Advertisment
Presenting Partner
Desktop GIF

'মুম্বইয়ে এবার বাড়িগুলি কোয়ারান্টাইন করা হচ্ছে, খাবার জলও নেই অনেক বাড়িতে'

জনপ্রিয় গায়িকা মধুবন্তী বাগচী রয়েছেন মুম্বইতে। সেখানে বহু অঞ্চলে সাধারণ মানুষ কী কী দুর্দশার মধ্যে রয়েছেন জানালেন ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা-কে।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Bengali singer Madhubanti Bagchi spending a worried lockdown time in Mumbai

বাংলা ছবির জনপ্রিয় প্লেব্যাক গায়িকা মধুবন্তী বাগচী।

সারা দেশের মধ্যে যে সমস্ত রাজ্যে করোনার প্রকোপ সবচেয়ে বেশি, সেই তালিকায় উপরের দিকে রয়েছে মহারাষ্ট্র। মুম্বই শহরে বসে বলিউড তারকারা নানা মজার মজার ভিডিও পোস্ট করছেন যেমন সোশাল মিডিয়ায়, তেমনই অন্য দিকে বেশ কিছু অঞ্চলে সাধারণ মানুষ খাদ্য সঙ্কটে রয়েছেন। অসুখের সংক্রমণ আটকাতে মুম্বইতে এবার এক একটি মাল্টিস্টোরিড অ্যাপার্টমেন্টকে কোয়ারান্টাইন করা শুরু হয়েছে। 'মিতিনমাসি', 'সব ভুতুড়ে', 'গ্যাংস্টার'-সহ বহু জনপ্রিয় বাংলা ছবির গান গেয়েছেন মধুবন্তী বাগচী। 'উরি'-সব একাধিক বলিউড ছবির বিজিএম-এও গেয়েছেন। মুম্বইতে বসে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা-কে জানালেন কতটা সঙ্কটে এখন সাধারণ মুম্বইবাসী।

Advertisment

''যতটা সম্ভব চাল-ডাল-আলু-পেঁয়াজ স্টোর করা যায় করেছি কিন্তু অতিরিক্ত করিনি। আমার মনে হয়েছিল, অতিরিক্ত মজুত করা উচিত নয়। এখন পরিস্থিতি যেদিকে যাচ্ছে, একটু হলেও ভয় হচ্ছে'', বলেন মধুবন্তী, ''মাছ-মাংসের কথা ছেড়েই দাও, এখানে দুধও পাওয়া যাচ্ছে না। মুদির দোকান খোলা আছে ঠিকই কিন্তু অনেক কিছুই নেই। রান্নার তেল পাইনি আমি কয়েকদিন আগে গিয়ে।''

আরও পড়ুন: ঈশ্বর আপনার অন্তরেই, এখন ধর্মীয় স্থানে ভিড় করবেন না: রহমান

রোজ বাজারে না বেরোলেও সপ্তাহে একদিন অন্তত বেরোতেই হচ্ছে, জানালেন গায়িকা। তাঁর খাবারের অভ্যাসও রাতারাতি বদলে ফেলেছেন এই সঙ্কটের সময়। ''আমি ভাত খুব একটা খেতাম না। চিকেন স্যুপ বা ভেজটেবিল স্যুপ খেতাম। এখন ওসব আমার কাছে লাক্সারি। দুবেলা ভাত-ডাল-আলুভাজাই খেতে হচ্ছে। এখানে ডিমও পাওয়া যাচ্ছে না। কিন্তু সেই নিয়ে আমার সমস্যা নেই। এটা সঙ্কটের সময়, উৎসবের সময় নয়। কিন্তু ঠিক কতদিন এভাবে থাকতে হবে সেটা এখনও স্পষ্ট নয়, সেই কারণেই কিছুটা চিন্তা হচ্ছে'', মধুবন্তী জানান।

Bengali singer Madhubanti Bagchi spending a worried lockdown time in Mumbai ছবি: মধুবন্তীর ফেসবুক প্রোফাইল থেকে

মুম্বইয়ের ভারসোভা-তে, মধুবন্তী একাই থাকেন তাঁর প্রিয় পোষ্যকে নিয়ে। লকডাউনের ঠিক আগে কলকাতা থেকে সেখানে গিয়েছেন তাঁর মা, তাই এই সঙ্কটের সময়ে একটু হলেও নিশ্চিন্ত তিনি। কিন্তু নানা ধরনের দুশ্চিন্তা ও সংশয় দেখা দিচ্ছে। তার মধ্যে সবচেয়ে বড় ভয় এখন কোয়ারান্টাইন নিয়ে। মুম্বইয়ে সম্প্রতি শুরু হয়েছে গোটা অ্যাপার্টমেন্টকে কোয়ারান্টাইন করার প্রক্রিয়া।

