যে শহরে, একসময় মেয়েরা সুরক্ষিত থাকতে পারত, আজ সেই শহরটাই যেন কেমন বদলে গিয়েছে। মেয়ে কলকাতায় আছে মানেই ভাল আছে, বাঙালিদের এই চিন্তায় আজ ঘুন ধরেছে। সবটাই যেন পাল্টে গিয়েছে। এই রাজ্যে ধর্ষণ প্রায় রোজের ঘটনা। কিন্তু, আর জি করের একটা মৃত্যু যেন সবকিছু কাঁপিয়ে দিল।
জুনিয়র ডাক্তারের মৃত্যুতে পশ্চিমবঙ্গের অনেক মানুষের শিরদাঁড়া বাইরে থেকে দেখা যাচ্ছে, এমনটাই ধারণা মীরের। তিনি প্রথম থেকেই সরব হয়েছেন নানা প্রতিবাদে। সমাজ মাধ্যমে তো বটেই, মিছিলে আন্দোলনে পা মিলিয়েছেন তিনি। কিন্তু, আজ শহর কলকাতায় যা ঘটে গিয়েছে, তারপর মেয়ের কাছে কী জবাব দেবেন, সেটাই বুঝে উঠতে পারছেন না। মেয়েকে দিল্লি পড়তে পাঠিয়ে বারবার বলে দিয়েছিলেন, সেটা কলকাতা শহর না, আর আজ...
মেয়েকে কী কী বলেছিলেন মীর?
মীর, যেন নিজের কাছে নিজেই জবাব চাইছেন। তাই তো মেয়ের কথা উল্লেখ করেই তিনি বলেন, আমার মেয়ে যখন তিনবছর আগে দিল্লি পড়তে গেল, আমি বারবার বলে দিয়েছিলাম, ওটা কিন্তু দিল্লি, কলকাতা না, রাত করে সিনেমা দেখতে যাবে না। এটাও বলেছিলাম, দিল্লি ওটা, রাত করে বাইরে আড্ডা মারবে না। কিন্তু, আজ আমার মেয়ে দিল্লি ফিরে যাওয়ার আগে, এটাই জিজ্ঞেস করল যে, এবার তুমি কী বলবে? আমি সত্যিই কোনও উত্তর পাইনি।
আজও, যারা এই ঘটনায় প্রতিবাদ করতে ভয় পাচ্ছেন, তাদের শিরদাঁড়া নিয়েও প্রশ্ন তুললেন মীর। যাদের মেরুদন্ড ছিল না, তাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলছেন... "এমন কিছু মানুষ যাদের মেরুদন্ড ছিল না, তাদের শিরদাঁড়া গুলো দেখা যাচ্ছে, এমনকি বাইরে থেকে দেখা যাচ্ছে। আর যাদের ছিল, যাদের প্রতি আমাদের বিশ্বাস ছিল, তাদের কোনও কারণবশত দেখা যাচ্ছে। আমার কিছু ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির বন্ধুর কাছে কেউ কেউ প্রশ্ন করছে কেন তাঁরা বিচারের জন্য বলছে না, কারণ তাঁদের টিকিটা অন্যত্র বাঁধা। এটা খুব স্বাভাবিক...।" কাদের ইঙ্গিত করলেন সেকথা পরিষ্কার।
রাস্তায় নেমেছেন সাধারণ মানুষ। তারকা থেকে আইনজীবী এমনকি নানা ফ্রেটার্নিটির মানুষ। পাশে এসে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রেও মানুষের এত সমস্যা? মীর বললেন, "কেউ তো সাধারণ মানুষকে তদন্ত করতে বলেননি। তাদের শুধু পাশে থাকতে বলেছে। একটা সময় মিটিং মিছিল শুনলেই আমরা রেগে যেতাম। কিন্তু এখন মানুষ সেই সহনশীলতার পরিচয় দিচ্ছেন।"
উল্লেখ্য, শুধু যে রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ এমনটা নয়, বরং মীর নিজের শো গপ্পো মীরের ঠেকের মাধ্যমেও প্রতিবাদ জানিয়েছেন। মেয়ের বাবা হিসেবে তো বটেই, কিন্তু একজন সাধারণ মানুষ হিসেবে তিনি স্তম্ভিত।