২০০ কোটি টাকার আর্থিক তছরুপ মামলায় এবার সুকেশ চন্দ্রশেখরের বিরুদ্ধে রাজসাক্ষী জ্যাকলিন ফার্নান্ডেজ ও নোরা ফতেহি। বছরশেষেই শোনা গিয়েছিল যে, জ্যাকলিনের বিরুদ্ধে কোটি টাকার মানহানির মামলা করেছিলেন নোরা। অভিযোগ, সুকেশ মামলায় অভিনেত্রী অযাচিতভাবে তাঁর নাম টেনেছেন। এবার ইকোনমিক্স অফেন্স উইংস-এর তিন নম্বর চার্জশিটে বলিউডের ২ অভিনেত্রীর নাম করা হয়েছে সাক্ষী হিসেবে।
যে চার্জশিট ফাইল হয়েছে এই সপ্তাহের গোড়ার দিকে, সেখানে বিচারক শৈলেন্দর মালিক বিবরণ দিয়েছেন, কীভাবে সুকেশ চন্দ্রশেখর নোরা ফতেহির সঙ্গে তিহার জেল থেকে যোগাযোগ করতেন এবং BMW ও দামি উপহার দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে প্রেমিকা হওয়ার প্রস্তাব রাখেন।
অন্যদিকে জ্যাকলিন ফার্নান্ডেজ আদালতে সুকেশের কথা বলতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন। তিনি বলেন, "সুকেশ আমাকে ফাঁসিয়ে আমার পুরো জীবন, কেরিয়ার সমস্ত নষ্ট করে দিয়েছে। একজন সরকারি আধিকারিক হিসেবে পরিচয় দিয়েছিল। পিঙ্কি ইরানির সূত্রেই ওর সঙ্গে আলাপ। নিজেকে সান টিভির মালিক দাবি করে, ও আমায় বুঝিয়েছিল আমার দক্ষিণ ভারতে আরও কাজ করা উচিত। এও বলে যে, ওদের বেশ কিছু প্রজেক্ট রয়েছে। পিঙ্কি ও সুকেশ দিনে ৩বার কল করত। ব্যাকগ্রাউন্ডে সোফা, পর্দা দেখে কখনও মনে হয়নি ও জেলে।"
<আরও পড়ুন: ‘শুধু এটুকুর জন্য আঁকড়ে ধরেছি..’, ‘মিঠুনদা’কে জড়িয়ে কাঁদো কাঁদো চোখে বললেন বিশ্বনাথ>
এখানেই শেষ নয়, ২০২১ সালের ৮ আগস্টের পর থেকে সুকেশের সঙ্গে কোনও কথা হয়নি বলেও দাবি করেন জ্যাকলিন। অভিনেত্রী বলেন, "পরে জানতে পারি যে সরকারি কর্মকর্তার ছদ্মবেশ ধারণ করার জন্য সুকেশকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পিঙ্কি সবটা জেনেই এসব করেছে।"
অন্যদিকে নোরার কথায়, চেন্নাইতে শো করার পর সুকেশের স্ত্রীয়ের তরফে বহুমূল্য উপহার পান তিনি। তবে সুকেশ নিজে ফোন করে তাঁকে বিএমডব্লু দিতে চান। যা নিতে অস্বীকার করেন ফতেহি। পরে দুবাইতে যাওয়ার পর এক তুতোভাইয়ের কাছ থেকে ফোন পান নোরা ফতেহি। তিনিই অভিনেত্রীকে জানান যে, সুকেশ ববি এবং তাঁকে ফোন করে প্রস্তাব দেন, নোরার জীবনের সমস্ত দায়িত্ব নিতে চাই, তবে ওকে আমার প্রেমিকা হতে হবে। শুধু তাই নয়, ইরানির তরফে এও বলা হয় যে, "জ্যাকলিন তো লাইনে পড়ে আছে, তবে সুকেশ আপনাকেই চায়। যা শুনে নোরার তুতো ভাই খেপে গিয়ে পুলিশে অভিযোগ করার হুমকি দেন পিঙ্কি ইরানিকে।"
এই মানুষের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন জ্যাকলিনও। তিনি জানান, "ইরানিই সবসময়ে সুকেশকে বিশ্বাস করার জন্য ব্রেনওয়াশ করত। ও আমাকে বলত, সুকেশ খুব ভদ্রলোক এবং ভীষণ ধনী। জ্যাকলিনের অভিযোগ, সুকেশ আমার আবেগ নিয়ে খেলেছে। ওর পরিবারের সঙ্গে দেখা করানোর কথা বলতেই সবসময়ে এড়িয়ে যেত।"
অন্যদিকে, পিঙ্কি ইরানির আইনজীবী দাবি করেন, "সুকেশ চন্দ্রশেখর পিঙ্কিকেও উঁচু পোস্টের প্রলোভন দেখিয়ে ২ অভিনেত্রীর সঙ্গে আলাপ করিয়ে দিতে বলেছিল। এবার যদি নোরা, জ্যাকলিনের পাশাপাশি পিঙ্কি ইরানিকেও সাক্ষী হিসেবে ডাকা হয়, তাহলে এই আইনি পদ্ধতি দ্রুত শেষ হবে।"