করোনা রুখতে লকডাউন দেশে বন্ধ হয়েছে সিনেমাহল, বন্ধ হয়েছে ছবি রিলিজ৷ স্থগিত একাধিক ফিল্মের শুটিং। টালমাটাল এই প্রেক্ষাপটে একের পর এক বলিউডি ছবির রিলিজ অনলাইনে হলে ভবিষ্যতে সংকটের মুখে পড়বে সিনেমাহল, সেই আশংকা নিয়েই তৈরি হয়েছে তরজা।
বৃহস্পতিবার সুজিত সরকার পরিচালিত অমিতাভ-আয়ুষ্মান অভিনীত গুলাবো সিতাবোর রিলিজ অ্যামাজন প্রাইম ভিডিওতে স্ট্রিমিং হবে এই খবর প্রকাশ্য আসতে নড়েচড়ে বসে দেশের অন্যতম মাল্টিপ্লেক্স সংস্থারা৷ এদিকে গুলাবোর পথে হেঁটে শুক্রবারই বিদ্যা বালান অভিনীত শকুন্তলা দেবীর রিলিজও অ্যামাজন প্রাইম ভিডিতে হবে এমনটাই জানান হয়েছে।
তবে এরপরই নিজেদের ক্ষোভ উগরে দিয়েছে পিভিআর এবং আইনক্সের মতো হল মালিকপক্ষরা।আইনক্স কর্তৃপক্ষ৷ তাঁদের তরফে এই ঘটনাটিকে "গভীর চিন্তার এবং বিপর্যয়"-এর চিত্র হিসেবেই ব্যাখা করেছেন। তাঁরা বলেন, "আইনক্স এই ঘটনায় অত্যন্ত অখুশি এবং হতাশ হয়েছে। চলচ্চিত্র নির্মাতা এবং সিনেমাহলদের মধ্যে একটা নিজস্ব ব্যবসায়ীক সম্পর্কও থাকে। যেখানে উভয়পক্ষই উপকৃত হয়। দীর্ঘদিন ধরে এটাই হয়ে এসেছে। আর আজ যখন একে ওপরের পাশে দাঁড়িয়ে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করার সময় তখন অপর পক্ষ সেই সম্পর্ক থেকে সড়ে গেলেন।" একই সুর শোনা যায় পিভিআর সংস্থার গলাতেও।
আরও পড়ুন, গুলাবো সিতাবো-র পর শকুন্তলা দেবী, লকডাউনে দ্বিতীয় ডিজিটাল রিলিজ
এরপরই পরিস্থিতি সামাল দিত্র মাঠে নামে প্রোডিউসার্স গিল্ড অফ ইন্ডিয়া। শুক্রবার তাঁরা একটি অফিসিয়াল বিবৃতি দিয়ে বলেন, "আমরা একটা কঠোর সময়ের মধ্য দিয়ে চলেছি। যা আগে কখনও হয়নি। স্বাস্থ্য এবং অর্থনৈতিক দিকে এক চরম অস্থির পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
এই সময় যাদেরকে নিয়ে আমাদের এই ইন্ডাস্ট্রি সেই প্রোডিউসার্স, ডিস্ট্রিবিউটার্স, এক্সিবিটর্স, দৈনিক মজুরিরত কর্মচারী এবং টেকনিশিয়ান সকলের পাশেই সকলকে দাঁড়াতে হবে মানবিকতার সঙ্গে। এই পরিস্থিতিতে বিশাল চাপে রয়েছেন প্রোডিউসাররা। বিপুল অংকের টাকা ছবিতে আটকে রয়েছে অনির্দিষ্টকালের জন্য৷ আর এটি একমাত্র ক্ষেত্র যা পুনরায় খুলে দেওয়ার আশা রয়েছে এখনও। প্রতিটি রাজ্যে সংক্রমণের অবস্থা বুঝে সিনেমাহল খোলার নির্দেশ দেবে রাজ্য সরকার। কিন্তু এখন যা পরিস্থিতি সেখানে এই অনলাইন রিলিজ বাধ্য হয়েই করতে হচ্ছে প্রোডিউসারদের। তা না হলে দেনার দায়ে আটকা পড়বেন তারা।
আরও পড়ুন, স্টার জলসা-র পর্দায় ফিরছে যিশু সেনগুপ্তের ‘মহাপ্রভু’, আগামী সপ্তাহেই
তবে সিনেমাহল খোলা নিয়ে এখনও সন্দিহান গিল্ডও। বিবৃতিতে বলেন যে, ভারতে সিনেমাহল খুললেও বিশ্বব্যাপী করোনার যা দাপট সেখানে বিদেশের মাল্টিপ্লেক্স কবে খুলবে তা জানা নেই কারুর। প্রসঙ্গত হিন্দি ছবির একটি ভাল মুনাফাই আসে বিদেশের বাজার থেকে। ইতিমধ্যেই ব্যবসা করা সেসব দেশে ছবির প্রদর্শন বন্ধ হওয়ায় লোকসানের মুখে পড়েছেন প্রোডিউসার্সরা। এমনকী সিনেমাহল খুললেও প্রাথমিকভাবে মেনে চলা হবে সামাজিক দূরত্বের নিয়ম অর্থাৎ সব দর্শকাসনের টিকিট বিক্রি করা যাবে না। সব মিলিয়ে এই মুহুর্তে তাই অনলাইন রিলিজকেই আপাতভাবে বেছে নিয়েছেন প্রোডিউসার্সরা।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন