আলোর উৎসবে যখন মেতেছে গোটা শহর। দিপাবলীর সেই আনন্দঘন মুহূর্তেই এল দুঃসংবাদ। নিঃশব্দেই চিরতরে পৃথিবী থেকে বিদায় নিলেন জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত পরিচালক পিনাকী চৌধুরী। সোমবার ভোর রাতে ৩.১৫ নাগাদ নিজের বাড়িতেই শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। যে দুঃসংবাদ প্রকাশ্যে আসতেই টলিপাড়ার অন্দরে শোকের ছায়া।
Advertisment
পরিবার সূত্রে খবর, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েই মৃত্যু হয়েছে ৮২ বছর বয়সি পরিচালকের। লিম্ফোমায় আক্রান্ত হয়ে মাস খানেক ধরেই অসুস্থ ছিলেন। তবে গত ১ মাস আগে থেকে গুরুতর শারীরিক অসুস্থতা ধরা পড়ে পিনাকি চৌধুরির। জানা গিয়েছে, বর্ষীয়ান পরিচালকের দেহ তাঁর বাসভবনেই থাকছে সোমবার। মঙ্গলবার ছেলে লন্ডন থেকে ফিরলে শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞানের ছাত্র হলেও শৈশব থেকেই দারুণ সংস্কৃতিমনস্ক ছিলেন পিনাকি। তবলা বাজাতেন। ওস্তাদ কেরামাতুল্লা খান থেকে শুরু করে পণ্ডিত রবি শঙ্করের সঙ্গেও তবলা বাজিয়েছেন তিনি। পরে অবশ্য প্রযোজক হিসেবে পা রাখেন সিনেদুনিয়ায়। আটের দশকে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, তনুজা, অমল পালেকরের মতো তাবড় তারকাদের নিয়ে বানান 'চেনা অচেনা'র মতো ছবি।
১৯৯৬ সালে মুক্তি পায় পিনাকি চৌধুরি প্রযোজিত 'সংঘাত'। ৩টি জাতীয় পুরস্কার পায় এই ছবি। এই সিনেমার জন্য সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার পান দোলন রায়। এরপর ২০০৭ সালে 'বালিগঞ্জ কোর্ট' সিনেমার জন্য আবারও জাতীয় পুরস্কারে সম্মানিত হন পিনাকী চৌধুরী। ২০১০ সালে শেষ ছবি পরিচালনা করেন তিনি। আরোহন। যা দেশ-বিদেশের একাধিক চলচ্চিত্র উৎসবে প্রশংসা কুড়িয়েছিল। তাছাড়াও আটের দশকে 'অতিক্রম', 'ওয়াজুদ', 'নরক', 'একবার ফির'-এর মতো বহু জনপ্রিয় টেলিফিল্মস তৈরি করেন। পিনাকী চৌধুরির মৃত্যুতে গভীর শোকপ্রকাশ করেন তাঁর 'বালিগঞ্জ কোর্ট' অভিনেতা ভাস্বর চট্টোপাধ্যায়।