প্রাইভেট চ্যানেলের রমরমার বহুযুগ আগে দূরদর্শনে বসত পয়লা বৈশাখের বিশেষ বৈঠক। আশির দশক পেরিয়ে নব্বইয়ের দশক পর্যন্ত চলেছিল সেই জলসার রেশ। সেরা গায়ক, গায়িকা, আবৃত্তিকার, অভিনেতা-অভিনেত্রী-সহ বাংলার বিশিষ্টজনেরা অংশ নিতেন সেই জলসায়। কিন্তু মিলেনিয়ামের পর থেকে সেই জলসা অনেক ম্রিয়মাণ। সম্প্রতি বৈশাখী জলসা আবারও ট্রেন্ডিং এবং সেই নিয়ে চ্যানেলে চ্য়ানেলে টক্করও চোখে পড়ার মতো। প্রতিযোগিতার জন্য তৈরি জি বাংলা ও স্টার জলসা। মজার ব্যাপার হল এবছর দুই চ্য়ানেলের অনুষ্ঠানেই অন্যতম প্রধান আকর্ষণ মধুমিতা চক্রবর্তী।
একদিকে জি বাংলা-র অনুষ্ঠানের সঞ্চালনার দায়িত্বে রয়েছেন তিনি এবং গাজি আবদুন নুর। আবার অন্য়দিকে স্টার জলসা-র অনুষ্ঠানেরও অংশ তিনি। সেখানে রয়েছে রিজওয়ান রব্বানি শেখের সঙ্গে তাঁর বিশেষ ড্যান্স পারফরম্যান্স। দুটি অনুষ্ঠানেরই শুটিং শেষ। এই প্রথম নন-ফিকশন শো হোস্ট করছেন অভিনেত্রী, সেই নিয়ে খুবই এক্সাইটেড তিনি। সম্প্রতি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে জানিয়েছেন সেই কথা। তবে দু'টি অনুষ্ঠান একই দিনে, একই সময়ে সম্প্রচার হচ্ছে না। তাই কোনও অনুষ্ঠান মিস করার কোনও সম্ভাবনা নেই।
আরও পড়ুন, মানুষের শুভকামনাই সারিয়ে তুলেছে ইরফানকে, লিখলেন স্ত্রী সুতপা
প্রতি বছর মহালয়া অনুষ্ঠান নিয়ে একাধিক চ্যানেলের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা তুঙ্গে ওঠে। এবার সেই ট্রেন্ড পয়লা বৈশাখের জলসা নিয়েও। তবে দুই চ্য়ানেলের সম্প্রচারের সময় আলাদা। আগামী ১৪ এপ্রিল রবিবার বিকেল ৫টা থেকে সম্প্রচার হবে জি বাংলা-র বিশেষ অনুষ্ঠান-- বর্ষবরণ ১৪২৬। আর পরের রবিবার, ২১ এপ্রিল সন্ধ্যা ৬টা থেকে সম্প্রচার হবে স্টার জলসা-র বৈশাখী জলসা।
আরও পড়ুন, ‘তরীর’ পর ছোটপর্দায় কার ভূমিকায় তৃণা?
দু'টি অনুষ্ঠানই তারকাখচিত, তাই একই দিনে দু টি চ্যানেলের অনুষ্ঠান সম্প্রচার হলে কারও না কারও ভিউয়ারশিপে টান পড়ার সম্ভাবনা ছিল। দু'টি আলাদা দিনে সম্প্রচার হলে সেই সম্ভাবনাকে এড়ানো যায় অনেকটা। তাই এই সুবন্দোবস্ত। এতে দশর্কেরও বেশ সুবিধা। প্রায় কাছাকাছি সময়ে সম্প্রচার হলে বার বার চ্যানেল পরিবর্তনের প্রয়োজন পড়ে। এক্ষেত্রে সেই সমস্যা নেই। ধরে নেওয়াই যায় যে, দুটি অনুষ্ঠানেরই টিআরপি বেশ ভালই থাকবে।
আরও পড়ুন, ”রঞ্জিত কাকা ও কোয়েলদির পরে আমিই তৃতীয় যে পা রাখে অভিনয়ে”: দেবজয়
প্রাইভেট বিনোদন চ্যানেলের এই বৈশাখী অনুষ্ঠানগুলি খুবই জাঁকজমকপূর্ণ হলেও দূরদর্শনের বৈশাখী বৈঠকের সেই মেজাজটা কিন্তু অনুপস্থিত। অতীতে দূরদর্শনের বৈশাখী অনুষ্ঠানটি হত মূলত বৈঠকী আড্ডা। মিলেনিয়ামের ১৯ বছর পেরিয়ে বর্ষবরণ নাচে-গানে জমজমাট একটি প্যাকেজ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সেটা ভাল না খারাপ, তা নিয়ে মতবিরোধ থাকতে পারে। কিন্তু একটা কথা অস্বীকার করার উপায় নেই যে বাংলার টিভি পর্দায় পয়লা বৈশাখের বৈঠকের যে মেজাজ ছিল আশি-নব্বইয়ের দশকে, সেটা নতুন মিলেনিয়ামে এসে কোথায় যেন মিলিয়ে গিয়েছে।