শাহরুখ এর 'পাঠান' যখন ঝড় তুলছে গোটা দেশে তখনই বাংলার শিল্পীমহলের বেশ কিছু পরিচিত মুখ এই ছবি নিয়ে ব্যঙ্গও করছেন। বাংলায় বাংলা ছবিকে বাদ দিয়ে হিন্দি ছবি নিয়ে মাতামাতি মোটেই পছন্দ হচ্ছে না তাঁদের...এই নিয়েই সরব হয়েছেন অভিনেতা অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়।
পাঠান যে হলে চলবে সেই হলে চলবে না অন্য কোনও ছবি। একের পর এক বাংলা ছবির শো বাতিল। 'কাবেরী অন্তর্ধান' থেকে 'ডক্টর বক্সী' এমনকি 'প্রজাপতিও' রয়েছে সেই তালিকায়। সাহেব ভট্টাচার্যর গতকালের এক ভাইরাল ভিডিও নাড়িয়ে দিয়েছে বাংলা সিনে প্রেমীদের। যদিও তিনি বারবার বলেছিলেন, "শাহরুখ কিংবা পাঠান নিয়ে কোনও সমস্যা নেই। সমস্যা সিনেমা হলের মালিক এবং ছবির প্রযোজকদের নিয়ে"। সেই ঘটনা কান এড়ায়নি অনিন্দ্যরও। অভিনেতা সোজাসুজি পাঠান এর নাম না নিলেও বিদ্রুপের সুরে বললেন...
আরও পড়ুন < বয়কট গ্যাং-কে থাপ্পড় কষালো ‘পাঠান’! এদিকে সিনেমাহলে নেচেকুঁদে অস্থির শাহরুখ-ভক্তরা >
"পাড়ার দোকানে গিয়েছিলাম একটা কোকের বোতল কিনতে। অনেকদিন খাইনা কিন্তু দোকানদার বলল শুধু পেপসি পাওয়া যায়। আপনি জানেন না যেখানে পেপসি পাওয়া যায় সেখানে কোক পাওয়া যায় না? জিজ্ঞেস করলাম এটা কেন? বলে, কোম্পানি পলিসি। পেপসি তো আমি খাই না তাই আর খাওয়াও হল না। বাড়ি চলে এলাম"। দর্শকদের আর বুঝতে বাকি নেই কাকে ইঙ্গিত করেছেন অনিন্দ্য। 'পাঠানের' কারণে বাংলা ছবির একের পর এক শো বাতিল। হিন্দি ছবির দাপটে পিছিয়ে পড়ছে বাংলা ছবি। বড় তারকাদের বিগ বাজেট ছবিও পাঠানের সামনে ফিকে। বাঁকা চোখে তাকিয়েছেন ইন্ডাস্ট্রির অনেকেই।
শাহরুখ ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর, কলকাতায় তাঁর প্রতি মানুষের ভালবাসা দেখার মত। তাঁর এক ঝলক, মানুষের মনে আলোড়ন সৃষ্টি করতে পারে। শাহরুখ ভক্তদের বেশিরভাগ অনিন্দ্যকে উদ্দেশ্য করে বললেন, "সিনেমার কনটেন্ট ভাল হোক, মানুষ 'প্রজাপতি', 'টনিককে' আপন করে নিয়েছিল। আপনার 'বেলাশুরু' ও 'বেলাশেষেও' দারুণ পছন্দ করেছিলেন সকলে"। আবার কেউ বললেন, "পাঠান কবে রিলিজ করবে সেই তারিখ বহুদিন সকলের জানা। শাহরুখের একটা বিরাট ফ্যান ফলোয়িং আছে, এটা তো অস্বীকার করার কথা নয়। সেই বুঝে রিলিজ করলেই হত"। তাছাড়া, একথাও তাঁরা বাতলে দিলেন, "গত দুবছর সিনেমা হল লোকসানে রান করেছে। তাঁদের আর্থিক দিকটা বোঝাও দরকার। পাঠান মানুষ দেখতে চাইছেন, তাই শো বাড়ছে। সবসময় আবেগ নয়, মানুষের আর্থিক অনটনটাও দেখা দরকার"।
আরও পড়ুন < শাহরুখেই ভরসা ভাইজানের, ‘পাঠান’-এর স্ক্রিনেই দেখালেন নিজের ছবির পয়লা ঝলক >
এখানেই শেষ নয়, এর আগেও বহু বাংলা সিনেমার সঙ্গে অন্যায় হয়েছে বলেই দাবি তুলেছেন অনেকে। বক্তব্য একটাই, এর আগে অনীক দত্তের সিনেমা নন্দনে ঠাঁই পায়নি। প্রজাপতি নন্দনে জায়গা পায়নি, তখন কেন মুখে কুলুপ এঁটে বসেছিল টলিউডের সদস্যরা? আজ এত শোরগোল কেন? এটা শুধুই কি বাংলা সিনেমার প্রতি চেতনা নাকি বলিউড ছবির সাফল্য আজ এই কথা বলতে বাধ্য করেছে তাঁদের? অনিন্দ্যর পেপসি খাওয়ার সঙ্গে পাঠান দেখাকে মিলিয়ে দিয়েই তাঁরা বললেন, "পেপসি খাওয়ার লোক অনেক আছে। আপনাকে চিন্তা করতে হবে না"।