বীরভূমের বহুরূপী সম্প্রদায় বংশপরম্পরায় তাঁদের শিল্প চর্চাকে বাঁচিয়ে রেখেছেন। যা নিঃসন্দেহে বাংলার লোকশিল্পের এক উজ্জ্বল অঙ্গ। বিভিন্ন চরিত্রের নিখুঁত সাজ পোশাক ও অভিনয়ের মাধ্যমে তাদের চরিত্র চিত্রায়ন, বহুরূপী শিল্পের তো এটাই বৈশিষ্ট্য। তবে বাংলার এই প্রতিভা সম্পর্কে বিশ্ব কতটা জানে? অনেকের কাছেই অজানা এসব গাঁথা। আর সেই প্রতিভাকে প্রকাশ্যে নিয়ে আসতেই অভিনব উদ্যোগ কেনিয়া নিবাসী বঙ্গকন্যা অনন্যা পালের।
Advertisment
সম্প্রতি অনন্যার লেখা ও পরিচালনায় ‘মনসা কথা’ নাটকে কাজ করেছেন বহুরূপী শিল্পীরা। এই চিত্রনাট্যটি মধ্যযুগীয় বাংলা ভাষার আঙ্গিকে পদাবলী ছন্দে লেখা। যা মনসামঙ্গল কাব্যের উপর ভিত্তি করে তৈরি হয়েছে। মনসামঙ্গলের কাহিনীতে, দেবী উগ্র স্বভাব ও কঠিন হৃদয়ের অধিকারিনী। সেখানে চাঁদের দুর্দশা। সনকার অসহায়তা আর বেহুলার পতিপ্রেম পাঠকের মন জিতে নেয়। তবে অনন্যার ‘মনসা কথা’ নাটকে মানবিক দৃষ্টিভঙ্গীতে দেবী মনসাকে তুলে ধরা হয়েছে।
কীরকম? এখানে সমাজে নারীর অবস্থান নিয়ে যে বার্তা রয়েছে তা আজকের যুগেও সমান ভাবে উপযোগী। ‘মনসা কথা’ নাটকটি ইউটিউবে মুক্তি পেল অনন্যা পালের নিজস্ব চ্যানেল থেকে। এখানে অভিনয় করেছেন ধনেশ্বর দাস বৈরাগ্য, সুবল দাস বৈরাগ্য, রাজিব বাজিকর, প্রণব বাজিকর ও সুজিত বাজিকর। ভাষ্যপাঠে শুভ কুণ্ডু ও গানে সঙ্ঘমিত্রা বন্দ্যোপাধ্যায়।
অনন্যা পাল একজন লেখিকা। কর্মসূত্রে কেনিয়াতে থাকলেও বাংলায় বই লেখেন। তাঁর অনেকদিনের ইচ্ছে ছিল বহুরূপী শিল্পীদের নিয়ে কাজ করবেন। 'মনসা কথা'-য় শেষমেশ সেই আশাপূরণ হল।
এপ্রসঙ্গে অনন্যা পাল জানান," আমার অনেক দিনের ইচ্ছে ছিল বাংলার লোকশিল্পীদের নিয়ে কাজ করার। বহুরূপী শিল্পীদের কথা মাথায় আসে। মাঝে করোনার কবলে সকলের মতোই বাংলার লোকশিল্পীরাও সমস্যার সম্মুখীন হন। ওঁদের কথা মাথায় আসায় 'মনসা কথা'-র চিত্রনাট্য লিখি। সেই হিসেবেই ওঁদের মতো করেই শান্তিনিকেতনে শুটিং করা হয়। করা হয় আর্থিক সাহায্যও। আন্তর্জাতিক সঙ্গীত দিবসে আমার ইউটিউব চ্যানেল থেকেই মুক্তি পেল এই নাটকটা।"
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন