এসভিএফ-হইচইয়ের ব্যানারে 'ডাইনি', 'বীরাঙ্গনা' আর 'চোর পুলিশ ডাকাত বাবু'-একসঙ্গে তিনটে রিলিজের ঘোষণা। নির্ঝর মিত্রর তো হ্যাটট্রিক...
হ্যাঁ, ওই আর কী। ২০২৩-এ শিকারপুর-এর পরই ডাইনি করেছি। গত বছর জুলাইয়ে ডাইনির শুটিং শেষ হয়েছে। ১৪ মার্চ রিলিজ করছে। শিকারপুরের পর হইচইয়ের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। ওদের গল্প পছন্দ হয়। তারপরই ডাইনির কাজ এগোয়। কাজের সূত্র ধরে একটা ভাল সম্পর্ক তৈরি হয়। আমার তো মনে হয় না ডাইনি যে ধরনের সিরিজ এসভিএফ ছাড়া কেউ সাহস করে এগিয়ে আসত। শ্রীকান্ত দার চোর পুলিশ ডাকাত বাবু-র গল্পটা পছন্দ হয়। দেড়-দুবছরের সম্পর্কে আমাকে যে সুযোগটা দিয়েছে সেটায় আমি সত্যিই খুব খুশি। ধীরে ধীরে একটার পর একটা কাজ হয়েছে। শুধু ঘোষণাটা একসঙ্গে হয়ে গেল।
ডাইনির পর বীরাঙ্গনা। নারীকেন্দ্রিক গল্প নিয়ে সিনেমা-সিরিজ তৈরির নেপথ্যে বিশেষ কোনও কারণ?
বীরাঙ্গনার আইডিয়াটা আমার কাছে হইচইয়ের তরফে আসে। আর এই কনসেপ্টটা কোয়েলের। তখন বিষয়টা স্ক্রিপ্টে পরিণত করা হয়। সেই সময়ই আমার মাথায় প্রথম যাঁর নামটা আসে সে সন্দীপ্তা। শিকারপুরের সময় থেকেই ওঁর সঙ্গে একটা বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক তৈরি হয়। ২৫ মার্চ থেকে শুরু হবে বীরাঙ্গনার শুটিং। আর নারীকেন্দ্রিক বিষয় নিয়ে ছবি বা সিরিজ তৈরি করার নেপথ্যে সেরকম কোনও কারণ নেই। এই ধরনের গল্প দর্শক দেখবে অন্য গল্প দেখবে না এমনটা তো নয়। তবে কাকতালীয়ভাবে আজকাল সিরিয়াল-সিনেমা ভীষণভাবে নারীকেন্দ্রিক। তবে ডাইনি বা বীরাঙ্গনা কিন্তু, সেই অর্থে নারীকেন্দ্রিক নয়। পুরুষতান্ত্রিক সমাজে মহিলাদের লড়াইয়ের গল্প। বীরাঙ্গনা যেমন পুরুষ শাসিত একটি থানায় একজন মহিলা অফিসারের অদম্য লড়াইয়ের গল্প। ডাইনিও সেইরকম কুসংস্কার প্রথার বিরুদ্ধে সেই একটা মেয়ের জীবন সংগ্রামের কাহিনি।
পুলিশ অফিসারের চরিত্রকে ফুটিয়ে তুলতে সন্দীপ্তাকে কোনও বিশেষ ট্রেনিং নিতে হচ্ছে?
