পেটের দায় বড় দায়! যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনে খাবারের দোকানের সামনে লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন এক ভারতীয় পড়ুয়া। রুশ হামলায় বিপর্যস্ত জনজীবন। ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি। আকাশে-বাতাসে বারুদের গন্ধ আর চারদিকে প্রাণে বাঁচার হাহাকার, আর্তনাদ। তার মাঝেই খাবার কিনতে গিয়েছিলেন ডাক্তারি পড়ুয়া নবীন শেখারাপ্পা জ্ঞানগৌদর। কিন্তু পেটের খিদে মেটা তো দূরঅস্ত, খাবার নিয়ে বাড়ি ফেরাই হল না তাঁর। খারকিভ রাশিয়ান মিসাইল আক্রমণে প্রাণ গেল বছর কুড়ির নবীনের। রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধে প্রথম কোনও ভারতীয়ের মৃত্যু হল। বিদেশমন্ত্রকের তরফে এই খবর প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই শোকাহত দেশ। সেই প্রেক্ষিতেই গর্জে উঠলেন ফারহান আখতার।
সদ্য প্রেমিকা শিবানী দান্দেকরের সঙ্গে বিয়ে সেরেছেন। ঘনিষ্ঠ বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে সেলিব্রেশন এখনও জারি। তার মাঝেই মঙ্গলবার বিকেলে নবীন শেখারাপ্পা জ্ঞানগৌদরের মৃত্যুর খবর পেয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় মুখ খুললেন ফারহান। টুইটে শোকবার্তা জ্ঞাপন করে তারকার মন্তব্য, "এখন আবার ইউক্রেন হামলার বলি এক ভারতীয় পড়ুয়া। ওঁর পরিবারের কথা ভেবেই ভয়ঙ্কর অনুভব করছি। গভীর সমবেদনা। আশা করি আমরা যেন দেশের নাগরিককে খুব তাড়াতাড়ি নিরাপদে বাড়ি ফেরাতে পারি।"
<আরও পড়ুন: মার্কিন মুলুকের বাড়িতেই নিকের সঙ্গে ঘটা করে শিবরাত্রি পালন প্রিয়াঙ্কার, দেখুন অন্দরমহলের ছবি>
নবীনের স্বপ্ন ছিল ডাক্তার হওয়ার। সেই কারণেই ভিন দেশে পাড়ি জমানো। গত চার বছর সবই ঠিকঠাক ছিল। কিন্তু রুশ হামলায় সব ওলটপালট হয়ে গেল। মর্মান্তিক পরিণতি ঘটল ভারতীয় পড়ুয়ার। ২০ বছর বয়সি মৃত ভারতীয় ছাত্র শেখারাপ্পা জ্ঞানাগৌদর আদতে কর্নাটকের বাসিন্দা। খারকিভ ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র ছিল সে। শেখরাপ্পার হস্টেলের বন্ধু শ্রীধর গোপালকৃষ্ণণ 'দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস'কে জানিয়েছেন যে, একটি মুদিখানার কাছে দাঁড়িয়েছিল নবীন। তখনই রুশ মিসাইল হামলা চলে। তাঁর দেহ খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। হয়ত হাসপাতোলে ওর মৃতদেহ রয়েছে, কিন্তু এই মুহূর্তে সেখানেও যাওয়া যাচ্ছে না।
প্রসঙ্গত, রাশিয়ার সীমান্ত থেকে ইউক্রেনের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর খারকিভ প্রায় ৪০ কিমি দূরে অবস্থিত। গত কয়েকদিন ধরে এই শহর রুশ হামলার শিকার। এই শহরের বহু এলাকায় ভারতীয় মেডিক্যাল পড়ুয়ারা থাকেন। খারকিভে ভারতীয় পড়ুয়ার মৃত্যুর পরই বিদেশ সচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা রাশিয়া এবং ইউক্রেনের রাষ্ট্রদূতদের তলব করেছেন। খারকিভ-সহ যেসব শহরে ভারতীয় পড়ুয়ারা এখনও রয়েছেন তাদের জরুরীভিত্তিতে নিরাপদে দেশে ফেরাতে উদ্যোগ গ্রহণের দাবি জানানো হয়েছে।
বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচী টুইটে জানিয়েছেন, "একই পদক্ষেপ করেছেন রাশিয়া ও ইউক্রেনে স্থিত ভারতীয় রাষ্ট্রদূতও।" নবীনের মৃত্যুর পর ইউক্রেনে আটকে পড়া ভারতীয়রা আরও সংশয়ে রয়েছেন। এদেশে থাকা আতামীয়-স্বজন, বন্ধুবান্ধবরাও প্রশ্ন তুলেছেন, তাঁরা কি ফিরতে পারবে নিরাপদে?
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন