অবশেষে কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে ছবি করা গেল। অভিজ্ঞতা কেমন?
প্রসেনজিৎ- কৌশিক তো ক্লাসের ফার্স্ট বয়। ছবি করলেই জাতীয় পুরস্কার। ওর সঙ্গে অনেকদিন ধরেই কাজ করার ইচ্ছে ছিল, কিন্তু হয়ে উঠছিল না। আর কৌশিক সবসময়ে বলে ঋতুদার কথা তো ছেড়েই দাও, সৃজিতও তোমাকে দিয়ে যেসব চরিত্রে অভিনয় করিয়ে নিয়েছে, তার পর তোমাকে দিয়ে কাজ করাতে হলে তেমন ওজনদার চিত্রনাট্য ভাবতে হবে। এরপরেই দৃষ্টিকোণ। তারপর আসছে কিশোর কুমার জুনিয়র। পরে হয়তো আরও দুটো ছবি করব। (হেসে) কথায় বলে না, গাঁট বাঁধা হল তো রয়েই গেল, তেমনই আর কি!
ছবিতে জিয়নের একটা চোখ নেই, অন্য কোনও নায়ক চরিত্রটা করতে রাজি হতেন কিনা তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে!
প্রসেনজিৎ- কিন্তু ওই চোখটাই আমার কাছে একটা বড় কিক। অভিনেতারা চোখ দিয়েই কথা বলে। আমি কৌশিককে তো মজা করে বলি, তোরা যাকে গুরু বলিস (ঋতুপর্ণ), সে একটা ছবিতে আমাকে শুধু চোখ দুটোই দিয়েছিল। আর তুই সব দিলি, কিন্তু চোখটাই কেড়ে নিলি। এটা খুব ইন্টারেস্টিং যে একটা ছবি, যার বিষয় প্রেম, সেখানে একটা মানুষের চোখ নেই। যে প্রেমে পড়ছে সেও দেখছে ওইরকম ক্ষতবিক্ষত একটা চোখ। তারপরেও সে ভালবাসছে। মানে চোখটাই ভালবাসার জন্য সব নয়। সেইজন্যই ছবির নাম দৃষ্টিকোণ।
চরিত্রটা কতটা চ্যালেঞ্জিং ছিল?
প্রসেনজিৎ- সাহসের পরিচয় আমি আগেও দিয়েছি। মনের মানুষের কথা ছেড়েই দিলাম। তারপর অনেকেই বলেছিল বুম্বাকে হিরোর রোলে আর কেউ নেবে না। কিংবা ধরো জাতিস্মর। সে ছবির কুশল হাজরার চেহারার মতো বিশ্রী চেহারা তো কোন হিরোর হতে পারেনা। এই মজাটাই ছবিগুলোতে অভিনয়ের জন্য আমাকে রাজি করায়। তবে দায়িত্ব নিয়ে বলছি, দৃষ্টিকোণের দর্শক জিয়নের প্রেমে পড়বে।
আরও পড়ুন, EXCLUSIVE: অনুপমের দৃষ্টিকোণে গানের সাতকাহন (ভিডিও interview)
এতক্ষণ চোখে কিছু পরে থেকে অভিনয় করার ব্যাপারটা নিশ্চয়ই খুব কষ্টকর ছিল?
প্রসেনজিৎ- অন্ধ হয়ে যেতে পারতাম। ডাক্তার সেরকমই বলেছিলেন। বলেছিলেন বাড়াবাড়ি না করতে। আসলে ওটা তো নরম্যাল লেন্স নয়, শুধু লেন্স হলে তত অসুবিধে হত না। এই লেন্সটা বিদেশ থেকে আনানো হয়েছিল। তার ওপর সেটা নিয়েও এক্সপেরিমেন্ট করা হয়েছিল। কৌশিক বুঝতে পারত যে ওটা পরে আমার মাথা ঘুরত।
আপনার কি এইধরনের চ্যালেঞ্জিং চরিত্রে অভিনয় করতে ভালো লাগে?
প্রসেনজিৎ- হ্যাঁ! ভাল তো লাগেই। তবে কষ্টও হয়। আবার দর্শকদের রিঅ্যাকশনে সবটা ভুলে যাই। তখন কষ্টটা কষ্ট মনে হয় না। কিছু জিনিস পেতে গেলে কিছু তো ছাড়তেই হবে।
দৃষ্টিকোণ কেন দেখবে দর্শক?
প্রসেনজিৎ- উত্তম-সুচিত্রার সময়কার ছবিতে প্রেমে একটা টানাপোড়েন থাকত। ওই টানাপোড়েনটা দর্শক এখন আবার চাইছেন। এই ছবিটাতে অনেক লেয়ারস আছে। আর সবশেষে এটা কৌশিক গাঙ্গুলির ছবি।
পরিচালক হিসেবে কৌশিক গাঙ্গুলি আর সহঅভিনেত্রী হিসেবে ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তকে পাওয়া! এ ছাড়া দৃষ্টিকোণকে বেছে নেওয়ার আর কোনও কারণ ছিল কি?
প্রসেনজিৎ-(একটু ভেবে) চিত্রনাট্য। আমার চরিত্র। তবে হ্যাঁ, কৌশিক গাঙ্গুলি একটা বড় কারণ। আর গল্পের মধ্যে যে স্ট্রেংথটা আছে সেটাও।
আরও পড়ুন, সিনেমা এবং: শাশ্বত চট্টোপাধ্য়ায়ের সঙ্গে কিছুক্ষণ
আপনারা, মানে আপনি আর ঋতুপর্ণা কি বাছাই ছবি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন?
প্রসেনজিৎ- একেবারেই! আমি এমনিতেই ভেবেচিন্তেই ছবি করি। ঋতুর সঙ্গে এটা ৪৮ নম্বর ছবি। এতদিন আমরা ওয়ান ডে ম্যাচ খেলেছি। এখন আমি-ঋতু পাঁচ দিনের ম্যাচে নেমেছি। আমাদের দুজনের ৫০ নম্বর ছবি আসতে হয়তো অনেকটাই সময় নেবে।
ছবিতে অনুপম রায়ের গান তো হিট?
প্রসেনজিৎ- গান আসাধারণ। আমার আর অনুপমের কেমিস্ট্রি সেই আমাকে আমার মতো থাকতে দাও থেকে শুরু হয়েছে। আর এবারের লক্ষ্মীটি অবধি ম্যাজিকটা রয়েছে, অনুপম এ ম্যাজিকটা তৈরি করতে পারে।
ছবিটা কার দৃষ্টিকোণ থেকে?
প্রসেনজিৎ- ছবিটা অনেকের দৃষ্টিকোণ থেকে। প্রত্যেকের কাছে প্রেমের আলাদা পার্সপেকটিভ রয়েছে। এখানেও আলাদা আলাদা তিনটে মানুষের দৃষ্টিকোণ দেখা যাবে।
আরও পড়ুন, প্রসেনজিৎ-ঋতুপর্ণা কি এবার গিনেস বুকে?