করোনাভাইরাস অতিমারী অনেক কিছুই বদলে দিয়েছে। মানুষের জীবনযাপনের ধরন বদলে গিয়েছে। যাকে বলা হচ্ছে নিউ নরমাল। পাশাপাশি আরও অনেক কিছুই উঠে আসছে আলাপ-আলোচনায় যা নিয়ে হয়তো এতদিন অনেকেই অনেক কিছু ভেবেছেন কিন্তু তেমন কিছু ঘটেনি। এই মুহূর্তে টলি ও টেলিপাড়ায় সঙ্ঘবদ্ধ হচ্ছেন ফিল্ম-টিভি-ওয়েব-বিজ্ঞাপন ইত্যাদি শুটিংয়ের সঙ্গে যুক্ত ডিজাইনার ও স্টাইলিস্টরা। সঙ্ঘবদ্ধতার কথা ভাবছেন কার্যনির্বাহী প্রযোজক বা ইপি-রাও।
এই প্রসঙ্গে সম্প্রতি সোশাল মিডিয়ায় একটি পোস্ট দেখা গিয়েছিল। অতিমারীর সময় যাতে শিল্পী ও টেকনিসিয়ানদের জীবন সুরক্ষিত রাখা যায় কাজের জায়গায় তার জন্য উদ্যোগী হয়েছে আর্টিস্টস ফোরাম ও সিনে ফেডারেশন। শিল্পী-টেকনিসিয়ানদের ইনসিওরেন্সের ব্যবস্থা করেছে এই দুটি সংগঠন। কিন্তু যাঁরা স্বাধীন পেশাদার এবং কাজ করেন টিভি ও ফিল্মজগতে তাঁদের অনেকেই ফোরাম বা ফেডারেশনের সদস্য নন।
আরও পড়ুন: জুন মাসে জমজমাট ‘হইচই’, এক নজরে সব রিলিজ
ছোটপর্দা-বড়পর্দা এবং ওয়েবের যে কোনও কাজে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে ডিজাইনার ও স্টাইলিস্টদের। অভিনেতা-অভিনেত্রীদের চরিত্র অনুযায়ী লুকসেটিং থেকে চরিত্র অনুযায়ী তাদের ওয়ার্ডরোব তৈরি করা ও প্রজেক্ট শেষ হওয়া পর্যন্ত তার কন্টিনিউটি বজায় রাখা-- এসবই নির্দিষ্ট প্রজেক্টের ডিজাইনার-স্টাইলিস্টদের কাজ। মেক-আপ শিল্পীদের গিল্ড রয়েছে, প্রোডাকশনে যাঁরা কাজ করেন তাঁদেরও গিল্ড রয়েছে। এই সব গিল্ডগুলিই পড়ছে ফেডারেশনের আওতায়।
কিন্তু সিনেমা-টিভি বা অন্যান্য শুটিংয়ের সঙ্গে জড়িত ডিজাইনার-ইপিদের কোনও গিল্ড বা ফোরাম নেই। তাই যখন অতিমারীর সময় কাজ শুরু করার কথা এসেছে, ইনসিওরেন্স নিয়ে কথাবার্তা হয়েছে, তখন প্রযোজনার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে থাকা ডিজাইনার-স্টাইলিস্টদের জীবন সুরক্ষার কথা কেউ ভাবেননি, এমন অভিযোগের সুর ধরা পড়েছে সাম্প্রতিক সোশাল মিডিয়া পোস্টে। একইভাবে কার্যনির্বাহী প্রযোজক, যাঁরা প্রযোজনার শুরু থেকে শেষ, সবকিছুর তত্ত্বাবধান করেন, তাঁদের ইনসিওরেন্স নিয়েও কোনও কথা ওঠেনি।
এই দুটি প্রসঙ্গই এসেছে ডিজাইনার অভিষেক রায়ের পোস্টে--
এই মুহূর্তে টলি ও টেলিপাড়ায় প্রায় ২৬ জন ডিজাইনার রয়েছেন যাঁরা নিয়মিত পর্দার প্রজেক্টে কাজ করেন এবং সঙ্ঘবদ্ধতার পথে বেশ কিছুটা অগ্রসর হয়েছেন তাঁরা। ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকবার আলোচনায় বসেছেন, ১৫ জুন আবারও আলোচনায় বসছেন তাঁরা, জানালেন ডিজাইনার পায়েল দত্ত-- ''কিছু বাই ল বা পয়েন্ট রয়েছে, সেগুলো নিয়ে আমাদের আরও কিছু আলোচনার প্রয়োজন। আমরা হয়তো কাজ করতে গেলে নিজের মতো কিছুটা কাস্টমাইজ করে নিই। কিন্তু এতদিন যে বিষয়গুলোতে ডিপ্রাইভড হয়েছি, সেগুলো যাতে আর না হয়, তার জন্যই আমাদের সঙ্ঘবদ্ধ হওয়া প্রয়োজন। আজ আমরা তাই আবার বসছি। আর ইপি-দের ক্ষেত্রে ওদের আলাদা করে সংগঠন তৈরি করতে হবে কারণ ওরা প্রোডিউসারের আন্ডারে কাজ করে। আমরা সেই জায়গায় স্বাধীন পেশাদার হিসেবে কাজ করি।''
আরও পড়ুন: স্বজন পোষণের গ্ল্যামার জগতে একাই নিজের জায়গা করে নিয়েছিলেন সুশান্ত
একদিকে যখন আলাপ আলোচনা চলছে, অন্যদিকে কিন্তু তখন টেলিপাড়ায় ধারাবাহিকের শুটিংয়ের কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। পায়েল জানালেন, সংগঠন তৈরি হয়নি বলে যে ডিজাইনার-স্টাইলিস্টরা কাজ করছেন না, তা একেবারেই নয়। এই মুহূর্তে শুধুই ধারাবাহিকের শুটিং শুরু হয়েছে। চলতি প্রজেক্টগুলিতে যে সমস্ত ডিজাইনার-স্টাইলিস্টরা যুক্ত ছিলেন তাঁরা কিন্তু কাজ শুরু করেছেন, এমনটাই জানালেন তিনি। ''আপাতত এই ক্ষেত্রে একটা সুবিধে রয়েছে যে ফ্লোরে না গেলেও চলছে কিন্তু আমাদের যা কাজ, অর্থাৎ কস্টিউমগুলো রেডি করা, তার জন্য অনেক জায়গায় আমাদের দৌড়তে হয়। তাই এমনটা নয় যে শুটিং ফ্লোরে যাচ্ছি না বলে কোনও ঝুঁকি নেই'', বলেন পায়েল।