৯২ বছরে পদার্পণ করলেন সঙ্গীত সম্রাজ্ঞী লতা মঙ্গেশকর (Lata Mangeshkar)। আজ গোটা দেশ শ্রদ্ধা জানাচ্ছে মেলোডি ক্যুইনকে। ভারতীয় সংগীত জগতে তাঁর অবদান বোধহয় আর আলাদা করে বলার প্রয়োজন পড়ে না। তবে এই নাম-যশ-খ্যাতি কিন্তু সহজেই মেলেনি লতার ক্ষেত্রে। উপরন্তু যত তাঁর খ্যাতি ছড়িয়েছে, ততই বেড়েছে শত্রু। এমনকী একটা সময়ে, এই লতা মঙ্গেশকরকেই বিষ খাইয়ে খুনের চেষ্টা করা হয়েছিল বলে শোনা যায়। ঠিক কী ঘটেছিল?
সালটা ১৯৬২। লতা মঙ্গেশকরের কেরিয়ার ঊর্ধ্বগগনে। তাঁর নাম-ডাক যে কারো পক্ষেই তখন বেজায় ঈর্ষণীয় হয়ে উঠেছিল। সুপারহিট সব গান। গোটা দেশে সঙ্গীত সম্রাজ্ঞীর গুণমুগ্ধের সংখ্যা নেহাত কম নয় সেই সময়ে। হঠাৎ এক ভোরে প্রচণ্ড পেট ব্যথা শুরু হয় লতার। সঙ্গে সঙ্গে সবুজ বমি করতে থাকেন। খানিক পরেই সারা শরীর অসার হয়ে যায় গায়িকার। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে যায় যে, হাত-পা নাড়ানোর ক্ষমতা অবধি ছিল না তখন তাঁর। এদিকে লতা তো ওই ভোর রাতে যন্ত্রণায় ছটফট করছেন। তড়িঘড়ি বাড়িতে চিকিৎসক ডাকা হয় পরিবারের তরফে। এক্স-রে করা হয় বাড়িতেই। যন্ত্রণা কমাতে ইঞ্জেকশন দিয়ে ঘুম পাড়িয়ে দেওয়া হয় গায়িকাকে। কিন্তু এক্স-রে রিপোর্ট আসতেই সকলে হতবাক।
<আরও পড়ুন: দর্শকদের পুজোর উপহার দেবের, ‘হবুচন্দ্র রাজা গবুচন্দ্র মন্ত্রী’র ফার্স্ট ডে-ফার্স্ট শো দেখুন টিভিতে>
কী হয়েছিল? চিকিৎসক জানালেন লতার পাকস্থলীতে বিষ রয়েছে। তারপর টানা ৩ দিন যমে-মানুষে টানাটানি। প্রায় দিন দশেক পর গায়িকার শারীরিক পরিস্থিতির উন্নতি হয়। কিন্তু তখনও শরীর প্রচণ্ড দুর্বল। চিকিৎসক-ই জানান কেউ সম্ভবত বিষপ্রয়োগ করে লতা মঙ্গেশকরকে খুনের চেষ্টা করেছে। এরপর অনেক দিন গায়িকা গরম খাবার খেতে পারতেন না। বরফের টুকরো মেশানো তরল খাবার তাঁকে খেতে হত।
কিন্তু কে এভাবে বিষপ্রয়োগ করার চেষ্টা করেছিল? তা অবশ্য জানা যায়নি। কিন্তু এক সাক্ষাৎকারে লতা জানিয়েছিলেন যে, তাঁর বাড়ির পরিচারিকাই নাকি এই ঘটনার পর হঠাৎ মাস-মাইনে না নিয়েই কাজ ছেড়ে চলে যান। সেই সময়ে রোজ তাঁর বাড়িতে খ্যাতনামা গীতিকার মজরুহ সুলতানপুরী আসতেন প্রিয় গায়িকা লতার সঙ্গে আড্ডা দিতে। এমনকী লতার উদ্দেশে আনা স্যুপ আগে নিজে চেখে তারপরই খেতে দিতেন তাঁকে। পদ্মা সচদেবের লেখা 'লতা মঙ্গেশকর: অ্যায়সা কাঁহা সে লাঁউ' বইতে এই ভয়ংকর ঘটনার উল্লেখ রয়েছে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন