবন, যেটার স্বপ্ন সে সবসময় দেখত।”
জাস্টিন বিবারও এর আগে এক বিবৃতিতে তার স্ত্রীর পাশে থাকার কথা জানান। তিনি বলেন, “হেইলি আলোচনায় থাকে তার স্টাইল, ব্যবসায়িক বুদ্ধিমত্তা ও শিল্পের প্রতি সহজাত দক্ষতার জন্য। কিন্তু মা ও স্ত্রী হিসেবে তার ভূমিকা- সেটা নিঃসন্দেহে অনন্য।” হেইলি আরও বলেন, লস অ্যাঞ্জেলেসে বাস করা তাদের জন্য ক্রমেই কঠিন হয়ে উঠেছে। কারণ পাপারাজ্জিরা প্রায়শই তাদের বাড়ির বাইরে জড়ো হয়। তিনি বলেন, "আমরা এই শহরকে ভালোবাসি... কিন্তু এখন এটা আর আগের মতো নেই।" গুজব, মিডিয়ার অতিরঞ্জন, এবং মানসিক চাপে তারা একধরনের একান্ত আশ্রয়ের সন্ধানে আছেন বলেও জানান।