Ghost Stories cast: জাহ্নবী কাপুর, সুরেখা সিক্রি, সবিতা ধুলিপালা, সাগর আর্য্য, পাভেল গুলাটি, সুকান্ত গোয়েল, গুলশন দেবাইয়া, মৃণাল ঠাকুর, অবিনাশ তিওয়ারি, আদিত্য শেট্টি, ইভা অ্যামের্ট
Ghost Stories directors: জোয়া আখতার, অনুরাগ কাশ্যপ, দিবাকর বন্দ্যোপাধ্যায়, করণ জোহর
Ghost Stories rating: ২ তারা
বম্বে টকিজ অথবা লাস্ট স্টোরিজ তৈরি হয়েছিল যে চার পরিচালকের হাতে, তাঁরাই আবার হাতে হাত মিলিয়ে তৈরি করেছেন গোস্ট স্টোরিজ। চারটি ছোট ছবিকে জুড়ে দেওয়া হয়েছে। বছরের শুরুটা ঠিক ভূত-প্রেত-আত্মা দিয়ে শুরু করার ইচ্ছে ছিল না কিন্তু গোড়াতেই এটাই এসে পড়ল পাতে এবং গিলে নিতে হল।
আরও পড়ুন: বিদায়ী দশকের সেরা ২৩টি বলিউড ছবি, এক নজরে
এক সুন্দরী তরুনী নার্স এক শয্যাশায়ী বৃদ্ধার দেখভাল করতে উপস্থিত হয় এমন একটা ফ্ল্যাটে যেটা দেখে বোঝা যায় এক সময় বেশ ঝলমল করত জায়গাটা কিন্তু এখন পোড়ো বাড়ির কাছাকাছি প্রায়। নার্সটির অবস্থা ভাল নয় উপরন্তু একটি প্রেমিক আছে যে খুব একটা পাত্তা দেয় না মেয়েটিকে।
বাচ্চাদের খেলার পুতুলও কিন্তু ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারে। বিশেষ করে তাদের যদি লাইন করে সাজিয়ে রাখা হয় তাকে। মনে হবে যেন সবাই ড্যাব ড্যাব করে তাকিয়ে রয়েছে। একজন গর্ভবতী মহিলা বার বার খাড়া সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামা করে এবং সেই মহিলাকে সব সময় চোখে চোথে রাখে একটি পজেসিভ বাচ্চা। হবু মায়ের উৎকণ্ঠা আর হঠাৎ হঠাৎ কাক ডাকার আওয়াজ-- কেমন একটা অশুভ অশুভ ঠেকছে না?
এক তরুণ এসে পৌঁছয় একটা গ্রামে যেখানে তার কাজে যোগ দেওয়ার কথা। কিন্তু সে এই নতুন কাজের জায়গাটি নিয়ে যা যা ভেবে এসেছিল, তার ঠিক উল্টোটা ঘটতে থাকে, যখন তার সঙ্গে দেখা হয় ভয়ে সিঁটিয়ে থাকা দুটি বাচ্চা ছেলেমেয়ের। গ্রামের গায়ে কেমন একটা পরিত্যক্ত গন্ধ। দাঁড়ান দাঁড়ান, গলায় হিংস্র আওয়াজ, কেমন যেন খাবার দেখে লাল পড়ার মতো শব্দ আসছে বাইরে থেকে!
এক সুন্দরী পাত্রী শেষ পর্যন্ত দেখেশুনে বিয়েতে রাজি হয়। পাত্রও সুদর্শন ও বড়লোক। যে বাড়িতে সে থাকে সেটা তার দিদিমার। বিয়ে হয়ে আসা ইস্তক কেমন গা ছমছম করে নতুন কনেটির। এই প্রাসাদোপম বাড়িতে কীসের একটা যেন অস্বস্তি। হাউসকিপারের চোখেমুখে কেমন একটা রাগ, শ্বশুর-শাশুড়িকে দেখে মনে হয় সারাক্ষণ ঘুমের ওষুধে আচ্ছন্ন আর সবচেয়ে বড় কথা, সদ্য বিয়ে করা বর যেন সারাক্ষণ লুকোচুরি খেলছে।
চারটি ছবিতেই বেশ ভাল গা ছমছমে পরিবেশ তৈরি হয়। গল্পের পৃথিবীর মধ্যে সহজেই ঢুকে পড়তে পারে দর্শক। কিন্তু ঠিক চেয়ার থেকে ছিটকে ফেলে দেওয়ার মতো অতটাও ভৌতিক নয়। বিশেষ করে যাঁরা এই জঁরের ছবি প্রচুর সংখ্যায় দেখে ফেলেছেন, তাঁরা কিন্তু এই চারটি গল্পই কিছুক্ষণ দেখার পরে বুঝে ফেলবেন, গল্পটা কোনদিকে এগোচ্ছে।
আরও পড়ুন: Good Newwz movie review: অক্ষয়-করিনার ছবি পুরোপুরি মন্দ নয়
এখন প্রশ্ন হল, আমার মতো মানুষ, যার এমনিতেই নরম, চরম বা মুখের-উপর-ছুঁড়ে-মারা যে কোনও ধরনের ভৌতিক ছবি দেখেই থরহরি কম্পমান অবস্থা হয়, সে কবার কেঁপে উঠেছে 'গোস্ট স্টোরিজ' দেখতে বসে? সত্যি বলতে কী, এই চারটি সেগমেন্ট মিলিয়ে মাত্র দুবার আমি চোখ বন্ধ করেছিলাম, বাকিটা তো 'ওই আসছে', 'এবার আসছে' ব্যাপার।
ভূতেদের কিন্তু বেশ লম্বা একটা ইতিহাস আছে। তাই এক্কেবারে নতুন কিছু তৈরি করা সত্যিই বেশ শক্ত। 'গোস্ট স্টোরিজ' দেখতে বসে যেমন হঠাৎ করে আমার মাথায় ঝিলিক দিয়ে ওঠে জন ক্রাসিনস্কি-র 'আ কোয়ায়েট প্লেস' অথবা দ্যাফনে দ্যু মরিয়ার-এর 'রেবেকা'। কিন্তু এটাও সত্যি যে দুটো জায়গায় সত্যিই শ্বাস আটকে যাওয়ার মতো হাল হয়েছিল-- একটা পালকে ভরা হাত আর একটা জায়গায়, হাড়ে দাঁত বসে যাওয়ার শব্দ। আর যেটা বলার মতো সেটা হল জাহ্নবী কাপুরের অভিনয়। ওটাই সারপ্রাইজ!
চারটি গল্পই যত্ন করে তৈরি কিন্তু গল্পগুলো বড্ড অনুমেয় এবং চেনা। সত্যি কথা বলতে কী, 'ভয়' ব্যাপারটা কোথায় গেল একটু বলবেন?