শুধু অমিত শাহ নন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও বাবা অজয় চক্রবর্তীর বাড়িতে এলে যেতেন না কৌশিকী চক্রবর্তী, সাফ জানিয়ে দিলেন সঙ্গীতশিল্পী।
২০২০ সালের নভেম্বর মাস। প্রথম সপ্তাহেই ২ দিনের বাংলা সফরে এসেছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। সেই সময়েই পৌঁছে যান সঙ্গীতজ্ঞ পদ্ম পুরস্কারপ্রাপ্ত পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তীর বাড়িতে। সেখানে শাহী আড্ডায় গুরুজির শিষ্যরা সঙ্গীত পরিবেশন করে। কিন্তু অজয় দরবারে সেদিন অনুপস্থিত ছিলেন কন্যা তথা সঙ্গীতশিল্পী কৌশিকী চক্রবর্তী। কেন? এবার সেই প্রসঙ্গেই মুখ খুললেন কৌশিকী চক্রবর্তী।
অমিত শাহ যেদিন অজয় চক্রবর্তীর গল্ফক্লাব রোডের বাড়িতে এলেন, সেদিন মাত্র দেড় কিলোমিটারের দূরত্বে যোধপুর পার্কের বাড়িতে ছিলেন কৌশিকী। কিন্তু একটি বারের জন্যও বাপের বাড়িতে গেলে না। যেখানে বাবার প্রায় সব অনুষ্ঠানেই মেয়েকে দেখা যায়, সেখানে শাহী-সফরের দিন গায়িকার এমন অনুপস্থিতি নজর কাড়ার-ই কথা। তাহলে কি কোনও মনোমালিন্যা বা গোঁসা থেকেই এমন পদক্ষেপ? সম্প্রতি এক সংবাদমাধ্যমে এমন প্রশ্নের সম্মুখীন হয়েছিলেন গায়িকা।
উত্তরে কৌশিকী চক্রবর্তীর মন্তব্য, "আমার কোনও গোঁসাই নেই। তা থাকতে যাবে কেন?" এরপরই গায়িকা জানালেন, "যদি রাসকিন বন্ড, শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের মতো কোনও লেখক যাঁদের লেখা আমি আর আমার ছেলে পড়ি কিংবা সুধা মূর্তি বা কোনও সঙ্গীতশিল্পী আসতেন, তাহলে যেতাম।"
<আরও পড়ুন: ‘মুভি মাফিয়ারাই হিট-ফ্লপ ঘোষণা করে’, ‘ব্রহ্মাস্ত্র’র সাফল্যে তেলেবেগুনে জ্বলছেন কঙ্গনা>
দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী যেখানে খোদ যেচে তাঁদের বাড়ি গেলেন, সেখানে কৌশিকী সেদিন কেন হাজির ছিলেন না? এপ্রসঙ্গে অজয়-কন্যার স্পষ্ট মন্তব্য, "যাওয়ার প্রয়োজন বলে মনে হয়নি। তার থেকেও বেশি, আমার প্রাসঙ্গিক বলে মনে হয়নি। বাবা যদি বলতেন যেতে, নিশ্চয় যেতাম। ওঁর আদেশ পালন করতাম। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এলেও যেতাম না।"
তাহলে কি সচেতনভাবেই রাজনৈতিক ময়দান থেকে দূরত্ব বজায় রাখেন কৌশিকী চক্রবর্তী? সেপ্রসঙ্গে গায়িকার জবাব, "রাজনীতির ধারেকাছেই নেই আমি। সচেতনভাবে যে দূরত্ব বজায় রাখি, এমনটাও নয়। আমি রাজনীতি সম্পর্কে কিছু জানিই না। তাছাড়া কিছু জিনিস না জেনে আমার দিব্যি চলে যাচ্ছে। কখনও মনে হয়নি, জীবনে কিছু বাদ পড়ে যাচ্ছে।" দেড় বছর বাদে এপ্রসঙ্গে মুখ খোলেন গায়িকা।
একটা সময়ে প্রথমজীবনে কতটা স্ট্রাগল করতে হয়েছে অজয় চক্রবর্তীকে, সেই দুঃসময়ের কথাও বলেন কৌশিকী। জানান, তাঁর বাবা সত্যিই এতবড় সঙ্গীতজ্ঞ হওয়ার আগে শ্যামনগরে ডাব বিক্রি করতেন। শুধু তাই নয়, মাছের বাজারে গেলেও অনেকে তাকে ধাক্কাধাক্কি করতেন। কারণ, ইলিশ-কাতলা কেনার সামর্থ তখন ছিল না। সেই মানুষটিই আজ সঙ্গীতশিল্পী পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তী।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন