হৈমন্তী শুক্লা
কেকে এর সঙ্গে আমার দেখা হওয়ার সুযোগ হয়নি। অনেকেই ভাবেন আমি বয়জ্যেষ্ঠা তাই হয়তো এই প্রজন্মের গান শুনি না। তবে এই বিষয়টি সম্পূর্ণ ভুল। আমি ওদের গান শুনতে ভালবাসি। গানের কোনও ভেদভাব হয় না। আর কেকে যে কি সুন্দর গান গাইত, সেটা যারা ওঁর শ্রোতা কিংবা ভক্ত তারাই ভাল জানেন। শহর কলকাতায় অনুষ্ঠান করতে এসে এমন কিছু ঘটে যাবে ওঁর সঙ্গে, সেটা ভাবনার অতীত।
এই প্রজন্মের অনেকের সঙ্গেই অনুষ্ঠান করেছি। তবে কেকে -কে ব্যক্তিগত ভাবে আমি চিনতাম না। ওঁর গানের আমি ভক্ত। শুনেছিলাম, প্রথম দিন থেকেই ওঁর অনুষ্ঠান নিয়ে ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা খুব আগ্রহী ছিল। ভাল মানুষ না হলে মানুষের এত ভালবাসাও পাওয়া যায় না, এত ভাল গানও গাওয়া যায় না। গান ঈশ্বরের সাধনা, কেকে মানুষ হিসেবে যথেষ্ট ভাল। যেমন সুদর্শন তেমনই দরাজ গলা, কী সুন্দর সুর জ্ঞান। হঠাৎ করে যে কী হয়ে গেল। দিব্যি এল অনুষ্ঠান করতে, তারপরেই এমন অঘটন। আসলে ও এতটাই জনপ্রিয়, যে সকলেই উত্তেজিত হয়ে পড়েছিল। ও নিজেও বুঝতে পারেনি। তাঁর সঙ্গে আলো, আওয়াজ - সত্যিই কিছু বলার ভাষা নেই।
আরও পড়ুন < KK-র মৃত্যুর পরই খুনের হুমকি! তড়িঘড়ি থানায় ছুটলেন রূপঙ্কর >
এটা ওঁর বয়স না! এই বয়সে ওঁর মৃত্যু কী মেনে নেওয়া যায়? তবে হ্যাঁ, দুঃখ যেমন হচ্ছে তেমনই এক ধরনের স্বস্তিও রয়েছে। শিল্পীর মৃত্যু খুবই বেদনাদায়ক। ও আমার থেকে অনেক ছোট। তবে একজন সঙ্গীত শিল্পী, গান গাইতে গাইতে চলে গেলেন, এটা কিন্তু ভগবানের আশীর্বাদ। সকলেই চায় সুরের মধ্যে দিয়ে চলে যাবেন, তবে সেটা সম্ভব হয় না। আমি অবাক হয়ে গেলাম যে গানের প্রতি কতটা শ্রদ্ধা, ভালবাসা ছিল যে শেষ সময়েও গানের মধ্যেই ডুবে ছিল। এই প্রজন্মের সকলেই বেশ ভাল। ওদের স্বভাব, ব্যবহার এত সুন্দর - মাঝে মাঝে ভাবি ওরা কী সুন্দর আপন করে নিতে পারে সকলকে। অনেকেই আছেন বর্তমান প্রজন্মের শিল্পী, আমায় মা বলে ডাকেন। ওরা যদি এই বয়সে এভাবে চলে যায়, সত্যিই কষ্টদায়ক।