২০১৯ সালে বর্ষীয়ান অভিনেত্রী মৌসুমী চট্টোপাধ্যায় ও তাঁর স্বামী জয়ন্ত মুখোপাধ্যায়ের প্রথম সন্তান পায়েলকে হারিয়েছেন। পায়েল ডায়াবেটিসের সাথে দীর্ঘ লড়াইয়ের পরে ৪৫ বছর বয়সে মারা যান এবং মৃত্যুর আগে দু'বছর কোমায় ছিলেন। সে সময় তিনি ব্যবসায়ী ডিকি সিনহার সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। সম্প্রতি এক আলাপচারিতায় মৌসুমী জানান কীভাবে তার পরিবার এখনও এই ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারেনি।
প্রাক্তন জামাই ডিকি সিনহার সঙ্গে মনোমালিন্য নিয়েও মুখ খুলেছেন মৌসুমী। এর আগে এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে বিরোধের জেরে দুই পরিবারের মধ্যে মনোমালিন্য হয়। ২০১৮ সালে বম্বে হাইকোর্টে পায়েলের অভিভাবক হিসেবে নিয়োগের আর্জি জানিয়ে পিটিশন দাখিল করেন মৌসুমী। তাঁর অভিযোগ, ডিকি ও পায়েলের শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাঁর চিকিৎসার প্রয়োজনে অবহেলা করছেন। মৌসুমীর আরও অভিযোগ, পায়েলের শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাঁর চিকিৎসার বিল দিতে অস্বীকার করে এবং অসুস্থতার সময় মেয়ের সঙ্গে দেখা করতে বাধা দেয়।
Actors who died during shooting: শুটিং-এর মাঝেই সব শেষ, এই তারকাদে…
তিনি বলেন, 'আমার মনে হয় না আমার স্বামী পায়েলের মৃত্যুর শোক পুরোপুরি কাটিয়ে উঠতে পেরেছে। আমিও তাই। এই শূন্যতা আমাদের সারা জীবন থাকবে।" অসুস্থ মেয়ের সঙ্গে দেখা করতে আদালতে যাওয়ার অভিজ্ঞতাকে 'টর্চার' বলে বর্ণনা করে মৌসুমী জানান, কীভাবে এই অগ্নিপরীক্ষা তাঁর ছোট মেয়ে মেঘা চট্টোপাধ্যায় ও তাঁর স্বামীকেও প্রভাবিত করেছিল, যাঁরা পায়েলের শ্বশুরবাড়ির লোকজনের হাতে 'অপমানিত' হয়েছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
"আমরা এই দুঃখ কাটিয়ে উঠতে পারছি না। একটা বাচ্চা মারা গেলে সেটা কেউ কাটিয়ে উঠতে পারে না। বয়সের ব্যবধান আট বছর থাকায় মেঘার সঙ্গে পায়েল খুব মাতৃসুলভ আচরণ করতেন।" পায়েলের মৃত্যুর পর জয়ন্তের মানসিক অবস্থার কথা বলতে গিয়ে মৌসুমী আরও বলেন, "কখনও কখনও ও রাতে উঠে পায়েলের নাম ধরে চিৎকার করত। এই বিষয়গুলো আপনি শব্দ দিয়ে ব্যাখ্যা করতে পারবেন না।" তার পরিবারের স্বার্থে যে শক্তি জোগাড় করতে হয়েছিল সে সম্পর্কেও কথা বলেছিলেন। পরিবারের সকলকে তিনি সবকিছু মেনে নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন শুধু নয়, বরং বলেছিলেন যে সব ভুলে যেতে হবে, কারণ যা ঘটার ঘটে গিয়েছে।
Musician Passed Away: ক্যানসার কেড়ে নিল প্রাণ, প্রয়াত কিংবদন্তী ড্রামার 'বেকার'
মৌসুমী পায়েলের শ্বশুরবাড়ির লোকজন ও স্বামীর বিরুদ্ধে অবহেলার অভিযোগ আনলেও ডিকি অর্থাৎ পায়েলের স্বামী এর আগে অদ্ভুত অভিযোগ করেছিলেন। এক সাক্ষাৎকারে ডিকি বলেছিলেন, 'মৌসুমী তাঁর মেয়ে মারা যাওয়ার পর ওর মুখও দেখেনি। তিনি শেষকৃত্যে আসেননি। তিনিও মর্গে আসেননি।
মৌসুমী তা অস্বীকার করে জানান, পায়েলের মৃত্যুর পর তিনি মর্গে গিয়েছিলেন। হাসপাতালের বিল পরিশোধ না করায় পায়েলের মরদেহ মর্গে রাখা হয়েছিল বলেও জানান তিনি। তিনি বলেন, "আমি হাসপাতালে গিয়েছিলাম, তখন সে সেখানে ছিল না। হাসপাতালের বিল পরিশোধ না করায় তাকে মর্গে রাখা হয়। আমি সব ফালতু কথা সহ্য করেছি।"