মার্কিন দেশে নির্মিত একটি বাংলা ছবিকে ঘিরে সম্প্রতি সোশাল মিডিয়ায় শুরু হয়েছে একটি তুমুল বিতর্ক। বাংলার এক চিত্রনাট্যকার ও পরিচালকের বিরুদ্ধেই মূলত অভিযোগ তবে প্রযোজক তাঁর ফেসবুক পোস্টে যা লিখেছেন তাতে অভিযোগের আঙুল উঠছে বাংলার কয়েকজন অভিনেতা-অভিনেত্রীর দিকেও। তবে পরিচালক সোশাল মিডিয়াতেই এই অভিযোগ অস্বীকার করে, তাঁর বক্তব্যটি লিখেছেন।
'আর একটা রূপকথা' ছবির প্রযোজক রূপক চট্টোপাধ্যায় একজন প্রবাসী বাঙালি। চিত্রনাট্যকার-অভিনেতা দেবপ্রতিম দাশগুপ্তকে তিনি একটি বাংলা ছবি বানাতে অনুরোধ করেন। এই নিয়ে এর আগে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা-তেও একটি বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল। 'আর একটা রূপকথা' ছবির সিংহভাগই শুটিং হয়েছে মার্কিন মুলুকে। প্রযোজকের বাড়িতেই উঠেছিল মূল শুটিং ইউনিট।
আরও পড়ুন: বেড়াতে গিয়ে মার্কিন দেশে বাংলা ছবি বানালেন দেবপ্রতিম
বাংলা ছোটপর্দা ও বড়পর্দার বহু জনপ্রিয় ও পরিচিত অভিনেতারা এই ছবিতে অভিনয় করেছেন-- ঋষি কৌশিক, রাহুল অরুণোদয় বন্দ্যোপাধ্যায়, গীতশ্রী রায়, অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়। এরই সঙ্গে ছিলেন কয়েকজন প্রবাসী বাঙালি এবং একজন মার্কিন অভিনেত্রী। ইউনিটের টেকনিশিয়ানরা ছিলেন মার্কিন দেশেরই। এই ছবির প্রিমিয়ার হয় গত ২৭ জুলাই নিউ ইয়র্কে। সেই সময় কলকাতা থেকে ছবির কয়েকজন অভিনেতা, পরিচালক নিজে ও আর এক অভিনেত্রী মার্কিন দেশে যান।
তখনই পরিচালক ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে জানিয়েছিলেন যে প্রযোজক এর পরে আরও একটি বাংলা ছবি প্রযোজনা করতে চান এবং সেখানে আরও বড় কাস্টিং থাকবে। দিন কয়েক আগে হঠাৎ প্রযোজক রূপক চট্টোপাধ্যায় সোশাল মিডিয়া পোস্ট মারফত অভিযোগ করেন যে পরিচালক তাঁকে প্রতারণা করেছেন। ছবি তৈরি হয়ে যাওয়ার পরেও কেন রিলিজ হচ্ছে না এখনও, সেই নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি। তাছাড়া অভিনেতা-অভিনেত্রীদের প্রসঙ্গেও তিনি বলেন যে তাঁরা ছবির শুটিং করতে বিদেশে গিয়ে ব্যক্তিগত ভ্রমণ করেছেন প্রযোজকের টাকায়। জুলাইতে ছবির প্রিমিয়ারের পরে এখনও কেন ছবি রিলিজ করল না, সেই প্রশ্ন তুলেছেন প্রযোজক।
আরও পড়ুন: কলকাতায় হল নেই, পিছিয়ে গেল ‘রাজলক্ষ্মী ও শ্রীকান্ত’-র মুক্তির তারিখ
রূপক চট্টোপাধ্যায়ের ওই পোস্টের পরিপ্রেক্ষিতে ওই সোশাল মিডিয়া পোস্টের নীচেই দেবপ্রতিম দাশগুপ্ত লেখেন যে ছবির এডিটিং শেষ হয়েছে এবং সেই ছবি তিনি প্রযোজককে হ্যান্ডওভার করে দিয়েছেন। তাই প্রতারণার প্রশ্ন উঠছে না। আর ছবির হল রিলিজের আগে সেন্সর ইত্যাদির কাজ আছে, সেই কাজের জন্যই মুক্তির দেরি হচ্ছে। পাশাপাশি তিনি লেখেন যে ছবি মুক্তির দায়িত্ব প্রযোজকের, পরিচালকের নয়। তবে রূপক চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য, উনি বিদেশে থাকেন, বাংলায় কাউকে চেনেন না। তাই পরিচালককেই অনুরোধ করেছিলেন ছবি মুক্তির ব্যাপারে দায়িত্ব নিতে। পরিচালক সেই সময় আশ্বাস দিলেও এখন কোনও উদ্যোগ নিচ্ছেন না, এমনটাই অভিযোগ তাঁর।
অন্যদিকে পরিচালকের বক্তব্য, প্রতারণার অভিযোগ সত্যি নয়। পুজোর সময় বহু বড় বাজেটের ছবি মুক্তি রয়েছে, তাই এই সময় হল পেতে অসুবিধা হতে পারে। সেই কারণেই তড়িঘড়ি রিলিজের উদ্যোগ নেননি তিনি। প্রযোজকের আরও অভিযোগ ছিল ছবির প্রচারে সংবাদমাধ্যমের কাছে প্রযোজকের নাম উল্লেখ করেননি পরিচালক। তবে পরিচালক সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।