অভিনেত্রী পল্লবী দে’র রহসমৃত্যু নিয়ে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ্যে। ক্রমশই ঘনীভূত হচ্ছে টেলিপাড়ার অভিনেত্রীর মৃত্যরহস্য। অভিনেত্রীর পরিবার সাগ্নিক চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ তুলে গড়ফা থানায় যে এফআইআর দায়ের করেছিল, সেই প্রেক্ষিতেই মঙ্গলবার সন্ধেয় তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশ। সোমবার থেকেই পল্লবীর সহবাস সঙ্গীকে লাগাতার জেরা করে চলেছে পুলিশ। সেই জেরার মুখেই উঠে এসেছে নানান চাঞ্চল্যকর তথ্য।
আগেভাগেই জানা গিয়েছিল যে, মৃত্যুর দিন সকালে সাগ্নিকের সঙ্গে বচসা বাঁধে পল্লবীর। কিন্তু কী নিয়ে বেঁধেছিল সেই অশান্তি? জেরার মুখে সেই তথ্য প্রকাশ করেন সাগ্নিক চক্রবর্তী। অভিনেত্রীর লিভ ইন পার্টনার পুলিশকে জানায়, সেদিন সকালে পল্লবী ফোন করে পরিচারিকাকে আসতে বলেন। তবে সে আসতে চায়নি। এই নিয়েই গোলমাল বাঁধে সাগ্নিকের সঙ্গে। শুধু তাই নয়, অভিনেত্রী যে মাঝেমধ্যে পরিচারিকার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করতেন, তা নিয়েও এদিন ঝগড়ার মাঝে প্রতিবাদ করেন সাগ্নিক। এরপরই সেই অশান্তি চরমে পৌঁছয়। সাগ্নিক ব্যালকনিতে সিগারেট খেতে গেলে ঘরের দরজা ভিতর থেকে বন্ধ করে দেন পল্লবী। সিগারেট খাওয়া শেষ করে ঘরে ঢুকতে গিয়ে তিনি টের পান দরজা ভিতর থেকে বন্ধ। এরপরই লকহোল দিয়ে সাগ্নিক দেখতে পান ফ্যানের সঙ্গে ঝুলছেন পল্লবী। তড়িঘড়ি কেয়ারটেকারকে ডেকে ঘর থেকে সেই ঝুলন্ত দেব উদ্ধার করে পল্লবীর মাকে ফোন করেন তিনি।
<আরও পড়ুন: পল্লবী মৃত্যু তদন্তে নয়া মোড়, গ্রেফতার অভিনেত্রীর লিভ-ইন-পার্টনার সাগ্নিক চক্রবর্তী>
প্রসঙ্গত, পুলিশি জেয়ার আরও যে কয়েকটা তথ্য উঠে এসেছে, তারমধ্যে আর্থিক লেনদেন আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। জানা গিয়েছে, তদন্তকারীরা দুজনের ব্যাঙ্কের নথিপত্র ও হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট খতিয়ে জানা গিয়েছে পল্লবীর অ্যাকাউন্ট থেকে মোটা অঙ্কের টাকা অন্য কোনও অ্যাকাউন্টে ট্রান্সফার হওয়ার প্রমাণ এখনও মেলেনি। এমনকী, টাকাপয়সা নিয়ে গোলমালের কোনও কথাও হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটে মেলেনি। এদিকে পল্লবীর পরিবারের অভিযোগ, নিউটাউনে ৮০ লক্ষ টাকার ফ্ল্যাট কিনতে সাগ্নিককে ৫৭ লক্ষ টাকা দিয়েছিলেন অভিনেত্রী, তবে জেরার মুখে সাগ্নিক জানান, ওই ফ্ল্যাট কেনার হয়েছে তাঁর বাবার দেওয়া ২৫ লক্ষ টাকায়। আর বাকিটা ইএমআই-তে।
তবে উল্লেখ্য, সাগ্নিক নিজের পেশা ও উপার্জনের উৎস নিয়ে ভুল তথ্য দিয়েছিলেন বলে দাবি তদন্তকারীদের। তাঁর বাবা সত্যিই ২৫ লক্ষ টাকা দিয়েছিলেন কিনা, তার প্রমাণ এখনও স্পষ্ট নয়। তবে পল্লবীর মোটা অঙ্কের ফিক্সড ডিপোজিট নমিনি যে সাগ্নিক ছিলেন, তার প্রমাণ মিলেছে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন