কোভ্যাক্সিন কিংবা কোভিশিল্ড নয়, বরং তার পরিবর্তে পাউডার গোলা জল গেল তৃণমূলের তারকা সাংসদ মিমি চক্রবর্তীর (Mimi Chakraborty) শরীরে! অথবা হাম, বিসিজির টিকাও হতে পারে। কসবার ভুয়ো ভ্যাক্সিনেশন সেন্টার নিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য মিলল।
সংশ্লিষ্ট টিকাকরণ শিবির থেকে উদ্ধার করা টিকার ভায়ালগুলিতে কোনও ব্যাচ নম্বর এবং মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার তারিখ উল্লেখ করা ছিল না। শুধু লাগানো ছিল সবুজ স্টিকার। যা খুব বেশি হলে হাম কিংবা বিসিজির টিকা হতে পারে, ভ্যাকসিনের স্যাম্পেল পরীক্ষা করে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে জানিয়েছেন পুরসভার স্বাস্থ্য আধিকারিক রণিতা সেনগুপ্ত।
ঠিক কী ছিল ওইসব ভায়ালে? তা নিয়ে সন্দেহ বেড়েই চলেছে। এদিকে তদন্তকারীদের অনুমান, শুধুমাত্র পাউডার গোলা জলকেও টিকা বলে চালানো হতে পারে। আর সেটাই কোভিড ভ্যাকসিন হিসেবে মিমি চক্রবর্তী-সহ মঙ্গলবার এতগুলো লোককে দেওয়া হয়েছে। কেমন আছেন এখন সাংসদ-অভিনেত্রী? জানালেন নিজেই। মিমি জানিয়েছেন, "সবার ভালবাসা আশীর্বাদে সুস্থ রয়েছি।" পাশাপাশি কেউ যেন ভয় না পান, সেই আর্জিও জানিয়েছেন তিনি। কোনওরকম শারীরিক পরিস্থিতির অবনতি হলে, সেকথাও জানাবেন বলেছেন মিমি।
<আরও পড়ুন: Srabanti-Roshan: ‘আই কুইট’! শ্রাবন্তীর স্বামী রোশনের পোস্ট ঘিরে জল্পনা তুঙ্গে>
প্রসঙ্গত, মিমির উদ্যোগেই এই ভ্যাকসিন প্রতারণা চক্র ফাঁস করেছে কলকাতা পুরসভা এবং কসবা (Kasba) থানার পুলিশ। টিকা নেওয়ার পর কোনওরকম মেসেজ না আসাতেই সন্দেহ জাগে তাঁর মনে। ভ্যাকসিন নিলেই মোবাইলে সব তথ্য চলে আসে। কোউইনে ঢুকে পড়ে প্রাথমিক নথি। এই ক্ষেত্রেও কিছুই হয়নি। এমনকি শুধু সাংসদ মিমি চক্রবর্তী নয় সেই কেন্দ্র থেকেই টিকা নেওয়া কেউই সার্টিফিকেট বা কোউইনে প্রাথমিক নথি পায়নি। তাতেই বাড়ে আরও সন্দেহ।
এপ্রসঙ্গে সাংসদ-অভিনেত্রী জানিয়েছিলেন যে, তাঁকে বলা হয়েছিল তৃতীয় লিঙ্গ, রূপান্তরকামী, বিশেষভাবে সক্ষম এবং দুঃস্থদের জন্য এই টিকাকরণ। তাই তাঁদের সচেতন করতেই এই আমন্ত্রণ গ্রহণ করেন তিনি। প্রথমে নিজে টিকা নেন। কিন্তু তাঁর সন্দেহ জাগে মোবাইলে কোনও মেসেজ না আসায়। উদ্যোক্তাদের একজনকে প্রশ্ন করেন মেসেজের ব্যাপারে, সে বলে, 'ম্যাডাম আপনি বাড়ি যেতে যেতেই সার্টিফিকেট পেয়ে যাবেন।' এরপরেও সার্টিফিকেট না আসায় সাংসদ কয়েকজন ছেলেকে ওদের কাছে পাঠান। তখন ফের 'দুই-তিন দিনের মধ্যে সার্টিফিকেট পেয়ে যাবেন' বলে ঘোরানো হয়। তাতেই সন্দেহ হয় সাংসদ-অভিনেত্রীর। এমনকি কোউইন অ্যাপেও ভ্যাক্সিনেশন নথিভুক্ত হয়নি দেখে তখনই পুলিশের দ্বারস্থ হন মিমি।
অভিযোগ পেয়েই পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের নিচের তলায় ঢুঁ মেরে জানতে পারে যে, গত দশ দিন ধরে নিজেকে আইএএস অফিসার পরিচয় দিয়ে এই ভুয়ো চক্র চালাচ্ছিলেন দেবাঞ্জন দেব নামে ওই ব্যক্তি। এরপরই গ্রেপ্তার করা হয় ওই ব্যক্তিকে। আজ ধৃতের অফিসে হানা দিয়ে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র হাতে পেয়েছে পুলিশ। সবটাই খতিয়ে দেখছে পুরসভার ফরেন্সিক টিম।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন