তিনি সেলুলয়েড মায়েস্ত্রো। তাঁর হাতের ছোঁয়ায় একের পর এক ছবি হয়ে উঠেছে কাল্ট ক্লাসিক। শুধু তাই নয়। তিনি এমন এক মানুষ ছিলেন যিনি অভিনেতাদের সুযোগ দিতেন নিজের মতো করে অভিনয় করার। স্টেজ আর্টিস্ট এবং সিনেমার শিল্পীদের মধ্যে পার্থক্যটা বুঝতে পারতেন। রবি ঘোষ, একবার বর্ণনা করেছিলেন মানিক-দা পরিচালক হিসেবে কেমন ছিলেন। ভারতীয় ছবির এক্কেবারে অন্যরকম অভিনেতা রবি ঘোষ। ১৯৬০ সালে, প্রথম অভিযান ছবি দিয়ে কাজের শুরু তাঁর মানিকদার সঙ্গে। ইন্ডাস্ট্রির বাইরে তিনি সত্যজিৎ রায় হলেও, অন্দরে সকলের সাত রাজার ধন 'মানিক'-ই ছিলেন তিনি।
সত্যজিৎ রায় তখন ওয়েস্টার্ন ছবি নিয়েই বেশি নাড়াচাড়া করতেন। ভারতীয় ছবি নিয়ে খুব একটা মাথা ঘামাতেন না। রবি ঘোষ বলেছিলেন, উনি স্টেজ অভিনয় এবং ফিল্ম অভিনয়ের মধ্যে পার্থক্যটা বুঝতে পারতেন। উনি আমায় বুঝিয়েছিলেন কীভাবে সিনেমায় অভিনয়টা ফুটিয়ে তুলতে হয়। স্টেজে অনেকসময় আমরা বড় পরিসরে করতাম একটা কিছু, সেটা সিনেমায় চলে না। উনি বলতেন একটু অল্প। আমি উনার সঙ্গে কাজ করতে করতে বুঝতে পেরেছিলাম যে ইম্প্রোভাইজেশনে উনি বিশ্বাস করেন। এটা আমার কাছে ফ্যাশিনেটিং ছিল।
সত্যজিতের পরিচালনা প্রসঙ্গে রবি ঘোষ...
অভিনেতা ছিলেন মিস্টার রায়। শুধু একজন পরিচালক নয়। এমনটাই বলেছিলেন রবি ঘোষ। বলেছিলেন, উনি শুধু থিওরিটিক্যাল পরিচালনা করতেন না। অসাধারণ অভিনেতা ছিলেন একজন। উনি যেটাই চাইতেন একজন অভিনেতার কাছ থেকে, সেটা উনি নিজে অভিনয় করে দেখাতেন। এমনকি যেটা দেখাতেন উনি, আমরা অভিনয় করে তাঁর ৫০% হয়তো বোঝাতে পারতাম।
Guess Who: হাতছাড়া হয় বহু সিনেমা, ক্রিকেট তারকার ছেলে এই অভিনেতা, বলিউডে 'আনলাকি' হিসেবেই পরিচিতি পেলেন?
গুপী গাইন-বাঘা বাইন প্রসঙ্গে রবি ঘোষ..
তাঁর জীবনের শেষ দিন অবধি এই সিনেমা জড়িয়ে থাকবে এই কথাই জানিয়েছিলেন পর্দার বাঘা রবি বাবু। সত্যজিতের এই ছবি যে বাংলা সিনেমায় এক অনন্য নজির এমনটাও জানিয়েছিলেন তিনি। -বাংলার অন্যতম হিট ছবি হিসেবে গণ্য করা উচিৎ এই ছবিকে' - বলেন রবি ঘোষ। এমনকি, বাংলার এটাই প্রথম মিউজিক্যাল ফিল্ম। রবির কথায়, "উনি যেদিন আমায় এবং তপেনকে বললেন এই ছবি নিয়ে, আমরা অবাক হয়ে গেলাম। বললেন, রবি এটা একটা ফ্যান্টাসি কিন্তু। তোমরা শুধু ভাবো-অনুভব করো। তোমরা অভিনয় করো না।
Aamir Khan: আমিরের বাড়িতে কেন এলেন IPS-অফিসাররা? বড় কোনও বিতর্কে মি…
ভূতের দৃশ্য..
আমার মনে আছে, আমরা কোনোদিন ভূতের অংশের শুটিং বাস্তবে দেখিনি। কিন্তু, উনি যেভাবে আমাদের বিষয়টা বর্ণনা করেছিলেন সেটা দারুণ। আমরা যেন বুঝতে পারছিলাম ভুতেরা সামনে থেকে আসছে। এবং আপনারা অভিনয় দেখেছেন। আউটডোরে তো অসাধারণ শুটিং। মানিকদা পুরো ফ্লেভারটা ধরতে পারতেন। যেটাকে বাংলায় মধুর রস বলে। আমায় খুব সুযোগ দিতেন নিজের মতো করে কাজ করার। কিন্তু, নিজে চেক করতেন পুরদোস্তুর।