Advertisment
Presenting Partner
Desktop GIF

কলকাতায় ভোট! অতিরিক্ত ছুটি পেল কি টেলিপাড়া?

General Elections 2019, Bengali Television: লোকসভা নির্বাচনের সপ্তম দফায় ভোটগ্রহণ চলছে কলকাতা ও পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে। এই উপলক্ষে ধারাবাহিকের শুটিং বন্ধ থাকবে কি থাকবে না এই নিয়ে ধন্দ ছিল।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
How does voting in Kolkata affect Bengali television

বন্ধ রয়েছে 'করুণাময়ী রাণী রাসমণি'-সহ একাধিক ধারাবাহিকের শুটিং। ছবি: ফ্যানপেজ থেকে

General Elections 2019, Bengali Television: মাসের দ্বিতীয় রবিবারের পরে এই মাসে তৃতীয় রবিবারটিও মোটামুটি ছুটির মেজাজ টেলিপাড়ায়। যেহেতু বেশিরভাগ ধারাবাহিকের শুটিং হয় খাস কলকাতা ও বৃহত্তর কলকাতার বিভিন্ন প্রান্তে, তাই টেলিপাড়ায় ১৯ মে ছুটি থাকার কথা। যদিও শোনা যাচ্ছে, বেশ কয়েকটি ধারাবাহিকের এপিসোড ব্যাংকিং খুব একটা ভাল নয়।

Advertisment

প্রতি মাসের দ্বিতীয় রবিবারটি টেলি ও টলিজগতের নির্দিষ্ট ছুটি। ওইদিন সমস্ত ছবি ও ধারাবাহিকের শুটিং বন্ধ থাকে। তা বাদে কয়েকটি প্রযোজনা সংস্থা রবিবার দিন ছুটি দিয়ে থাকে বরাবরই। যেমন ম্য়াজিক মোমেন্টস। 'ময়ূরপঙ্খী', 'ফাগুন বউ', 'নকশিকাঁথা'-র মতো অত্যন্ত জনপ্রিয় ধারাবাহিক প্রযোজনা করে এই সংস্থা। এপিসোড ব্য়াংকিংয়ের চাপও থাকে। কিন্তু তা সত্ত্বেও সাপ্তাহিক ছুটি দেওয়ার চেষ্টা করেন অনেক সংস্থাই আবার অনেকে পারেন না। ১৯ মে কিন্তু ব্যাংকিংয়ের চাপ থাকা সত্ত্বেও ছুটি দিয়েছেন টেলিপাড়ার প্রায় সমস্ত বড়-ছোট প্রযোজক, যদিও এই সিদ্ধান্ত সমর্থন করেননি অনেক পরিচালক।

আরও পড়ুন: শুটিংয়ে ‘ভূত’! হাড়-হিম করা অভিজ্ঞতা জয়জিতের

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক, একটি ধারাবাহিকের পরিচালক ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা-কে জানালেন, ''আজ ছুটিটা না হলেই ভাল হতো। আমাদের প্রজেক্টে শুটিংয়ের পরে অনেক গ্রাফিক্সের কাজ থাকে। এপিসোড তৈরি হতে সময় লাগে। তাই ব্য়াংকিং খুব বেশি থাকে না। আজকের ছুটির জন্য কাল থেকে অতিরিক্তি চাপ পড়বে শুটিংয়ে কিন্তু কিছু করার নেই।''

টেলিপাড়ায় শুটিং একদিন বন্ধ থাকলেই পরিচালক-প্রযোজকদের আশঙ্কা হয় যে ধারাবাহিক নন-টেলিকাস্ট হয়ে যাবে না তো? অর্থাৎ নির্দিষ্ট সময়ে চ্যানেলে এপিসোডগুলি সব জমা পড়বে তো? নাহলে তো নির্দিষ্ট সময়ে এপিসোডের সম্প্রচার হবে না। তেমন আশঙ্কা নিয়েই কিন্তু মোটামুটি শুটিং বন্ধ রয়েছে আজ টেলিপাড়ায়।

