'নগরকীর্তন' নিয়ে আলাপচারিতায় কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায় ও ঋত্বিক

ওকে যে সময়ে নিয়েছিলাম ওর শরীরের গড়ন, গলার টেক্সচার সবমিলিয়ে অ্যান্ড্রোজেনাস কিছু অভিব্যক্তি ছিল, সেইটাকে আমি ঘষেমেজে তৈরি করার চেষ্টা করেছি।

ওকে যে সময়ে নিয়েছিলাম ওর শরীরের গড়ন, গলার টেক্সচার সবমিলিয়ে অ্যান্ড্রোজেনাস কিছু অভিব্যক্তি ছিল, সেইটাকে আমি ঘষেমেজে তৈরি করার চেষ্টা করেছি।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

চরিত্রদের মধ্যে গল্প দেখেছেন কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায় এবং তা পর্দায় সত্যি করার চেষ্টা করেছেন ঋত্বিক চক্রবর্তী।

সমাজ কি মেনে নেয় সমপ্রেম? আমাদের সমাজ কীভাবে দেখে এই সম্পর্ক? না কি আইন করে ধারনায় বদল আনা সম্ভব? অথচ এই প্রেমের গল্পগুলো প্রত্যেকের গাড়ির কাচেই ভেসে ওঠে। সেই চরিত্রদের মধ্যেই গল্প খুঁজে পেয়েছেন কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায় এবং তা পর্দায় 'সত্যি' করার চেষ্টা করেছেন ঋত্বিক চক্রবর্তী। শীঘ্রই কলকাতায় মুক্তি পেতে চলেছে 'নগরকীর্তন'। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলার সঙ্গে আলাপচারিতায় এইসব প্রশ্নগুলোকে আরও একবার উসকে দিলেন পরিচালক ও অভিনেতা।

Advertisment

দর্শক নগরকীর্তন দেখার পর আপনার উদ্দেশ্য সফল হবে?

কৌশিক- অসম্ভব সৎ একটা প্রেমের গল্প এবং এর সঙ্গে জড়িয়ে থাকা আনন্দ-দুঃখগুলো মনে নিয়ে বেরোবেন দর্শকরা। আলদা কোনও প্রেমের গল্প তো বটেই, এমনকি নিজেদের কথাও ভুলে যাবেন কিছুক্ষণের জন্য। শুধু মধু আর পুঁটির কাহিনির মধ্যে বুঁদ হয়ে থাকবেন সবাই।

ঋত্বিক- সমালোচকরা সাধারণত দেখা দেন না। তবে এই ছবিটা জাতীয় স্তরে দেখানোর পর, কিছু মানুষ যোগাযোগ করেছেন। শহরের মানুষের প্রতিক্রিয়া না পেলে পুরস্কার অসম্পূর্ণ মনে হয়। এখন সেটার জন্যই অপেক্ষা করছি।

Advertisment

আপনি আগেও উষ্ণতার জন্য, আরেকটি প্রেমের গল্পের মতো ছবি বানিয়েছেন। তাহলে এই ছবির অভিনবত্ব কোথায়?

এই ছবিটা নতুন। কারণ, আগে কখনও এই মানুষগুলোর কথা আমি বলিনি। আমরা এই চরিত্রগুলোর মধ্যে গল্প দেখি না, গ্রাহ্য করিনা। গতে বাঁধা ধারণার বাইরে ভালবাসার অবকাশ আছে। সেগুলোও তো দেখাতে হবে। যুগ যুগ ধরে যদি নারী-পুরুষকে নিয়ে ছবি বানানো যায় তাহলে ওদের নিয়েও তিনটে ছবি বানানো হোক না।

publive-image নগরকীর্তন ছবির এক দৃশ্যে ঋত্বিক ও ঋদ্ধি।

ঋত্বিক, এই সময়ে ছবিটা কতটা প্রাসঙ্গিক বলে আপনার মনে হয়?

আইন করে সমাজ বদলানো যায় না। ছবিটা যখন তৈরি হয়েছিল তখন ৩৭৭ অবৈধ হয়নি। তবে আইন এলে নতুন করে চর্চা শুরু হয়, আলোচনা বাড়ে। নগরকীর্তন তো ভালবাসারও গল্প। ফলে তাঁদের দুঃখ-কষ্টে মন কাঁদলে, সেটা বদল। মানুষগুলোকে দেখলে হয় তো আর ঘুমের ভান করতে হবে না।

ঋদ্ধিকে নিয়ে কী বলবেন?

কৌশিক- ওকে যে সময়ে নিয়েছিলাম ওর শরীরের গড়ন, গলার টেক্সচার সবমিলিয়ে অ্যান্ড্রোজেনাস কিছু অভিব্যক্তি ছিল, সেইটাকে আমি ঘষেমেজে তৈরি করার চেষ্টা করেছি। আর একজন ১৮ বছরের ছেলের পরিণত মন, ঋদ্ধি ছাড়া পাওয়া মুশকিল ছিল। তাছাড়া ও তো জন্মের আগের থেকেই মঞ্চে।

আরও পড়ুন, সেলুলয়েডে ‘মহালয়া’, ফিরে দেখা বীরেন্দ্রকৃষ্ণ-মহানায়ক অধ্যায়

ঋত্বিক- একজন ভাল অভিনেতার না অনেকগুলো দায়িত্ব থাকে। সহ অভিনেতার সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলাটাও অত্যন্ত জরুরি। ঋদ্ধির মধ্যে এই গুণটা রয়েছে। ১৮ বছরের একটা ছেলের পক্ষে পুঁটি হয়ে ওঠার মধ্যে অনেকটা পথ পেরোতে হয়।

ছবিটা আপনার মধ্যে নতুন করে কি পরিবর্তন এনেছে?

কৌশিক- সিনেমার প্রতি ভালবাসা বাড়িয়েছে। বাঁচার প্রতি আরও লোভ বাড়িয়েছে। একেকটা গল্পে আমি একেকটা পথ পেরোই। ওদের কষ্টটাকে ভালবাসতে পারলাম, বলা যায়।

ঋত্বিক- অনেক ট্রান্সজেন্ডার মানুষের সঙ্গে পরিচয় হয়েছে। ছবিটা না হলে সেটা সম্ভব হত না। ওদের ব্যক্তিগত কিছু গল্প নাড়া দিয়েছে মননকে।

Ritwick Chakraborty tollywood koushik ganguly