Naseeruddin Shah on the open letter: দেশে ক্রমশই বেড়ে চলা গণপিটুনির ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে একটি খোলা চিঠি লেখেন দেশের সাংস্কৃতিক জগতের পুরোধারা। সেই চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে তাঁদের বিরুদ্ধে যে এফআইআর দায়ের করা হয়, প্রকাশ্যে তার বিরোধিতা করেছেন নাসিরুদ্দিন শাহ-সহ দেশের ১৮০ জন ফিল্ম ও বিনোদন জগতের ব্যক্তিত্বরা। সেই প্রসঙ্গে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে অভিনেতা-নাট্যকার নাসিরুদ্দিন শাহ জানান, এই প্রকাশ্য সমর্থন নিয়ে যত কড়া সমালোচনাই হোক না কেন, তাঁর কিছু যায় আসে না।
অক্টোবরের গোড়ার দিকে মোদীকে প্রকাশ্য চিঠি লিখে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার অভিযোগে এফআইআর দায়ের করা হয় রামচন্দ্র গুহ, আদুর গোপালাকৃষ্ণণ, অপর্ণা সেন-সহ ৪৯ জন ব্যক্তিত্বের বিরুদ্ধে। তারই বিরোধিতা করে এবং ওই ৪৯ জনের বক্তব্যকে সমর্থন জানিয়ে গত ৭ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে আরও একটি চিঠি লেখা হয়, যেখানে স্বাক্ষর করেন নাসিরুদ্দিন শাহ-সহ বিনোদন জগতের ১৮০ জন ব্যক্তিত্বরা। (প্রসঙ্গত গত ১০ অক্টোবর ওই অপর্ণা সেন-দের বিরুদ্ধে করা সুধীরকুমার ওঝার ওই মামলাটি ভিত্তিহীন বলে খারিজ হয়ে গিয়েছে)
আরও পড়ুন: মোদীকে চিঠি লেখা বিশিষ্টদের বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতার মামলা ক্লোজ, কাঠগড়ায় অভিযোগকারী
সম্প্রতি ইন্ডিয়া ফিল্ম প্রজেক্টের একটি ওপেন সেশনে নাসিরুদ্দিন শাহ-কে প্রশ্ন করা হয় যে প্রকাশ্যে সামাজিক-রাজনৈতিক ইস্যু নিয়ে মন্তব্য করার সাহস তিনি সঞ্চয় করেন কীভাবে? এই প্রশ্নের সূত্র ধরেই পদ্মভূষণে সম্মানিত অভিনেতার কাছে ছুঁড়ে দেওয়া হয় আরও একটি প্রশ্ন-- তাঁর এই মতামত প্রকাশের কারণে পেশাগত জগতে কি কোনও সমস্যায় পড়তে হয় অথবা বলিউডে তাঁর সহকর্মীদের সঙ্গে সম্পর্কে কোনও প্রভাব পড়ে?
''আমার সঙ্গে ইন্ডাস্ট্রির সম্পর্ক খুব একটা ঘনিষ্ঠ কোনওদিনই ছিল না এবং আমার জানা নেই এই বিষয়টি তেমন কোনও প্রভাব ফেলেছে কি না কারণ সব সময় যে খুব একটা ভালো কাজের প্রস্তাব আসে আমার কাছে তা নয়। কিন্তু আমার মনে হয় যে আমার যেটা বলা দরকার সেটা বলতে হবে। এবং আমি সেই বক্তব্য থেকে সরে যাব না। বহু মানুষের থেকে নানা ভাবে নিগৃহীত হয়েছি, যাদের কাছে এর চেয়ে ভালো কিছু করার কিছু নেই। এই সব আমাকে প্রভাবিত করে না। যেটা আমাকে খুব অশান্ত করে তোলে সেটা হল এই প্রকাশ্য ঘৃণার আবহাওয়া'', উত্তরে বলেন শাহ।
আরও পড়ুন: মোদীকে চিঠি লেখায় অপর্ণা সেন-রামচন্দ্র গুহদের বিরুদ্ধে এফআইআর
যে খোলা চিঠিতে তিনি স্বাক্ষর করেন, সেখানে লেখা ছিল-- ''এটাকে কখনও দেশদ্রোহিতা বলা যেতে পারে? আদালতের অপব্যবহার করে দেশের মানুষের কণ্ঠরোধ করার প্রচেষ্টা নয় কি?...আমরা সবাই, ভারতের সাংস্কৃতিক জগতের সদস্য়রা, যাঁদের বিবেক বর্তমান, তাঁরা এই হেনস্থার নিন্দা করি। শুধু তাই নয়, প্রধানমন্ত্রীকে লেখা আমাদের সহকর্মীদের ওই পূর্বতন চিঠির প্রত্য়েকটি শব্দকে পূর্ণ সমর্থন জানাই। সেই কারণেই এখানেও আমরা ওঁদের চিঠিটি আবারও তুলে ধরছি এবং শিক্ষা, সংস্কৃতি ও আইনী জগতের সঙ্গে যুক্ত সবার কাছেই সমর্থনের আবেদন জানাচ্ছি। এইভাবে প্রতিদিনই আমরা গণপিটুনির বিরুদ্ধে সরব হতে থাকব। মানুষের কণ্ঠরোধ করার বিরুদ্ধে সরব হতে থাকব। আদালতের অপব্যবহার করে দেশের মানুষকে হেনস্থা করার বিরুদ্ধে সরব হতে থাকব।''