''এখানে বেশ কিছু জায়গায় একটা কোনও ফ্ল্যাটে করোনা-আক্রান্ত কাউকে পেলে পুরো বিল্ডিংটাই কোয়ারান্টাইন করে দিচ্ছে। মানে গোটা বিল্ডিংয়ের লোকজনের রাস্তায় বেরনো বন্ধ। আমার বেশ কিছু পরিচিতের সঙ্গে এটা হয়েছে। খুব সমস্যায় রয়েছে তারা। কারণ কোয়ারান্টাইন করলেও ফুড সাপ্লাইয়ের কোনও ব্যবস্থা করা হচ্ছে না'', জানান মধুবন্তী, ''অনেক ফ্ল্যাটেই খাবার জল নেই, খাবার নেই... এখানে অনেকেই জল কিনে খান। আমিও তাই খেতাম। কিন্তু যাঁরা ২০-২৫ লিটারের মিনারেল ওয়াটার পৌঁছে দিতেন, তাঁরাও তো আসতে পারছেন না।''

Bengali singer Madhubanti Bagchi spending a worried lockdown time in Mumbai মধুবন্তীর পোষ্য, ভাল নাম খেজুর, ডাক নাম ঘুটু।

সাধারণ মুম্বইবাসী এই মুহূর্তে অত্যন্ত চিন্তায় চিন্তায় দিনযাপন করছেন। ধারাভি-র মতো বস্তি এলাকা যে শহরে রয়েছে, সেখানে সংক্রমণ বিদ্যুৎগতিতে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা অনেক অনেক বেশি। মহারাষ্ট্র সরকারের কাছে বিরাট চ্যালেঞ্জ এই সংক্রমণকে আর বাড়তে না দেওয়া। সেই কারণেই অনেক সময় কিছু কড়া সিদ্ধান্ত বা পদক্ষেপও নিতে হচ্ছে।

মুম্বইয়ে বসে তাই বেশ আশঙ্কায় রয়েছেন গায়িকা। যে বিল্ডিংয়ে তাঁর ফ্ল্যাট, সেই বিল্ডিংটিও কোয়ারান্টাইন করা হলে খাদ্য সঙ্কটে পড়তে পারেন তিনি। কারণ অতিরিক্ত খাবার মজুত করার বিরোধী ছিলেন মধুবন্তী প্রথম থেকেই আর এখন খুব প্রয়োজনীয় বেসিক খাবার-দাবারেও টান পড়েছে এলাকার দোকানগুলিতে। তবু এর মধ্যেই নিজেকে যথাসম্ভব ইতিবাচক রাখছেন। পোষ্যদের নিয়ে মজার কিছু ভিডিও করে সোশাল মিডিয়ায় শেয়ারও করেছেন।

মধুবন্তী জানালেন, তাঁরা নিজেরা মাছ-মাংস বর্জন করেছেন এই সময়। বেড়ালের জন্য অনেকটা মাছ মজুত করা ছিল তাই এতদিন চলেছে, এবার সেই ভাঁড়ারেও টান পড়ছে। চেষ্টা করছেন কোনও এক সূত্র থেকে বেড়ালের জন্য মাছ নিয়ে আসার। কলকাতায় বসে বলিউড তারকাদের বাড়ি ঝাঁট দেওয়া-ছবি আঁকার সোশাল মিডিয়া পোস্ট দেখে যদি কেউ ভাবেন যে মুম্বইয়ে কোয়ারান্টাইনড থাকা খুবই বিনোদনের ব্যাপার, মধুবন্তীর অভিজ্ঞতার কথা পড়ে আশা করি তাঁরা বুঝবেন, বিষয়টা একেবারেই তা নয়।

বাংলায় এখনও আক্রান্তের সংখ্যা ও মৃত্যুহার অনেক কম। সরকার-নির্দেশিত সমস্ত নিয়মাবলী না মেনে চললে, মুম্বইয়ের মতো এক একটা বিল্ডিং কোয়ারান্টাইনড হতে পারে এখানেও। তখন কিন্তু আরও বড় সঙ্কটে পড়বেন সবাই।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন

Music coronavirus
Advertisment