এখন প্রশ্ন হল, ভোটের দিন ছুটি তো সাংবিধানিক অধিকার, তা হলে আর এত কথা কেন? 'দ্য় রিপ্রেজেন্টেশন অফ দ্য পিপল অ্যাক্ট ১৯৫১', সেকশন ১৩৫বি অনুযায়ী, প্রত্য়েক ভোটদাতারই তাঁর কেন্দ্রে ভোটের দিন পেইড-লিভ প্রাপ্য অর্থাৎ ওইদিন তিনি ছুটি নিলে তাঁর সেইদিনের বেতন কাটা যাবে না। কিন্তু ওই আইনেরই একটি অনুষঙ্গ রয়েছে। সেকশন ১৩৫বি-এর চতুর্থ পয়েন্ট রয়েছে-- যদি কোনও ভোটদাতার অনুপস্থিতিতে তাঁর কর্মক্ষেত্রে কোনও বিপদ আসে অথবা যে সংস্থায় সে কর্মরত, তাদের বিপুল পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়, তবে ভোটদানের জন্য় ছুটি দেওয়া যাবে না সেই ভোটদাতাকে। অর্থাৎ তিনি ভোট দেবেন কি দেবেন না, সেটা তাঁর ব্য়াপার কিন্তু তাঁকে সেদিন কাজে আসতে হবে।

আরও পড়ুন: ‘জাদু কড়াই’-তে রান্না করবেন রাহুল

এই চতুর্থ পয়েন্টটি মূলত আপৎকালীন কর্মজীবীদের জন্য। এর মধ্যে পড়ছে পুলিশ, দমকল, চিকিৎসাক্ষেত্র ইত্যাদি। তা বাদে এই অনুষঙ্গটি ব্যবহার করে কোনও সংস্থা ভোটের দিন তার কর্মীদের অফিস বা কাজে আসতে বাধ্য করতে পারে কিন্তু তার কারণটি জোরদার হতে হবে। অর্থাৎ ওই কর্মীরা না এলে তার কতটা ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে অথবা কী কী বিপদ হতে পারে, তার খতিয়ান দিতে হবে। না হলে কর্মীদের মধ্যে কেউ ওই সংস্থাকে আইনি প্যাঁচে ফেলতেই পারে।

নিঃসন্দেহে বিষয়টা বেশ জটিল। অনেকেই এই জটিলতায় যেতে চান না আবার এই ছুটিটা পুরোপুরি কর্মীদের সঙ্গে সংস্থার সুসম্পর্কের উপর নির্ভর করে। টেলি-প্রযোজকরা ইচ্ছে করলেই এই ক্লজটির সুব্যবহার করতে পারতেন কারণ নির্দিষ্ট সময়ে এপিসোড জমা না দিতে পারলে প্রযোজককে আর্থিক জরিমানা দিতে হতে পারে চ্যানেলের কাছে।

আরও পড়ুন: পাঁচে ‘নকশিকাঁথা’! রইল এ সপ্তাহের সেরা দশ তালিকা

কিন্তু নির্বাচনের দিন যাতায়াত ব্য়বস্থা একটি সমস্যার হয়ে ওঠে অনেক সময়। কিছু স্পর্শকাতর এলাকায় রাজনৈতিক সংঘর্ষ হওয়ারও আশঙ্কা থাকে। সেই সব বিবেচনা করেই সাধারণত ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়। টেলিপাড়ার প্রযোজকরাও সে সব আশঙ্কার কথা ভেবেই ছুটি ঘোষণা করেছেন কারণ অভিনেতা-অভিনেত্রীরা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ব্য়ক্তিগত গাড়ি ব্যবহার করলেও টেকনিসিয়ানদের একটি বড় অংশকে পাবলিক ট্রান্সপোর্টই ব্যবহার করেই কাজে আসতে হয়।

সুরিন্দর ফিল্মস, সুব্রত রায় প্রোডাকশন্স-সহ টেলিপাড়ার সমস্ত বড় প্রযোজনা সংস্থাগুলি ১৯ মে ধারাবাহিকের শুটিং বন্ধ রেখেছে। তাই বলাই যায়, ১৯ মে অতিরিক্ত একটি ছুটি পেল টেলিপাড়া এবং তার জন্য সাধুবাদ প্রাপ্য টেলিপাড়ার সেই সব প্রযোজকদের যাঁরা নন-টেলিকাস্টের আশঙ্কা সত্ত্বেও ছুটি দিলেন।

Bengali Serial Bengali Television
Advertisment