বলিউডের বহু শিল্পী, পরিচালক, গায়ক ও প্রযোজক নানাভাবে একে অপরের সঙ্গে সংযুক্ত। এই সব বন্ধনের অনেক দিক সকলের জানা থাকলেও, কিছু সম্পর্ক আজও অনেকের অজানা। ঠিক তেমনই এক সম্পর্কের কথা উঠে এসেছে কিংবদন্তি গায়ক কিশোর কুমার ও পরিচালক সত্যজিৎ রায়ের মধ্যে। অনেকেই জানে, কিশোর ও মিস্টার রায় ছিলেন ভাল বন্ধু ও একে অপরের প্রতিভার পরম ভক্ত। তবে সম্প্রতি কিশোরের পুত্র অমিত কুমার একটি সাক্ষাৎকারে জানান, এই দুই কিংবদন্তির মধ্যে শুধুই বন্ধুত্ব নয়, রক্তের সম্পর্কও ছিল।
রেডিও সিটির সঙ্গে এক আলোচনায় অমিত কুমার জানান, তাঁর মা রুমা গুহঠাকুরতা, কিশোর কুমারের প্রথম স্ত্রী ছিলেন চারুকলায় অত্যন্ত গুণী। তিনি বলেন, "আমার মা ইন্ডাস্ট্রির অনেক বড় বড় শিল্পীর সঙ্গে কাজ করতেন। তিনি পণ্ডিত উদয় শঙ্করের থেকে প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন এবং একজন নৃত্যশিল্পী ও গায়িকা ছিলেন।" এখানেই আসে সেই রক্তের সংযোগের সূত্র। অমিত জানান, তাঁর মায়ের ছোট মাসি, বিজয়া রায় ছিলেন সত্যজিৎ রায়ের স্ত্রী। অর্থাৎ, সত্যজিৎ রায় ছিলেন কিশোর কুমারের আত্মীয়। বললেন, "আমরা আসলে লেক অ্যাভিনিউতে তাদের বাড়িতে ২-৩ বছর ছিলাম, এবং তারপরে আমার মা যখন সিনেমায় ফিরে গেলেন, তখন আমরা অন্য জায়গায় চলে গেলাম।"
Chiranjeet Chakraborty: ২১-শে জুলাইকে যারা ডিম-ভাত দিবস বলে তাঁরা বিধানসভা-লোকসভায় শূন্য: চিরঞ্জিত চক্রবর্তী
এই আত্মীয়তার বাইরেও তাদের সম্পর্ক ছিল গভীর। অমিত বলেন, "কিশোর কুমার, সত্যজিৎ রায়ের কাজ ও ব্যক্তিত্ব—দু’টিরই অসাধারণ ভক্ত ছিলেন। এমনকি ‘পথের পাঁচালী’ ছবির নির্মাণকালে সত্যজিৎ আর্থিক সংকটে পড়লে, বাবা তাঁকে ৫,০০০ টাকা দিয়ে সাহায্য করেন, যাতে ছবির কাজ শেষ করা যায়।" তবে, মায়েস্ত্রোকে সাহায্য এখানেই শেষ করেননি কিশোর কুমার। অমিত যা জানালেন তাতে চমকে যেতে হয়। বলেন...
এখানেই শেষ নয়। কিশোর কুমার তখন নিজেই একটি ১৬ মিমি ক্যামেরা হাতে তুলে নেন এবং ‘পথের পাঁচালী’র নির্মাণের পর্দার পেছনের ফুটেজ নিজেই তুলতে শুরু করেন। অমিত বলেন, "ভাবুন, কিশোর কুমার সত্যজিৎ রায়ের ছবি শুট করছেন! এটা ছিল এক অবিশ্বাস্য ঘটনা। দুর্ভাগ্যবশত, সেই ভিডিও ফুটেজ আর আজ খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।" এই ঘটনা শুধু দুই শিল্পীর সম্পর্ক নয়, বরং এক যুগের সৃজনশীলতার ইতিহাসও বহন করে। একটি বন্ধুত্ব, একটি পরিবারিক সংযোগ, এবং এক অসাধারণ শিল্পসম্মান, সব মিলিয়ে কিশোর ও রায়ের এই গল্প সত্যিই চিরস্মরণীয়।