/indian-express-bangla/media/media_files/2025/09/03/rishi-2025-09-03-15-41-47.jpg)
কে এই অভিনেতা?
প্রায় ২৫ বছর ধরে হিন্দি সিনেমার শীর্ষস্থানীয় নায়ক হিসেবে, দর্শকদের মনোরঞ্জন করে চলেছেন ঋষি কাপুর। তাঁর যাত্রার সূচনা হয় ১৯৭৩ সালে 'ববি' ছবির মাধ্যমে- যা রাতারাতি তাঁকে তারকা বানিয়ে দেয়। অনেকের কাছে এটি কাপুর পরিবারের ঐতিহ্যগত সাফল্যের অংশ বলেই মনে হলেও, আসলে এর পেছনে ছিল এক ভিন্ন বাস্তবতা। ববি তৈরি হয়েছিল প্রয়োজনের তাগিদে- রাজ কাপুরের আর্থিক সংকট থেকে আর কে স্টুডিওকে বাঁচাতে।
মেরা নাম জোকার–এর ব্যর্থতা ও আর্থিক ধাক্কা
রাজ কাপুর ছয় বছর ধরে নির্মাণ করেছিলেন তাঁর স্বপ্নের ছবি মেরা নাম জোকার। ছবিটির জন্য তিনি শুধু পারিবারিক সম্পত্তিই নয়, আর কে স্টুডিওকেও বন্ধক রেখেছিলেন। কিন্তু মুক্তির পর এটি বক্স অফিসে বিপর্যয় ডেকে আনে। প্রবীণ অভিনেতা প্রেম চোপড়ার ভাষায়, “রাজ কাপুর শেষ হয়ে গিয়েছিলেন। সবকিছু বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছিলেন।” তবু রাজ কাপুর হাল ছাড়েননি। বড় তারকাদের বদলে তিনি কিশোর প্রেমের গল্প নিয়ে নতুন মুখ লঞ্চ করার ঝুঁকি নিলেন। এভাবেই জন্ম নিল ববি।
মঞ্চ ও টিভি দুনিয়ার কিংবদন্তি আর নেই, চিরঘুমে অভিনেতা
নতুন মুখের সন্ধানে
ঋষি কাপুরের বিপরীতে প্রধান চরিত্রে রাজ কাপুর অডিশন নেন ডিম্পল কাপাডিয়া ও নীতু সিং-এর। কিন্তু নীতু ইতিমধ্যেই একজন পরিচিত শিশুশিল্পী হওয়ায়, পরিচালক নতুনত্বের খোঁজে ডিম্পলকেই বেছে নেন। সেটে নিজের ছেলে ঋষিকে কোনো বিশেষ সুবিধা দেননি রাজ কাপুর। অভিনেত্রী অরুণা ইরানি স্মরণ করেছিলেন, ভুল হলে অন্যদের মতোই ঋষিকেও বকাঝকা শুনতে হতো।
সাফল্য, বিতর্ক ও স্বীকারোক্তি
মাত্র ১ কোটি টাকার বাজেটে তৈরি ববি দেশীয় বাজারে ১১ কোটি টাকা আয় করে। এটি শুধু আর কে স্টুডিওকে বাঁচায়নি, ঋষি কাপুরকেও রাতারাতি জনপ্রিয় নায়ক বানিয়ে দেয়। তবে এই সাফল্য তাঁকে কিছুটা উদ্ধতও করে তোলে। এক সাক্ষাৎকারে ঋষি নিজেই স্বীকার করেছিলেন যে, জনপ্রিয়তার চূড়ায় উঠে তিনি পুরস্কার পর্যন্ত কিনে নিয়েছিলেন- যার জন্য খরচ হয়েছিল ৩০ হাজার টাকা।
পরবর্তীতে সিমি গারেওয়ালের সঙ্গে আলাপচারিতায় ঋষি অকপটে স্বীকার করেন- “ববির পর আমি আকাশে উড়ছিলাম, পা মাটিতে ছিল না। বিশ বছরের এক তরুণ, প্রচুর অর্থ, খ্যাতি, আর ভুল পথে চলে যাওয়া।” তিনি আরও বলেন, একটি চলচ্চিত্রের ব্যর্থতাই তাঁকে বাস্তবে ফিরিয়ে আনে এবং মাটিতে পা রেখে চলার গুরুত্ব শিখিয়েছিল।