হ্যাঁ, সে তো নিতেই হয়েছে। তাছাড়া এই গল্পটা অনেক রিসার্চ করে বানানো হয়েছে। একজন মহিলা পুলিশ অফিসারকে কী ভাবে পর্দায় ফুটিয়ে তুলব, কথা বলার ধরন, হাঁটাচলার কায়দা সবটা নিখুঁতভাবে জানার জন্য রিয়েল লাইফ অফিসারদের সঙ্গে কথাবার্তা বলেছি। তাঁদের চাকরির ধরনটা কেমন, বাড়ি থেকে বেরনো-ঢোকার সময়, তাঁদের পরিবার কেমন হয় এই ধরনের অনেক বিষয় আছে যেগুলো বীরাঙ্গনা তৈরির জন্য বিশদে জানতে হয়েছে। বেশ কিছু অ্যাকশন সিক্যোয়েন্স আছে। সেটার জন্য আলাদা ট্রেনিং নিতে হবে। সন্দীপ্তা আগে কখনও পুলিশের চরিত্রে অভিনয় করেনি, তাই চরিত্রের প্রয়োজনে যতটুকু যা প্রয়োজন সেটা করা হবে।
ডাইনিতেও তো মিমির যে লুক সেই অবতারে দর্শক বোধহয় আগে দেখেনি...
হ্যাঁ, মিমির এই লুকটা একদম আলাদা। ডাইনি একটা সারভাইভল ড্রামা। এই সিরিজে তিনটি জিনিস রয়েছে ডাইনি প্রথা, দুই বোনের গল্প আর তৃতীয়টা হচ্ছে 'সারভাইবল ড্রামা'। হিন্দিতে 'সারভাইভল ড্রামা' অনেক আছে। বাংলা সিনেমায় 'সারভাইভল ড্রামা' খুব একটা দেখা যায় না। বহু বছর আগে একটা সিনেমা হয়েছিল, যার নাম 'সিস্টার'।
'চোর পুলিশ ডাকাত বাবু' নামের মধ্যে কমেডির ছোঁয়া আছে। প্রথম বাংলা সিনেমা তাহলে 'ফুল অন কমেডি'?
না, পুরোপুরি কমেডি মুভি নয়। কমেডির সঙ্গে রয়েছে থ্রিলার, অ্যাকশন আর ড্রামা। সবমিলিয়ে 'চোর পুলিশ ডাকাত বাবু'-কে একটা মজার ছবি বলা যেতেই পারে। এই বছরের মাঝামাঝি শুটিং শুরুর পরিকল্পনা রয়েছে। আবীর শুভশ্রী অনির্বাণের সঙ্গে ডেটও ফাইনাল হয়ে গিয়েছে। চিন্তা শুধু একটাই, প্রচুর আউটডোর শুট রয়েছে আর ওই সময় বৃষ্টি হয়।
তিনটি ভিন্নস্বাদের ছবি তৈরি একজন পরিচালক হিসেবে দর্শকের পছন্দকে জাজমেন্ট করা?
না, আমি গল্পের উপর জোর দিই। পরিচালক হিসেবে আমার কাজ কী ভাবে গল্পটা দর্শকের সামনে পরিবেশন করব। যত ভালভাবে পরিবেশন করব দর্শক ততবেশি পছন্দ করবে।
সিরিজ বানাতে তো সিদ্ধহস্ত, প্রথমবার সিনেমা বানাতে কোনও বাড়তি টেনশন?
না, শুটিংয়ের ক্ষেত্রে কোনও চাপ নেই। তবে লেখার ক্ষেত্রে একটা বিরাট তারতম্য থাকে। একবার যদি স্ক্রিপ্ট তৈরি হয়ে যায় তাহলে আর কোনও চিন্তা থাকে না। বাকি শুটিংয়ের পদ্ধতি তো একই।
ইন্ডাস্ট্রিতে প্রতিনিয়ত প্রতিযোগীতা চলছে। প্রথম ছবি মুক্তির জন্য কোন সময়টা পছন্দ?
ওটা তো মূলত প্রযোজনা সংস্থার তরফেই ঠিক করা হয়। আর আমার প্রোডিউসরের উপর অগাধ আস্থা। আমি শুধু যত্ন নিয়ে সিনেমাটা তৈরি করব। এসভিএফ-এর ব্যানারে প্রথম ছবি তৈরি করার স্বপ্নপূরণ হতে চলেছে। এটাই আমার বিরাট পাওনা।