সত্যজিৎ রায় যেভাবে গল্প লিখতেন, কিংবা সেই গল্পকে পর্দায় ফুটিয়ে তুলতেন, সেটা অন্য কেউ পারত না। একারণেই তাঁর ছোঁয়ায় একেকটি সিনেমা হয়ে উঠেছে কালজয়ী। সেই প্রত্যেকটা ছবি বারংবার আলোচনায় উঠে এসেছে। সেগুলি নিয়ে চর্চাও হয়েছে। এবং, পরপর অনেকগুলো প্রজন্ম সেই ছবি দেখে একইভাবে মুগ্ধ হয়েছে। ভারতের সিনেমাকে পাল্টানোর ক্ষমতা ছিল তাঁর। একদিকে যেমন গুপি গাইন বাঘা বাইন তৈরি করেছিলেন, ঠিক সেরকমই তাঁর অনবদ্য সৃষ্টি হীরক রাজার দেশে নিয়েও কম আলোচনা নেই।
হীরক রাজার দেশে এমন একটি ছবি, যেটি তৎকালীন সময়ে যা বর্ণনা করেছিল, তা রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে বর্ণনা করে। তাৎক্ষণিক সময়েও রাজনীতির সঙ্গে বেশ মিল খায় এই সিনেমা। বহু সিনেবিশেষজ্ঞরা বলেছেন, সত্যজিৎ রায় সময়ের থেকে অনেকটা এগিয়ে ছিলেন। এবং একবার এই হীরক রাজার দেশে নিয়েই সত্যজিৎ রায়ের ক্রিয়েশনের নানা ব্যাখ্যা করেছিলেন রবি ঘোষ। রবি বাবু তাঁর কাল্ট ছবির কান্ডারি। এবং অনেক কাছ থেকে মিস্টার রায়কে তিনি পারফেকশনের সঙ্গে নির্দেশনা দিতে দেখেছেন।
Rabi Ghosh: গুপি-বাঘার গল্প পুরোটাই ফ্যান্টাসি? সত্যজিৎ রায়কে নিয়ে অজা…
হীরক রাজার দেশে গুপি গাইন - বাঘা বাইনের মত সফল না কেন?
রবি ঘোষ বলেছিলেন, বক্স অফিস খেয়াল করলে অনেকেই বলবে এই ছবি গুপি বাঘার মত সফল না। কিন্তু, সিনেমাটোগ্রাফি দেখলে বোঝা যাবে হীরক রাজা অনেকটাই ম্যাচিওর ছবি। আমার সারাজীবন মনে থাকবে হীরক রাজার দেশের বাঘের সিকোয়েন্স। হঠাৎ করেই বলা হল, আমায় নাকি বাঘের সঙ্গে কাজ করতে হবে। আমি তো অবাক। সামনা সামনি আমি কোনোদিন বাঘ দেখিনি। কিন্তু আমি করলাম। শট দিলাম। যদিও সেটা খুব প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত বাঘ। আমি তাঁর ট্রেনারকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, এ সব জানে তো? আমায় উল্টে উনি বলল যে বাঘ তো স্যার। নয়তো শান্ত থাকবে, নয়তো। ভাবুন...
হীরক রাজার দেশে সত্যিই ছোটদের ছবি?
অনেকেই বলেন হীরক রাজার দেশে ছোটদের ছবি। যেটা না! ওটা নামে ছোটদের ছবি কিন্তু, ইন্টেলেকচুয়াল লোকেদের জন্য বানানো। বড়দের বোঝার মতো ছবি। তবে, আমার চোখে দেখা সত্যজিৎ রায়ের সবথেকে ম্যাচিওর ছবি অরণ্যের দিন রাত্রি। আমি ওই ছবিতে কাজ করেছি। আমি দেখেছি মানিকদা কিভাবে ছবিটি নিয়ে ভেবেছিলেন।