সিনেমার নাম 'ছাদ', ছবির সঙ্গে এই নামের সামঞ্জস্যটা ঠিক কোথায়?
এখানে 'ছাদ'-টাকে একটা রূপক হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। 'ছাদ' মানে একটা খোলা জায়গা। যেখানে গেলে আমরা স্বাধীনতার স্বাদ আস্বাদন করতে পারি। এই গল্পটা একটা মেয়েকে কেন্দ্র করে। সম্পর্কের গল্প অবলম্বনেই 'ছাদ' তৈরি হয়েছে। একটা মেয়ের যে প্রাথমিক ইচ্ছে-চাহিদাগুলো থাকে সেগুলোকেই এই সিনেমার মধ্যে খুব সুন্দরভাবে পরিবেশন করা হয়েছে। এই ছবিতে আমার চরিত্রের নাম মিত্রা। আর মিত্রার খুব পছন্দের জায়গা এই 'ছাদ'। ও একজন শিক্ষিকা, আঁকতে ভালবাসে, লেখালেখি করে। শ্বশুড়বাড়িতে একান্নবর্তী পরিবারে থাকে। সকলের মাঝে অনেক সময় দম বন্ধ পরিস্থিতি তৈরি হয়। তখন প্রাণ খুলে নিঃশ্বাস নেওয়ার জন্য 'ছাদ' -ই তাঁর প্রিয় জায়গা। সিনেমাটা দেখলে দর্শক আরও ভাল বুঝতে পারবে সিনেমার নামের সঙ্গে চিত্রনাট্যের সাদৃশ্যটা।
'ছাদ' মিত্রার সম্পর্কের সমীকরণের গল্প বলবে না তাঁর জীবনের বিশেষ কোনও বিষয়ে ফোকাস করবে?
এটা প্রাথমিকভাবে একটা সম্পর্কের গল্প। পরিবারের বিভিন্ন মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক কেমন, শ্বশুড়বাড়ির মানুষগুলোর থেকে কতটা সাপোর্ট পায় সেই সমস্ত কিছুই রয়েছে এই সিনেমাটায়। ওই ছাদে গিয়ে মিত্রার স্বাধীনতাকে খোঁজার যে চেষ্টা সেটাই গল্পের প্রেক্ষাপট। জানুয়ারিতে ছবিটা মুক্তি পাবে। গল্পটা এতটাই সুন্দর যে প্রত্যেকটা দর্শকের ভাল লাগবে বলে আমি আশাবাদী।
ব্যক্তিগত জীবনে 'ছাদ'-এর সঙ্গে এমন কোনও বিশেষ স্মৃতি জড়িয়ে আছে?
আমি ব্যক্তিগতভাবে খোলামেলা জায়গা ভীষণ ভালবাসি। তাই আমি ছাদে-এর গল্পটার সঙ্গে স্বাধীনতার স্বাদ খোঁজা, শান্তির জায়গা হিসেবে যে একটা অদ্ভুত অনুভূতি সেগুলো নিজের সঙ্গে খুব ভালভাবে কানেক্ট করতে পেরেছিলাম। তাই ইন্দ্রানী যখন আমাকে 'ছাদ' নামটা বলল, সঙ্গে সঙ্গে রাজি হয়ে গিয়েছি। প্রত্যেকের বাড়িতেই একটা ফেভারিট কর্ণার থাকে। আমার সেইরকম প্রিয় জায়গা বারান্দা, ছাদ, মাঠ।
পাওলি দাম আর মিত্রা কি তাহলে অনেকটা এক?
না, পাওলি আর মিত্রা একেবারেই এক নয়। কিছু কিছু জায়গায় আমি মিত্রার মধ্যে নিজেকে খুঁজে পেয়েছি। তবে সেটা হান্ড্রেড পার্সেন্ট নয়। ও যেভাবে নিজের জীবনকে এগিয়ে নিয়ে যায়। খোলা ছাদটা বারবার এই গল্পে যেভাবে ফিরে এসেছে স্ক্রিপ্ট পড়ে সেটা আমার খুব ভাল লেগেছিল। ছোটবেলায় যখন মামাবাড়ি যেতাম তখন মাঠে যেতাম। ছাদে উঠতাম। খোলা জায়গাটা বরাবরই আমার খুব প্রিয়। আমরা যারা শহরে বড় হয়েছি তাঁদের কাছে মনে হয় এই ধরনের খোলা জায়গাটা খুব প্রিয়।
নবাগতা পরিচালকের সঙ্গে কাজ করতে কতটা স্বচ্ছন্দ?
আমি অনেক নবাগত-নবাগতাদের সঙ্গে কাজ করেছি। স্বনামধন্য পরিচালকদের সঙ্গে যেমন কাজ করেছি, তেমনই নতুনদের সঙ্গেও কাজের খুব ভাল অভিজ্ঞতা। ওদের সঙ্গে কাজ করতে ভাল লাগে। নতুনদের ভাবনা চিন্তা, তাঁদের প্রেজেন্টেশনটা একটু অন্যরকম হয়। ইন্দ্রানীর প্রথম ছবি বলেই হয়ত এত সুন্দর ভাবনাটা ওঁর এসেছে। দ্বিতীয় বা তৃতীয় ছবির ক্ষেত্রে এইরকম কিছু ভাবত কিনা জানি না। নতুন পরিচালকদের একটা ফ্রেশ আইডিয়া থাকে সেটা আমার খুব ভাল লাগে। আমি শুধু স্ক্রিপ্টটা দেখি। কতবার পরিচালনার কাজ করেছে সেটা খুব একটা ভাবি না। চিত্রনাট্য আর চরিত্র, এটাই আমার কাছে ফার্স্ট প্রায়োরিটি।
নতুনদের সুযোগ দিলে দর্শক আরও ভালও ছবি উপহার পাবে?
অবশ্যই নতুনদের বেশি করে সুযোগ দেওয়া দরকার। ভাল কন্টেন্ট যদি কোনও নতুন পরিচালক নিয়ে আসেন তাহলে শিল্পী হিসেবে সেটা আমাদের গ্রহণ করা উচিত। তাঁদের ট্যালেন্টকে স্বাগত জানানোটা খুব দরকার।
বিশ্বের দরবারে বাংলা ছবি সমাদৃত হচ্ছে সেটা শিল্পী হিসেবে কতটা গর্বের?
কলকাতার ছবি যখন বিশ্বের দরবারে সমাদৃত হয় সেটা তো স্বাভাবিকভাবেই খুব গর্বের জায়গা। যে জায়গা থেকে কাজ শেখা সেখানের ছবির সাফল্য দেখলে তো ভাল লাগেই। তবে ভাষা নির্বিশেষে বলতে চাই, কোনও ছবি যদি আন্তর্জাতিক স্তরে সাকসেস পায় সেটা ভাল লাগার জায়গা। কোভিড পরিস্থিতে, একটা কঠিন সময়ে এই ছবির কাজ হয়েছে। তাই আরও অনেক বেশি আনন্দের।