/indian-express-bangla/media/media_files/2025/10/03/cats-2025-10-03-18-03-56.jpg)
মহেশের প্রেম
Mahesh Bhatt: বলিউডের সফল পরিচালকদের মধ্যে নিঃসন্দেহে যাঁর নাম উঠে আসে তিনি মহেশ ভাট। এক সাক্ষাৎকারে প্রথম স্ত্রী লরেন ব্রাইট ওরফে কিরণ ভাটের সঙ্গে প্রেমকাহিনির স্মৃতিচারণ করলেন। মাত্র ১৪ বছর বয়সে লরেনের সঙ্গে তাঁর পরিচয়। সেই সময় মহেশ ভাটের বয়স ১৬। এক দর্জির মাধ্যমে রক্তে লেখা প্রেমপত্র লুকিয়ে কিরণ ভাটের কাছে পাঠাতেন। মহেশ কন্যা পূজা ভাটের নতুন পডকাস্টে ব্যক্তিগতজীবন নিয়ে খোলামেলা কথা বললেন জিসম খ্যাত পরিচালক।
তিনি জানান, কিরণ ছোটবেলায় একটি অনাথ আশ্রমে থাকতেন। বহু বছর আগে আলাদা হয়ে গেলেও এখনও তিনি প্রথম স্ত্রীর দেখাশোনা করেন। সেই সাক্ষাৎকারে তিনি নিজের পরকীয়া নিয়েও অকপটে কথা বলেছেন। বাদ যায়নি দ্বিতীয় স্ত্রী সোনি রাজদানের সঙ্গে বিয়ের সময়ে লরেনের কী প্রতিক্রিয়া ছিল।
তাঁদের প্রথম দেখার মুহূর্তের স্মৃতিচারণ করে মহেশ ভাট বলেন, 'আমি তখন ১৬ আর ওঁর বয়স ছিল ১৪। অনাথ আশ্রমে থাকত। একদিন আমি স্কটিশ স্কুলের গেটে ওকে বন্ধুদের সঙ্গে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখলাম। প্রথম দেখাতেই একটা অদ্ভুত আকর্ষণ অনুভব করেছিলাম। কয়েকদিন পর সাহস করে ওঁর সঙ্গে গিয়ে পরিচয় করি। মনে আছে, আমি তখন মিলান সুপারি অফার করেছিলাম।'
প্রথম আলাপের পরই তাঁরা যোগাযোগের একটা মাধ্যম খুঁজে নেন। আর সেটা ছিল এক একজন দর্জি। পরিচালকের কথায়, 'তিনি স্কুল ইউনিফর্ম সেলাই করতেন। ওঁর সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে চিঠি পৌঁছে দেওয়ার অনুরোধ করেছিলাম। ধরা পড়লে চাকরি হারানোর ভয় ছিল। তবুও শেষ পর্যন্ত অনেক কষ্টে রাজি হলেন। আমি রক্ত দিয়ে চিঠি লিখেছিলাম। ও-ও রক্ত দিয়েই জবাব দিয়েছিল।'
মহেশ ভাট প্রথম স্ত্রী প্রসঙ্গে আরও জানান, একটি ফাঁকা ক্লাসরুমে গোপনে সাক্ষাৎ করেছিলেন। কিরণ প্রহরীকে ঘুষ দিয়ে দরজা খোলা রেখেছিলেন। পিছনের দরজা দিয়ে ঢুকে প্রিয়তমার সঙ্গে দেখা করেন। সেই সময় নেমে আসছিল ঘন অন্ধকার। তখন কিরণ তাঁর মুখ দেখতে চাইলে দেশলাই জ্বালিয়ে মুখ দেখান মহেশ। তাঁর কথায়, 'ও আমার দেখা সবচেয়ে সুন্দরী নারী ছিল।'
কিছুদিন পর ধরা পড়লে দর্জি তাঁর চাকরি হারান আর কিরণকেও স্কুল থেকে বের করে দেওয়া হয়। লরেনের মা রেগে যান কিন্তু মহেশ আশ্বাস দেন তাঁর থাকার ব্যবস্থা করবেন। বাবার সই নকল করে কিরণকে ওয়াইডব্লিউসিএ-তে থাকার ব্যবস্থা করে দেন। পরে কাজ শিখে রিসেপশনিস্ট ও টেলিফোন অপারেটরের চাকরি পান মহেশের প্রথম স্ত্রী।
মহেশ ভাটের স্বীকারোক্তি, 'আমি সত্যিই পরীর গল্পের মতো প্রেমে বিশ্বাস করতাম কিন্তু পরে পরভিন ববির সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ি। কিরণকে যখন বিষয়টি জানালাম তখন পূজা ঘুমিয়ে ছিল। আয়নায় নিজেকে দেখে ভাবলাম, সারা জীবন বাবাকে ঘৃণা করেছিলাম কারণ তিনি আমার মাকে অন্য নারী হিসেবে রেখেছিলেন। অথচ আমি কী করলাম?'
রূপকথার প্রেম-বিয়ে ভেঙে কিরণ-মহেশের পথ আলাদা হয়ে যায়। পরভিনের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন হওয়ার পর সোনি রাজদানকে বিয়ে করেন। কিরণ দম্পতিকে আশীর্বাদ করেছিলেন। শাহীনের জন্মের পর মহেশ প্রথম ফোন করেছিলেন কিরণকে। পূজা বলেন, 'যখন মানুষ প্রশ্ন করছিল তোমাদের বিয়ের বৈধতা নিয়ে তখন মা উঠে দাঁড়িয়ে বলেছিলেন, কে অনুমতি দিয়েছে? আমি দিয়েছি। আমার আশীর্বাদ আছে।'
আরও পড়ুন অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় অবহেলার অভিযোগ, প্রাক্তন স্ত্রী রীতার বিস্ফোরক দাবিতে আইনি নোটিশ কুমার শানুর
পূজা তাঁর বাবার প্রশংসা করে বলেন, 'খুব কম পুরুষকে দেখেছি যাঁরা একবার হাত ধরলে তা আর ছেড়ে দেয় না। ভালবাসার ধরন বদলাতে পারে কিন্তু ভালোবাসা ফুরোয় না। আজ তুমি মায়ের কাছে বাবা-মায়ের মতো হয়ে গেছ। মা জানে, যাই হোক না কেন, তোমার ওপর ভরসা করতে পারবে। তুমি কখনও ওকে বোঝাওনি যে তাকে সামলানো তোমার জন্য বোঝা। তুমি যা করো, নিঃশব্দে করো।'
একই সাক্ষাৎকারে মহেশ ভাট কেঁদে ফেলেন যখন পূজা স্মরণ করান, তিনি কী ভাবে সোনি রাজদানের সঙ্গে সম্পর্কের কথা জেনেছিলেন। পূজা বলেন, 'আমি দেখেছিলাম তুমি আমার খাটের ধারে বসে আছো। আমাকে জানাচ্ছো যে তোমার সোনির সঙ্গে পরিচয় হয়েছে। তাঁকে বিয়ে করার জন্য বাড়ি ছেড়ে যাচ্ছ। আমি এই ঘটনায় গর্বিত কারণ তুমি আমাকে আমার মাকে জানানোর আগেই আমাকে জানিয়েছিলে।'
আরও পড়ুন আদালতের দ্বারস্থ-সুরক্ষিত ৯১ বছরের আশা ভোঁসলে, আচমকা কী হল কিংবদন্তি সংগীতশিল্পীর?