বাংলা টেলিভিশনের ইতিহাসে বহু বায়োপিকধর্মী ধারাবাহিক এসেছে এবং আসবেও ভবিষ্যতে। কিন্তু নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু বাঙালির এমন এক আবেগ যে তাঁর বায়োপিকে অভিনয়ের সুযোগ যে কোনও অভিনেতা-অভিনেত্রীর কাছেই অত্যন্ত বিশেষ অভিজ্ঞতা। অভিনেত্রী প্রিয়ম চক্রবর্তী সম্প্রতি নেতাজি ধারাবাহিকে এসেছেন বিপ্লবী কল্যাণী দাসের ভূমিকায়।
দিন কয়েক আগেই শুরু হয়ে গিয়েছে কল্যাণী দাস, বীণা দাস ও তাঁদের ছাত্রী বাহিনী-র অধ্যায়টি। তিরিশের দশকে যখন বহু পরিবারেই মেয়েরা পর্দানশীন জীবনযাপন করতেন, সেই সময়ে অসমসাহসী কয়েকজন বাঙালি তরুণী স্বাধীনতা আন্দোলনে স্বতঃস্ফূর্তভাবে এগিয়ে আসেন। তেমনই এক সাহসিনী কল্যাণী দাস।
আরও পড়ুন: অনুর জীবনে নতুন মানুষ, ধারাবাহিকে এলেন রাজা
এই চরিত্রেই এসেছেন প্রিয়ম চক্রবর্তী। 'মহাপীঠ তারাপীঠ'-এ চন্দ্রলতার ভূমিকায় অভিনয় শুরু করার কিছুদিন পরেই ডাক এসেছিল নেতাজি ধারাবাহিকে। ''আমি প্রিপারেশন নেওয়ার সময়ই পাইনি। হঠাৎ করেই চরিত্রটা আসে। ওরা বোধহয় আগে থেকে ঠিক করে রেখেছিল কিন্তু আমি জানতাম না'', বলেন প্রিয়ম, ''তখন আমি 'মহাপীঠ তারাপীঠ'-এ সবে ঢুকেছি। কিন্তু 'নেতাজি'-তে অভিনয়ের সুযোগটা ছাড়তে চাইছিলাম না। সুবিধে হল যে দুটোই একই প্রোডাকশন হাউসের। তাই ওরা আমাকে 'নেতাজি'-র জন্য ফ্রি করে দিল। যেদিন ঠিক হয়েছে তার পরের দিন ভোরবেলায় কল টাইম ছিল। প্রথমে লুকসেট হল। তার পরে ঘণ্টা তিন-চারেক লাঠিখেলা প্র্যাকটিস করেই শটে চলে গেলাম।''
প্রিয়ম জানালেন, শুটিং শুরু হওয়ার পরে দুজন তাঁকে চরিত্রটা নিয়ে গবেষণায় সাহায্য করেছেন। তার মধ্যে একজন নেতাজি চরিত্রের অভিনেতা অভিষেক বসু স্বয়ং যিনি এই ধারাবাহিকের জন্য বহু মাস ধরে প্রচুর পড়াশোনা করেছেন নেতাজি ও তাঁর সমসাময়িক স্বাধীনতা সংগ্রামীদের সম্পর্কে। আর একজন সুরিন্দর ফিল্মস-এরই কর্মী নৈঋতা, যিনি বিপ্লবী কল্যাণী দাসকে নিয়ে বিশদে গবেষণা করেছেন।
বিপ্লবী কল্যাণী দাস, বীনা দাস ও কমলা দাশুগপ্ত ওই সময়ে বিপ্লবী মহিলাদের সংগঠন, 'ছাত্রী বাহিনী'-র পুরোধা ছিলেন। কল্যাণী ও বীনা ছিলেন সহোদরা, ব্রাহ্ম শিক্ষক বেণীমাধব দাসের দুই মেধাবী কন্যা। কল্যাণী ও বীনার মা সরলা দেবীও সমাজসেবামূলক কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ১৯৩০ সালে তৎকালীন গভর্নর-জেনারেল, লর্ড ডালহৌসির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিলের পুরোভাগে ছিলেন কল্যাণী দাস। ১৯৩২ সালে তিনি গ্রেফতার হন।
এমন একটি ঐতিহাসিক চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ পেয়ে তাই অত্যন্ত গর্বিত প্রিয়ম।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন